মা’স্ক না পরলে হতে পারে লাখ টাকা জরিমানা

ক’রোনাভা’ইরা’সের সং’ক্রম’ণ বাড়ায় সোমবার (৫ এপ্রিল) থেকে আগামী ১১ এপ্রিল পর্যন্ত সারাদেশে কঠোর বিধিনিষেধ ঘোষণা করেছে সরকার। এই বিধিনিষেধকালে বাড়ির বাইরে বের হলেই সবাইকে অবশ্যই মা’স্ক পরতে হবে। একইসঙ্গে মেনে চলতে হবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ১৮ দফা ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ১১ দফা নির্দেশনাসহ সব ধরনের স্বা’স্থ্যবিধি।

কোনো ব্যক্তি এই সরকারি আ’ইন অমান্য করলে তাকে ২০১৮ সালের ‘সং’ক্রা’মক রো’গ আ’ইন’ ও ১৮৮০ সালের ‘দণ্ডবিধি আ’ইন’-এর মুখোমুখি হতে হবে। সং’ক্রা’মক রো’গ আ’ইনে ছয় মাসের কা’রাদ’ণ্ড বা এক লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয়দণ্ডের বিধান রয়েছে। আর ১৮৮০ সালের দণ্ডবিধি আ’ইনে জেল ও জরিমানার বিধান রয়েছে।

এরইমধ্যে সারাদেশে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে সরকারি আদেশ অমান্যকারীদের শাস্তি দেয়া হচ্ছে। মঙ্গলবার (৬ এপ্রিল) রাজধানীর মতিঝিল শাপলা চত্ত্বরে অভিযান পরিচালনা করেন র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। এসময় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ১৮ দফা ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ১১ দফা নির্দেশনা এবং স্বা’স্থ্যবিধি না মানায় ২৫ জনকে ১২ হাজার ১০০ টাকা জরিমানা করা হয়।

এছাড়া বিনা কারণে রাস্তায় চলাফেরা করায় রাজধানী বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে আরও ২৫ জনকে প্রায় ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়া সারাদেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে অনেককেই জরিমানা গুণতে হয়েছে।

২০১৮ সালে সং”ক্রা’মক রো’গ (প্রতিরো’ধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আ’ইনের ২৪ ধারায় বলা হয়েছে- ২৪(১) : যদি কোনো ব্যক্তি সং’ক্রা’মক জীবাণুর বিস্তার ঘটান বা বিস্তার ঘটাতে সহায়তা করেন বা জ্ঞাত থাকা সত্ত্বেও অপর কোনো ব্যক্তি সং’ক্র’মিত ব্যক্তি বা স্থাপনার সংস্পর্শে আসিবার সময় সং’ক্র’মণের ঝুঁকির বিষয়টি তাহার নিকট গোপন করেন তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তির অনুরূপ কার্য হইবে একটি অপরাধ।

(২) যদি কোনো ব্যক্তি উপধারা (১) এর অধীন কোনো অপরাধ সংঘটন করেন, তাহা হইলে তিনি অনূর্ধ্ব ৬ (ছয়) মাস কা’রাদ’ণ্ডে বা অনূর্ধ্ব ১ (এক) লাখ টাকা অর্থদণ্ডে বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

দায়িত্ব পালনে বাধা প্রদান ও নির্দেশ পালনে অসম্মতি জ্ঞাপনের অপরাধ ও দণ্ড আ’ইনের ২৫ ধারায় বলা হয়েছে— ২৫(১) যদি কোনো ব্যক্তি (ক) মহাপরিচালক, সিভিল সার্জন বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে তাহার ওপর অর্পিত কোনো দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে বাধা প্রদান বা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন এবং

(খ) সং’ক্রা’মক ‘রো’গ প্রতিরো’ধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূলের উদ্দেশ্যে মহাপরিচালক, সিভিল সার্জন বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কোনো নির্দেশ পালনে অসম্মতি জ্ঞাপন করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তির অনুরূপ কার্য হইবে একটি অপরাধ।

(২) যদি কোনো ব্যক্তি উপধারা (১) এর অধীন কোনো অপরাধ সংঘটন করেন, তাহা হইলে তিনি অনূর্ধ্ব ৩ (তিন) মাস কা’রাদণ্ডে’ বা অনূর্ধ্ব ৫০ (পঞ্চাশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ডে বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

