রাসুলুল্লাহ (সা.) রমজান মাস আসার দুইমাস আগে থেকে রমজানের প্রস্তুতি শুরু করতেন। রজব মাস থেকেই রমজান মাস পাওয়ার জন্য দোয়া করতে থাকতেন। রমজান মাস ঘনিয়ে আসলে রাসুলুল্লাহ (সা.) সাহাবাদের সুসংবাদ দিতেন, ‘রমজানের প্রথম রাতে দুষ্ট শয়তানকে শৃঙ্খলিত করে দেওয়া হয়। জান্নাতের দরজাসমূহ খুলে দেওয়া হয়। জাহান্নামের সব দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়। কল্যাণের প্রতি আহবান করা হয় এবং অকল্যাণকে বিতাড়িত করা হয়। রমজানের প্রতি রাতেই অসংখ্য মানুষকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেওয়া হয়।’ (তিরমিজি, হাদিস নং: ৬৮২)
অন্য আরেক হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, তোমাদের কাছে রমজানের বরকতময় মাস উপস্থিত হয়েছে। আল্লাহতায়ালা তোমাদের জন্য পূর্ণ মাস রোজা রাখা ফরজ করেছেন। এ মাসে আল্লাহ এমন একটি রাত দান করেছেন, যা হাজার মাস থেকে উত্তম। যে এর কল্যাণ হতে বঞ্চিত হলো- সে বঞ্চিত। এ মাসের প্রত্যেক নফল ইবাদতে অন্য মাসের ফরজের সমপর্যায়ের সাওয়াব, আর প্রত্যেক ফরজ ইবাদতে অন্য মাসের সত্তর গুণ সাওয়াব।
এটি ধৈর্যের মাস, আর ধৈর্যের ফল হলো জান্নাত। এ মাস পরষ্পর সম্পীতির মাস। এ মাসে মুমিনের রিজিক বৃদ্ধি করা হয়। রোজাদার ব্যক্তিকে একটি খেজুর বা এক গ্লাস পানি দিয়ে হলেও ইফতার করালে ওই রোজাদারের সমপরিমাণ সওয়াব দেওয়া হবে। (শুআবুল ঈমান, হাদিস নং: ৩৩৩৬)।
রাসুলুল্লাহ (সা.) আরও ইরশাদ করেছেন, ‘জান্নাতের একটি দরজা রয়েছে, যার নাম ‘রাইয়ান’। কেয়ামতের দিন রোজাদাররাই শুধু ওই দরজা দিয়ে প্রবেশ করবে। অন্য কেউ সে দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না।
সেদিন ঘোষণা করা হবে, রোযাদাররা কোথায়? তখন তারা দাঁড়িয়ে যাবে এবং ওই দরজা দিয়ে প্রবেশ করবে। যখন তাদের প্রবেশ শেষ হবে, তখন দরজা বন্ধ করে দেওয়া হবে। ফলে তারা ব্যতীত অন্য কেউ প্রবেশ করতে পারবে না।’ (বোখারি, হাদিস নং: ১৭৯৭)
একবার আবু হুরায়রা (রা.) আরজ করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল! আমাকে অতি উত্তম কোনো নেক আমলের নির্দেশ দিন। হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, ‘তুমি রোজা রাখো। কারণ এর সমমর্যাদার আর কোনো আমল নেই।’ (সুনানে নাসাঈ, হাদিস নং: ২৫৩৪)