মহান আল্লাহ তা’য়ালা মুসলমানদের উপর বিয়ের বিষয়ে কড়া নির্দেষনা দিয়েছেন। তাই প্রতিটি মুসলমানের কাছেই বিয়ে অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। অন্যদিকে, রাসুল (সা.) বলেছেন, যে বাক্তি বিয়ে করার সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও বিয়ে করে না সে আমার উম্মতের অন্তর্ভুক্ত নয়। (দারিমী-কিতাবুন নিকাহ)।
মহানবী (সা.) এর এই বাণী থেকেই বোঝা যায় বিয়ে কতটা গুরুত্বপূর্ণ কাজ। তবে বর্তমান যুগে মুসলমানদের বিয়েতে এখনও অন্তত ৭টি ইসলাম বিরোধী প্রথা চালু রয়েছে। যা খুব দ্রুতই প্রতিটি মুসলমানদের নিচে উল্লেখিত এই ৭টি না জায়েজ কাজ ত্যাগ করা উচিত। প্রচলিত কু-প্রথাগুলো হলো-
১। চন্দ্র বর্ষের কোন মাসে বা কোন দিনে অথবা বর/কনের জন্ম তারিখে বা তাদের পূর্ব পুরুষের মৃত্যুর তারিখে বিয়ে-শাদী হওয়া অথবা যেকোনো শুভ সৎ কাজ করার জন্য ইসলামী শারী’য়াতে বা ইসলামী দিন তারিখের কোন বিধি নিষেধ নেয়। বরং উপরিউক্ত কাজগুলো বিশেষ কোন মাসে বা যে কোন দিনে করা যাবে না মনে করাই গুনাহ।
২। বিয়ে উৎসবে অথবা অন্য যেকোনো উৎসবে পটকা-আতশবাজি ফুটান, অতিরিক্ত আলোকসজ্জা করা, রংবাজী করা বা রঙ দেয়ার ছড়াছড়ি ইসলামের দৃষ্টিতে অবৈধ ও অপচয়।
আল্লাহু-তা’য়ালা বলেনঃ
إِنَّ الْمُبَذِّرِينَ كَانُوا إِخْوَانَ الشَّيَاطِينِ ۖ وَكَانَ الشَّيْطَانُ لِرَبِّهِ كَفُورًا
“নিশ্চয় অপচয়কারী শয়তানের ভাই। আর শয়তান হচ্ছে তার প্রভুর প্রতি বড় অকৃতজ্ঞ।” (বানী ইসরাঈল-২৭)
৩। বাঁশের কুলায় চন্দন, মেহদি, হলুদ, কিছু ধান-দুর্বা ঘাস কিছু কলা, সিঁদুর ও মাটির চাটি নেয়া হয়। মাটির চাটিতে তেল নিয়ে আগুন জ্বালানো হয়। স্ত্রী ও বরের কপালে তিনবার হলুদ লাগায় এমনকি মূর্তিপূজার ন্যায় কুলাতে রাখা আগুন জ্বালানো চাটি বর-কনের মুখের সামনে ধরা হয় ও আগুনের ধোঁয়া ও কুলা হেলিয়ে-দুলিয়ে বাতাস দেয়া হয়। এসব হিন্দুয়ানী প্রথা ও অনৈসলামিক কাজ।
৪। বরের আত্মীয়রা কনেকে কোলে তুলে বাসর ঘর পর্যন্ত পৌঁছে দেয়া অথবা বরের কোলে করে মুরুব্বীদের সামনে স্ত্রীর বাসরঘরে গমনের নীতি একটি বেহায়াপনা, নিরলজ্জতা ও অনৈসলামিক কাজ।
৫। বরের ভাবী ও অন্য যুবতী মেয়েরা বরকে সমস্ত শরীরে হলুদ মাখিয়ে গোসল করিয়ে দেয়া নির্লজ্জ কাজ, যা ইসলাম সমর্থন করে না। পাশাপাশি বর ও কনেকে হলুদ বা গোসল করতে নিয়ে যাওয়ার সময় মাথার ওপর বড় চাদর এর চার কোনা চার জনের ধরা হিন্দুয়ানী প্রথা।
৬। বর ও কনের মুরুব্বীদের কদমবুসি করা একটি মারাত্মক কু-প্রথা। বিয়ে তো নয় এমনকি যেকোনো সময় পায়ে হাত দিয়ে সালাম করা রাসুল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও তার সাহাবীদের (রাযি আল্লাহু আনহুম) দ্বারা কোন কালে প্রমাণিত নয়। কদমবুচি করার সময় সালাতের রুকু-সিজদার মত অবস্থা হয়। বেশি সম্মান প্রদর্শন করতে গিয়ে হিন্দুয়ানী প্রনামকে প্রথা হিসেবে নিয়ে আসা মুমিনদের বৈশিষ্ট্য নয়।
৭। তাছাড়া বিয়ে করতে যাওয়ার সময় বরকে পিঁড়িতে বসিয়ে বা সিল-পাটাই দাঁড় করিয়ে দই-ভাত খাওয়ান ইসলামিক প্রথা নয়। পাশাপাশি বিযের কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর বরকে দাঁড় করিয়ে সালাম দেয়ানোর প্রথা রাসুল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও তার সাহাবীদের (রাযি আল্লাহু আনহুম) দ্বারা প্রমাণিত নয়।
পরিশেষে বলতে হয়, মুসলমানরা যদি ভয়ঙ্কর এই ৭টি নাজায়েজ কাজ পরিত্যাগ না করে, তাহলে কাল কিয়ামতের ময়দানে তাদের কঠিন শাস্তির মুখোমুখি দাঁড়াতে হবে। তাই দ্রুতই যেন আমরা সবাই সকল নাজায়েজ কাজ ত্যাগ করে দীনের পথে ফিরে আসি।