রাজধানীর শ্যামলীর বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালের (বিএসএইচ) নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান নেতা মোহাম্মদ নাসিমের অবস্থা অবনতির পথে।
আজ বৃহস্পতিবার তাকে দেখতে যান তারই চিকিৎসায় গঠিত ১৩ সদস্যের মেডিকেল বোর্ডের প্রধান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য ও প্রখ্যাত নিউরো সার্জন অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া। নাসিমকে দেখে এসে তিনি গণমাধ্যমে তার মন খারাপ হওয়ার কথা জানান।
ডা. কনক কান্তি বলেন, ‘উনার (মোহাম্মদ নাসিম) অবস্থা আজ আরও খারাপ। মনটা আরও খারাপ হয়ে গেল। আজ দুপুরে উনাকে দেখতে গিয়েছিলাম। উনার ব্লাড প্রেশার ও পালস আগে ওষুধে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হলেও এখন নিয়ন্ত্রণে থাকছে না; কখনো বাড়ছে, কখনো কমছে। ব্লাড প্রেশার ও পালসের সঙ্গে হার্টের কার্যকারিতার নিবিড় সম্পর্ক থাকায় শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছে।’
বিএসএমএমইউর উপাচার্য আরও বলেন, ‘পরিবারের সদস্যরা তাকে সিঙ্গাপুরে নিয়ে চিকিৎসার জন্য মেডিকেল বোর্ডের সুপারিশসহ চিকিৎসা সংক্রান্ত সব কাগজপত্র দেশটিতে পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু হঠাৎ করে অবস্থার অবনতি হওয়ায় পরিবারের সদস্যরা এই মুহূর্তে দেশের বাইরে পাঠানোর বিষয়টি স্থগিত রেখেছেন। এছাড়া সিঙ্গাপুর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও তেমন কিছু জানায়নি। এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে নিতে হলে সেই রকম প্রস্তুতি নিয়ে তবেই যেতে হবে। তবে এমন অবস্থায় তার পরিবারও এ মুহূর্তে পাঠাতে চাইছেন না।’
জানা গেছে, সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী নাসিমের ব্লাড প্রেশার ও পালস নিয়ন্ত্রণে থাকছে না। প্রেশার কখনও খুব বেশি বেড়ে যাচ্ছে, আবার কখনও খুব বেশি নেমে যাচ্ছে। চিকিৎসাশাস্ত্রের ভাষায় এগুলো শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের অস্বাভাবিক আচরণের নমুনা। ব্লাড প্রেশার ও পালসের অস্বাভাবিক আচরণের কারণে হার্টের কার্যকারিতাও ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়ছে।
গত ১ জুন করোনার উপসর্গ নিয়ে মোহাম্মদ নাসিম শ্যামলীর বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানে নমুনা পরীক্ষায় তার করোনা পজিটিভ আসে। পরবর্তীতে তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। ৫ জুন সকালে তিনি ব্রেন স্ট্রোক করেন। পরে তার মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার করা হয়। এরপর থেকে তিনি গভীর অচেতন অবস্থায় আছেন। পরবর্তীতে তার করোনা আরও দুবার পরীক্ষা করা হয়। দুবারই রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। আজ আবার তার শারীরিক অবস্থার অবনতি খবর পাওয়া গেল।