জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আরও এক হত্যাকারীর মৃত্যুদণ্ডাদেশ কার্যকর হলো। সেনাবাহিনী থেকে বরখাস্ত ক্যাপ্টেন আবদুল মজিদ ঝুললেন ফাঁসির দড়িতে। তাতে বাঙালি জাতির পিতৃহত্যার কলঙ্ক কিছুটা হলেও কমলো। শনিবার (১১ এপ্রিল) রাত ১২টা ১ মিনিটে কার্যকর হয়েছে আবদুল মজিদের মৃত্যুদণ্ডাদেশ। সেইসঙ্গে কেরাণীগঞ্জে স্থাপিত কেন্দ্রীয় কারাগারেও প্রথম কোনো মৃত্যুদণ্ডাদেশ কার্যকর হয়েছে।
ফাঁসি কার্যকরের আগের সময়টুকু কেমন কেটেছে আবদুল মজিদের? তাকে যে কনডেম সেলে রাখা হয়েছিল, সেখান থেকে ফাঁসির মঞ্চে নিয়ে যাওয়ার সময়টুকু কেমন ছিল?
কারা সূত্র জানিয়েছে, রাত ১০ টার দিকে মাছ আর সবজি দিয়ে ভাত খেতে দেওয়া হয় আবদুল মাজেদকে। সামান্য একটু খেয়ে পুরোটাই রেখে দেন প্লেটে। এরপর পানি পান করে রাতের খাওয়া শেষ করেন তিনি।
এরপর রাত সাড়ে ১১টার দিকে কারা মসজিদের ইমাম মাজেদকে দুই রাকাত নামাজ পড়তে বলেন এবং তওবা পড়ান। তওবা পড়ার সময় চিৎকার করে কাঁদতে থাকেন তিনি।
শেষ ইচ্ছার বিষয়ে জানতে চাইলে মাজেদ কারা কর্মকর্তাদের বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর মতো একজন ব্যক্তিকে মারার দুঃসাহস কারও ছিল না। কিন্তু সেই কাজটা আমিসহ আমরা করেছিলাম। আবারও প্রমাণিত হলো পাপ বাপকেও ছাড়ে না। এতদিন বিদেশে থাকতে পারলাম, আর এখন কেন দেশে এলাম, বুঝতে পারছি না। মরণ আমাকে টেনে এনেছে দেশে। ফাঁসি আমার কপালে ছিল।’ বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
পরে রাত ১১টা ৫০ মিনিটে কারা সেল থেকে মাজেদকে ফাঁসির মঞ্চে নিয়ে যান সহকারী জল্লাদের দল।
কারা সূত্রে জানা যায়, ফাঁসির মঞ্চে কোনো কথা বলেননি বঙ্গবন্ধুর খুনি মাজেদ। একবারেই নিশ্চুপ ছিলেন।
এর আগে, পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করার সময় মাজেদ বলেছিলেন, ‘আমি আমার কৃতকর্মের ফল হাতে নিয়ে মৃত্যুবরণ করছি। তোমরা যতদিন বেঁচে থাকবে, ততদিন অন্তত ভালো কিছু কোরো। আমি জানি, আমার কারণে তোমাদের বেঁচে থাকাটাও অনেক কষ্টের হবে। অনেকে গালমন্দ করবে। তবুও তোমরা কাউকে কিছু বলবে না।’
ব্রেকিংনিউজ