৩০১ ফুট উচ্চতার ২০১ গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদ দেখতে বিভিন্ন স্থান থেকে দর্শনার্থীদের ভিড় বেড়েই চলেছে।দর্শনার্থীদের চাপ সামলাতে স্থানীয় প্রশাসন হিমশিম খাচ্ছে। ঈদকে কেন্দ্র করে দর্শনার্থীদের ভিড় ক্রমে বেড়েই চলেছে বলে মসজিদের উদ্যাক্তারা জানিয়েছেন। শুক্রবার মসজিদ এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজার হাজার দর্শনার্থী এসেছেন দৃষ্টি নন্দন এই মসজিদ দেখার জন্য।
মসজিদটি টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার ঝাওয়াইল এলাকার প্রত্যন্ত অঞ্চল দক্ষিণ পাথালিয়া গ্রামে নির্মিত হচ্ছে। দক্ষিণ পাথালিয়া গ্রামের মো. মেছের আলীর ছেলে বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রফিকুল ইসলাম মিনার নিজ উদ্যোগে ১৫ একর জমির ওপর ৩০১ ফুট উচ্চতায় ২০১ গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদটি নির্মাণ করছেন। মসজিদে এক সঙ্গে ৩০-৪০ হাজার মুসুল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রফিকুল ইসলাম মিনারের ভাগিনা মো. মহসীন মিয়া জানান, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রফিকুল ইসলাম মিনার জনতা ব্যাংকের সিবি এ সভাপতি। তার সমস্ত আয় রোজগার ও অর্থ সম্পদ জনকল্যাণে ব্যয় করার জন্য একটি কল্যাণ ট্রাস্ট গঠন করেছেন। কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে তিনি বিভিন্ন জনকল্যাণ মুলক ও মসজিদ-মাদ্রাসা, শিক্ষা, রাস্তা-ঘাট উন্নয়ন ও সামাজিক কাজ করে আসছেন।এই কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে নিজ গ্রামে ১৫ একর জমির উপর মনোরম পরিবেশে উপ মহাদেশের মধ্যে এই প্রথম ৩০১ ফুট উচ্চতার ২০১ গম্বুজ বিশিষ্ট দৃষ্টি নন্দন মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ নেন। ২০১৩ সালের ১৩ জানুয়ারি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রফিকুল ইসলাম মিনারের মা রিজিয়া খাতুন ২০১ গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদ নির্মাণ কাজের ভিত্তি স্থাপন করেন। বিভিন্ন কারুকাজে মসজিদ নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলছে। মসজিদের ২০১ টি গম্বুজ ও মিনার, চারপাশ, উপরে ও নিচে চায়না থেকে বিভিন্ন রঙ বে-রঙের দৃষ্টি নন্দন মার্বেল পাথর এনে সদুক্ষ কারীগর দ্বারা নির্মাণ কাজ করা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির নির্দেশে সম্পূর্ণ শুল্ক মুক্ত বিদেশ থেকে এই মার্বেল পাথর আনা হয়েছে। ১৫ কোটি টাকা হাতে নিয়ে মসজিদের কাজ শুরু করেন এবং এ পর্যন্ত মসজিদের নির্মাণ কাজে ব্যায় হয়েছে ১০০ কোটি টাকা। মসজিদের উপরে ২০১ গম্বুজ ও মিনার নির্মাণ হয়েছে। মসজিদের কাজ শেষ করতে হলে আরও ১০০ কোটি টাকার প্রয়োজন বলে জানা গেছে। মসজিদের সম্পূর্ণ কাজ শেষ হতে আরও তিন চার বছর সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন।
মসজিদটি দেখার জন্য রাজধানী ঢাকার মহাখালী ও গাবতলী বাস টার্মিনাল হতে বাসে চড়ে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক হয়ে এলেঙ্গা বাস স্টেশনে নামতে হবে। সেখান থেকে গোপালপুরের বাসে অথবা অটোরিকশায় টাঙ্গাইল-ভুয়াপুর রোড দিয়ে অথবা ঘাটাইলের পোড়াবাড়ি দিয়ে ঝাওয়াইলের দক্ষিণ পাথালিয়া গ্রামের ২০১ গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদে আসা যায়। এছাড়া কমলাপুর, বিমান বন্দর, টঙ্গি ও গাজীপুর থেকে ট্রেনেও আসা যায়।
দৃষ্টি নন্দন ২০১ গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদটি দেখার জন্য বিভিন্ন জেলা থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার দর্শনার্থী ভিড় করছেন। যোগাযোগ ব্যবস্থা অত্যান্ত নাজুক। সরু ও ভাঙ্গাচোরা রাস্তায় চলাচল খুবই কষ্টকর। যানবাহন পার্কিং, খাবার দোকানের ব্যবস্থা না থাকা ও টয়লেট ব্যবস্থা না থাকায় শিশু, বৃদ্ধ ও নারী-পুরুষসহ দর্শনার্থীদের সীমাহীন দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে।
এ ব্যাপারে ২০১ গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদ নির্মাণের উদ্যোক্তা ও মো. রফিকুল ইসলাম মিনারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এলাকায় না থাকায় তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তার ছোট ভাই মো. হুমায়ুন কবীর জানিয়েছেন, আমার ভাই তার সমস্ত অর্থ সম্পদ দিয়ে এলাকাবাসীর সার্বিক সহযোগিতায় ৩০১ ফুট উচ্চতার ২০১ গম্বুজ বিশিষ্ট এই মসজিদটি নির্মাণ করছেন। নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় মসজিদে এখনো জামায়াতে নামাজ পড়া হচ্ছে না। শুধু দুই ঈদে নামাজ আদায় হয়। উপ মহাদেশের মধ্যে এটিই হবে ২০১ গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদ। নির্মাণ কাজ শেষ হলে প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবেন। মসজিদটি দ্রুত নির্মাণের জন্য সবার আর্থিক সহযোগিতা চেয়েছেন।