চট্টগ্রামে ই-পাসপোট: আগ্রহ বাড়লেও সরবরাহে ধীরগতি

চট্টগ্রামে ই-পাসপোর্ট (ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট) পেতে আবেদনকারীকে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। এক মাস কিংবা দেড় মাসের আগে অনেক গ্রাহক হাতে পাচ্ছেন না এ পাসপোর্ট। এমআরপি (মেশিন রিডেবল) পাসপোর্টের চেয়ে অন্তত ৩০

গুণ বেশি ই-পাসপোর্টের আবেদন জমা পড়ছে। ১২ জুলাই এক মুক্তিযোদ্ধার হাতে ই-পাসপোর্ট তুলে দিয়ে চট্টগ্রামে আনুষ্ঠানিকভাবে এ কার্যক্রম শুরু হয়। তিন মাসে চট্টগ্রামের দুটি অফিসে ৮ হাজার ৪০৪টি আবেদন জমা পড়েছে। এর মধ্যে ২ হাজার ৯৮৭টি ই-পাসপোর্ট সরবরাহ করা হয়েছে।

এদিকে, বুধবার দুপুরে চট্টগ্রাম আঞ্চলিক অফিসে দেখা গেছে আবেদন জমা দেয়ার জন্য দীর্ঘ লাইন। লোহাগাড়া উপজেলার বাসিন্দা নজরুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, আগে এমআরপি পাসপোর্ট ছিল। সেটির মেয়াদ চলে যাওয়ায় নতুন করে ১০ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদন জমা দিতে এসেছি।

মনসুরাবাদ চট্টগ্রাম বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসে ২০ দিন আগে ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেন কদলপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা আবদুল হান্নান। তিনি বলেন, আবেদন জমা দেয়ার পর পুলিশের তদন্ত রিপোর্ট পাসপোর্ট অফিসে পৌঁছতে অন্তত ১৫ দিন চলে গেছে। পাসপোর্ট পেতে কতদিন লাগবে তা বুঝতে পারছি না।

চট্টগ্রামের দুটি পাসপোর্ট অফিসে তিন মাসে জমা পড়েছে ৮ হাজার ৪০৪টি আবেদন। এর মধ্যে বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিসে ৪ হাজার ৬০০টি আবেদন জমা পড়েছে। এর মধ্যে ২ হাজার ই-পাসপোর্ট গ্রাহকদের মাঝে সরবরাহ করা হয়েছে। অন্যদিকে চট্টগ্রাম আঞ্চলিক অফিসে ই-পাসপোর্টের আবেদন জমা পড়েছে ৩ হাজার ৮০৪টি। এর মধ্যে ৯৮৭টি সরবরাহ করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিসের পরিচালক মো. আবু সাঈদ যুগান্তরকে বলেন, পুলিশ রিপোর্ট আসা মাত্রই প্রিন্টের জন্য ঢাকায় পাঠিয়ে দেয়া হয়। এমআরপি পাসপোর্টের চেয়ে ই-পাসপোর্টের প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়ছে। অক্টোবর মাসে দেখা গেছে- প্রথম সপ্তাহে ৪৫৭টি, দ্বিতীয় সপ্তাহে ৬৩৬টি ও তৃতীয় সপ্তাহে ৭৫৫টি ই-পাসপোর্টের আবেদন জমা

পড়ে। বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসে প্রতিদিন গড়ে ৩৫০টি করে পাসপোর্টের আবেদন জমা হয়। এর মধ্যে অন্তত ২০০টির বেশি জমা পড়ছে ই-পাসপোর্টের আবেদন। সবকিছু ঠিক থাকলে ৩ থেকে ৪ দিনে ই-পাসপোর্ট হাতে পাচ্ছেন এমন নজিরও রয়েছে।

চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের উপ-পরিচালক মাসুম হাসান যুগান্তরকে বলেন, দিন দিন ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদন বাড়ছে। ইতোমধ্যে ই-পাসপোর্টের জন্য ৩ হাজার ৮০৪টি আবেদন জমা পড়েছে। এর মধ্যে ৯৮৭টি সরবরাহ করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, চট্টগ্রামে ৫ ও ১০ বছর মেয়াদের জন্য ই-পাসপোর্ট দেয়া হচ্ছে। অনলাইনে ই-পাসপোর্টের আবেদন জমা দেয়া যাচ্ছে। ৫ বছর মেয়াদি ৪৮ পাতার পাসপোর্ট স্বাভাবিক সময়ে (সাধারণ) ২১ কর্মদিবসে পেতে জমা দিতে হবে ৪ হাজার ২৫ টাকা। একই পাসপোর্ট এক্সপ্রেস ডেলিভারি অর্থাৎ ১০ কর্মদিবসে পেতে লাগবে ৬ হাজার ৩২৫ টাকা। ২

কর্মদিবসে পেতে লাগবে ৮ হাজার ৬২৫ টাকা। ১০ বছর মেয়াদি ৪৮ পাতার পাসপোর্ট ২১ কর্মদিবসে পেতে জমা দিতে হবে ৫ হাজার ৭৫০ টাকা। ১০ কর্মদিবসে পেতে লাগবে ১০ হাজার ৩৫০ টাকা। ২ কর্মদিবসে পেতে লাগবে ১২ হাজার ৭৫ টাকা।

তবে ২ দিনের পাসপোর্ট চট্টগ্রাম থেকে পাওয়া যাচ্ছে না। ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম পাসপোর্ট অফিসে কাগজপত্র জমা দেয়ার পর পাসপোর্ট সরবরাহ করা হচ্ছে। সূত্রঃ যুগান্তর