জমজম কূপের পানি যতই ব্যবহার করা হোক তা কখনও শেষ হয় না, হবেও না ইনশাআল্লাহ। বর্তমানে প্রতিদিন মেশিনের মাধ্যমে লাখ লাখ লিটার পানি তোলা হচ্ছে; কিন্তু কোনো ঘাটতি পড়ছে না। অথচ প্রতিদিন এ পরিমাণ পানি পৃথিবীর অন্য কোনো কূপ থেকে তুললে নিশ্চয়ই সে কূপের পানি শেষ হয়ে যেত। জমজমের পানি তৃষ্ণা মেটায় ও ক্ষুধা দূর করে।
কোনো ওষুধ ব্যবহার করা ছাড়াই জমজমের পানি অনেকদিন বিশুদ্ধ অবস্থায় রাখা যায়। অথচ সাধারণ পানি অনেকদিন রাখলে খাওয়ার অযোগ্য হয়ে পড়ে। (কিতাবুল মাসাইল ৩/২৫৩)
জমজম কূপের কিছু জানা অজানা তথ্য:
১) আল্লাহ তা’লার অসীম কুদরতে ৪০০০ বছর পূর্বে সৃষ্টি হয়েছিল।
২) ভারী মোটরের সাহায্যে প্রতি সেকেন্ডে ৮০০০ লিটার পানি উত্তোলন করার পরও পানি ঠিক সৃষ্টির সূচনাকালের ন্যায়।
৩) পানির স্বাদ পরিবর্তন হয়নি, জন্মায়নি কোন ছত্রাক বা শৈবাল।
৪) সারাদিন পানি উত্তোলন শেষে, মাত্র ১১ মিনিটেই আবার পূর্ণ হয়ে যায় কূপটি।
৫) এই কূপের পানি কখনও শুকায়নি, সৃষ্টির পর থেকে একই রকম আছে এর পানি প্রবাহ, এমনকি হজ্ব মউসুমে ব্যবহার ক’য়েক গুন বেড়ে যাওয়া স্বত্বেও এই পানির স্তর কখনও নিচে নামে না।
৬) সৃষ্টির পর থেকে এর গুনাগুণ, স্বাদ ও এর মধ্যে বিভিন্ন উপাদান একই পরিমাণে আছে।
৮) এই কূপের পানির মধ্যে ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম সল্ট এর পরিমাণ অন্যান্য পানির থেকে বেশী, এজন্য এই পানি শুধু পিপাসা মেটায় তা না, এই পানি ক্ষুধাও নিবারণ করে।
৯) এই পানিতে ফ্লুরাইডের পরিমাণ বেশী থাকার কারনে এতে কোন জীবাণু জন্মায় না ।
১০) এই পানি পান করলে সকল ক্লান্তি দূর হয়ে যায়।
►রসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘জমজমের পানি যে যেই নিয়তে পান করবে, তার সেই নিয়ত পূরণ হবে। যদি তুমি এই পানি রোগমুক্তির জন্য পান কর, তাহলে আল্লাহ তোমাকে আরোগ্য দান করবেন। যদি তুমি পিপাসা মেটানোর জন্য পান কর, তাহলে আল্লাহ তোমার পিপাসা দূর করবেন। যদি তুমি ক্ষুধা দূর করার উদ্দেশ্যে তা পান কর, তাহলে আল্লাহ তোমার ক্ষুধা দূর করে তৃপ্তি দান করবেন। এটি জিবরাইল (আ.)-এর পায়ের গোড়ালির আঘাতে হজরত ইসমাইল (আ.)-এর পানীয় হিসেবে সৃষ্টি হয়েছে।’ (ইবনে মাজাহ ও আল-আজরাকি)
►জম জমের পানি দাড়িয়ে এবং তিন শ্বাসে পান করা সুন্নাহ। পান করার সময় নিম্নের দোয়াটি পাঠ করা-
اللَّهُمَّ إِنِّى أَسْأَلُكَ عِلْمًا نَافِعًا, وَرِزْقًا وَاسِعًا, وَشِفَاءً مِنْ كُلِّ دَاءٍ.
(حديث ضعيف/ رواه الدارقطنى وعبد الرزاق والحاكم عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا مَوْقُوْفًا)
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নি আস’আলুকা ইলমান নাফি’আ, ওয়ারিজকান ওয়াসিয়া, ওয়াশিফা’আন মিন কুল্লি দা।
অর্থ: হে আল্লাহ, আমি আপনার নিকট কল্যাণকর জ্ঞান, প্রস্থ রিযিক এবং যাবতীয় রোহ থেকে আরোগ্য কামনা করিতেছি। (দারা কুতনী, আব্দুর রাজ্জাক ও হাকেম, বর্ণনায় ইবেনে আব্বাস)