মালয়েশিয়ার রক ব্যান্ড এক্সপিডিসি-এর প্রখ্যাত সংগীত শিল্পী এবং রকস্টার মোহাম্মদ আলী ইসমাইল। সম্প্রতি তিনি দিল্লিতে এক ইফতার অনুষ্ঠানে গণমাধ্যম বারনামার সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলেছেন। সে সময় তিনি জানান, তিনি রক সংগীত (রাজমাতাজ) গাওয়া ছেড়ে দিয়েছেন। কারণ,তিনি এমন একটি জীবনকে যাপন করতে চান যা তাকে মানুষ হিসেবে বেঁচে থাকার অর্থ বুঝতে সাহায্য করেছে। এই বিখ্যাত কণ্ঠশিল্পী এখন আর রক সংগীত পরিবেশন করেন না । এর পরিবর্তে তিনি আলাদা ধরনের গান গাচ্ছেন যেগুলো ইসলামিক শিক্ষা-ভাবধারার প্রতিফলন ঘটায়।
নয়াদিল্লির ওই ইফতার পার্টিতে আলী বারনামাকে তার বদলে যাওয়া জীবনের গল্প তুলে ধরেন। তিনি জানান, তিনি এখন ডাকওয়া (ইসলাম প্রচারের কাজ) নিয়োজিত করেছেন নিজেকে। তিনি সে সময় ইফতারে ১০০ জনেরও বেশি লোকের সাথে খাবার ভাগাভাগি করে গ্রহণ করেছেন। এ ইফতার অনুষ্ঠানে অংশ নেয়াদের বেশিরভাগই ছিলেন মালয়েশিয়ার নাগরিক। তিনি তাদের সঙ্গে রমজান প্রসঙ্গে কথা বলেন এবং ছবি তোলার জন্য পোজ দেন।
তাঁর এই পরিবর্তনের নেপথ্যের কারণ কী ছিল-এমন প্রশ্নের জবাবে ৫০ বছর বয়সী এই সংগীতশিল্পী জানান, ইসলামের বার্তা প্রচারের মাধ্যমে তিনি তার জীবনের শান্তি ও মূল্যবোধ অর্জন করতে পেরেছেন। তিনি বলেন, আমার জীবন খুব সহজ। এই জীবনের একটি ‘ফোকাস’ আছে। আমি নিজে খুবই শান্তিতে আছি। ইসলামের পথে অন্যদেরকে আহ্বান করার মাধ্যমে আমার এই অনুভূতি হচ্ছে যে, আমি আমার দায়িত্ব পালন করছি।
জনপ্রিয় সঙ্গীত তারকা হিসেবে কোনো আনন্দকে তিনি কী ‘মিস’ করছেন-এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি কিছু মনে করি না। একজন মুসলিম হিসেবে সমাজে শান্তি, ভ্রাতৃত্ববোধ ছড়িয়ে দেয়াই আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত। আমি ডাকওয়াহের মাধ্যমে এটি করছি। আল্লাহকে মান্য করা এবং নিষিদ্ধ বিষয়গুলো এড়িয়ে যাওয়ার মধ্যেই জীবনের প্রকৃত সাফল্য আসে।
তিনি বলেন, আমাদের কী প্রভাবশালী অবস্থা রয়েছে কিংবা কোন বড় পদে আমরা আসীন রয়েছি-সেটা কোনো বিষয় না। আমরা যদি আমাদের জীবন ইসলামিক শিক্ষায় অতিবাহিত না করি তবে তা মূল্যহীন।
আলী বলেন, আমার দৃঢ় বিশ্বাস পৃথিবী অস্থায়ী। আখেরাত চিরকালের জন্য।
আলী এই নিজেকে ভক্তিমূলক গানে সমর্পিত করেছেন।
এ বিষয়ে তাঁর পুরোনো ভক্তরা তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, আমি গানের মাধ্যমে ইসলাম প্রচারের বার্তা ভক্তদের কাছে পৌঁছে দিতে চাই।
মালয়েশিয়ার রক ব্যান্ড এক্সপিডিসি থেকে আরও চারজন সদস্য তাঁর সঙ্গে ইসলাম প্রচারের কাজে নেমেছেন। এক্সপিডিসি ব্যান্ড দলটি ১৯৯০-এর দশকে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল। এর আগে আলী টেরা রোসা নামক আরেকটি রক ব্যান্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
আলী জানান, তিনি সে সময় কি করছেন সে বিষয়ে লোকজনের কাছে ‘লেকচার’ দেওয়ার কিছু নেই। বরং নিজের জানা বিষয়গুলো অন্যদের সঙ্গে শেয়ার করা এবং অন্যদের অর্জিত জ্ঞান থেকে শেখাই আসল বিষয়। তিনি জানান, এই ‘স্পিরিট’ই তাকে ভারতে নিয়ে এসেছে। বিভিন্ন মানুষের সাথে সাক্ষাত করে ইসলাম সম্পর্কে আরো জানতে আগ্রহী হয়েছেন তিনি।
আলী বলেন, আমরা যে কাজই করি না কেন, আমাদের নিজেদেরকে মনে করিয়ে দিতে হবে যে, পার্থিব জীবন অস্থায়ী। আমাদের ইসলামের বার্তা অনুসরণ করতে হবে। আর এটা করতে হবে অন্যদেরকে ভালো কাজের দিকে আহবান করে এবং নবী মুহাম্মদের (সা.) সুন্নাহর শিক্ষার মাধ্যমে।
সূত্র: বারনামা ডট কম