মিথ্যা বা ভুল তথ্য প্রদানের অপরাধ ও দণ্ড২৬ ধারায় বলা হয়েছে— ২৬(১) যদি কোনো ব্যক্তি সং’ক্রাম’ক রো’গ সম্পর্কে সঠিক তথ্য জ্ঞাত থাকা সত্ত্বেও ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যা বা ভুল তথ্য প্রদান করেন তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তির অনুরূপ কার্য হইবে একটি অপরাধ।

(২) যদি কোনো ব্যক্তি উপ-ধারা (১) এর অধীন কোনো অপরাধ সংঘটন করেন, তাহা হইলে তিনি অনূর্ধ্ব ২ (দুই) মাস কা’রাদ’ণ্ডে বা অনূর্ধ্ব ২৫ (পঁচিশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ডে বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

১৮৬০ সালের দণ্ডবিধি আ’ইনে শাস্তি সরকারি কর্মচারী কর্তৃক আ’ইনসঙ্গতভাবে জারিকৃত কোনো আদেশ অমান্য করার দণ্ড—

১৮৮০ সালের দণ্ডবিধি আ’ইনের ১৮৮ ধারায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি যদি কোনো আদেশ জারি করতে বিধিসঙ্গতভাবে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো সরকারি কর্মচারী কর্তৃক জারিকৃত আদেশে তাকে কোনো বিশেষ কাজ হতে বিরত থাকার অথবা তার দখলাধীন বা পরিচালনাধীন কোনো সম্পত্তি সম্পর্কে কোনো বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণের

নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে জানা সত্ত্বেও অনুরূপ নির্দেশ অমান্য করে, যদি অনুরূপ অবাধ্যতার ফলে আ’ইনসম্মতভাবে নিযুক্ত কোনো ব্যক্তির বিঘ্ন হয়, বিরক্তি উৎপাদিত হয় বা ক্ষতি সাধিত হয় অথবা বিঘ্ন, বিরক্তি বা ক্ষতির অনুষ্ঠিত হওয়ার

আশ’ঙ্কা দেখা দেয় তবে সেই ব্যক্তি এক মাস পর্যন্ত যেকোনো মেয়াদের বিনাশ্রম কা’রাদ’ণ্ডে, অথবা দুইশত টাকা পর্যন্ত যেকোনো পরিমাণ অর্থদণ্ডে অথবা উভয়দণ্ডেই দণ্ডিত হবে।

যদি অনুরূপ অবাধ্যতার ফলে মা’নব’দে’হ, স্বা’স্থ্য বা নিরাপত্তার প্রতি বিপদ অনুষ্ঠিত হয় কিংবা অনুরূপ বিপদ অনুষ্ঠিত হওয়ার আশ’ঙ্কা দেখা দেয় অথবা কোনো দাঙ্গা বা কলহ অনুষ্ঠিত হওয়ার আ’শ’ঙ্কা দেখা দেয়, তবে সে ব্যক্তি ছয় মাস পর্যন্ত যেকোনো মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্র’ম কা’রাদ’ণ্ডে, অথবা এক হাজার টাকা পর্যন্ত যেকোনো পরিমাণ অর্থ দণ্ডে অথবা উভয়বিধ দণ্ডেই দণ্ডিত হবে।

কোনো কার্য দ্বারা জীবনের পক্ষে বিপজ্জনক কোনো ‘রো’গের সং’ক্র’মণ ছড়াইতে পারে জানিয়াও অবহেলাবশত উহা করে তার দণ্ড— ১৮৮০ সালের দণ্ডবিধি আ’ইনের ২৬৯ ধারায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি যদি বেআ’ইনিভাবে বা অবহেলামূলকভাবে এমন কোনো কার্য করে যা জীবন বিপন্নকারী মারা’ত্মক কোনো রো’গের সং’ক্র’মণ ছড়াতে পারে, তা জানা সত্ত্বেও বা বিশ্বাস

করার কারণ থাকা সত্ত্বেও তা করে, তবে সেই ব্যক্তি ছয়মাস পর্যন্ত যেকোনো মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্রম কা’রাদ’ণ্ডে অথবা অর্থদ’ণ্ডে, অথবা উভয়বিধ দণ্ডেই দণ্ডিত হবে।