চট্টগ্রামে অবৈধ ইটভাটা বন্ধে পরিবেশ ও মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে ২০২০ সালের ১৪ ডিসেম্বর হাইকোর্টে একটি রিট করা হয়। সেই রিটের শুনানি নিয়ে সাত দিনের মধ্যে জেলায় অবৈধভাবে পরিচালিত সবগুলো ইটভাটা বন্ধে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশসহ রুল জারি করেন হাইকোর্ট। আগামীকাল (৯ ফেব্রুয়ারি) থেকে উচ্চ আদালতের এই নির্দেশনা কার্যকরে মাঠে নামছে প্রশাসন।
এর আগে, উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুসারে চট্টগ্রাম প্রশাসন কার্যক্রম শুরু করলেও লোহাগাড়া ও চন্দনাইশ উপজেলাসহ কিছু জায়গায় অবৈধ ইটভাটা বন্ধ না করে শুধুমাত্র জরিমানা আদায় করা হয়।
আদালতের আদেশ পুরোপুরি বাস্তবায়ন না করায় চট্টগ্রাম প্রশাসনের দুই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জিল্লুর রহমান ও এসএম আলমগীর হোসেনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনেন রিটকারীরা।
গত ৩১ জানুয়ারি বিচারপতি মো. মুজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হাসান মোল্লার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ পরিবেশ অধিদফতরের অনুমোদন ছাড়া চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকার অবৈধ ইটভাটাগুলো বন্ধে আবারও নির্দেশ দেন।
একই সঙ্গে অবৈধ ইটভাটাগুলো বন্ধ করে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় পরিবেশ অধিদফতরকে হলফনামা আকারে আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলেন হাইকোর্ট।
অবৈধ ইটভাটা বন্ধের এ পদক্ষেপ ঠেকাতে গত ৪ ফেব্রুয়ারি দেশের সর্বোচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হন চট্টগ্রামের ২৩ ইটভাটার ১৮ মালিক। তবে এ বিষয়ে হাইকোর্টের সেই আদেশ বহাল রাখেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত । চেম্বার জজ আদালতের আদেশের বিষয়টি সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন রিটকারী আইনজীবী মনজিল মোরশেদ।
তিনি জানান, ২৩ ইটভাটার ১৮ জন মালিকের পক্ষে করা আবেদন শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. নুরুজ্জামানের চেম্বার জজ আদালত এ আদেশ দেন। আদালতে ইটভাটা মালিকদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মাহমুদা বেগম। অন্যদিকে পরিবেশ অধিদফতরের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী সৈয়দ কামরুল হোসেন। রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মনজিল মোরশেদ।
এদিকে, হাইকোর্টের এ আদেশ পেয়ে পরিবেশ অধিদফতর ও জেলা প্রশাসন মঙ্গলবার থেকে চট্টগ্রামের সব অবৈধ ইটভাটা বন্ধে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এস এম জাকারিয়া জাগো নিউজকে বলেন, ‘অবৈধ ইটভাটা বন্ধে আমাদের অভিযান আবারও শুরু হচ্ছে। আজ একটি টিম মাঠে গিয়েছে। তবে আগামীকাল থেকে বড় পরিসরে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করা হবে।’