আমাদের দেশে যেমন জ্বালানি তেলের মূল্য বাড়ছে, সেই সঙ্গে বাড়ছে যানবাহনের সংখ্যাও। নিত্যদিন জ্বালানি ভরতে পেট্রোল পাম্পে লম্বা লাইন দেখা যায়। এতে করে সময়ের অপচয়ও হয়।
অপরদিকে জ্বালানি চালিত বাহনের জ্বালানি খরচও অনেক বেশি, বিশেষ করে আমাদের মতো দরিদ্র্য দেশগুলোতে জ্বালানি খরচ চালানো সত্যিই দুরহু ব্যাপার। সেই দুরহু কাজটি সহজ করতে উদ্যোগ নিয়েছে আকিজ গ্রুপ। তারা এমন এক বাইক বানিয়েছে যেটার জন্য কোনো জ্বালানি লাগবে না।
আবার চাইলে সাইকেলের মতো চালিয়ে শারীরটাও ফিট রাখা যাবে।বাংলাদেশের বাজারে আকিজ মটরস এমন একটি ‘ই-বাইক’ এনেছে। এটিকে বলা যায় ইলেকট্রিক বাইক। এর ব্যাটারির চার্জ শেষ হয়ে গেলে সাইকেলের মতো প্যাডেল ঘুরিয়ে গন্তব্যে পৌঁছানো সম্ভব। ‘ঈগল’ নামের এই ইলেকট্রিক বাইকটি আপনার যাতায়াতকে করবে আরও সহজতর।
আকিজের এই প্যাডেল চালিত দুই চাকার এই ‘ই-বাইক’কে ৩৫০ ওয়াটের লিড এসিড ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়েছে। ব্যাটারি ক্যাপাসিটি ৬০ ভোল্ট ও ১২ অ্যাম্পিয়ার আওয়ারের। পরিপূর্ণভাবে ব্যাটারি চার্জ করতে সময় লাগবে ৮ ঘণ্টা।
প্রতিদিন বাইকটি পূর্ণ চার্জ করতে সর্বোচ্চ ৬ টাকার বিদ্যুৎ প্রয়োজন পড়বে! সারামাসের হিসেবে যা ২০০ টাকারও কম খরচ হবে এটি চালালে।সারারাত চার্জ দিলে ‘ই-বাইক’ ‘ঈগল’ দিনে ৪৫-৫০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে পারবে। স্পিডও একেবারে কম নয়। বাইকটি চলবে ঘণ্টায় ৩৮ কিলোমিটার বেগে।
সংবাদ মাধ্যমকে আকিজ মটরসের সার্ভিস ম্যানেজার আবু শাহাদাত মো. নোমান বলেছেন, ‘ইলেকট্রিক বাইক নিয়ে বাংলাদেশের অনেকের মধ্যেই মনেভুল ধারণা রয়েছে। অনেকেই মনে করেন ‘ই-বাইক’ সড়কে চলাচল নিষেধ।
ট্রাফিক পুলিশ এই বাইক পেলেই আটকায়। আসল কথা হচ্ছে ‘ই-বাইক’ সড়কে চালাতে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। তবে দুই চাকার মোটর কিংবা ইলেকট্রিক বাইক চালাতে অবশ্যই ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকা ভালো। চালক এবং আরোহীর হেলমেট পরিধান করতে হবে। এটা তাদের নিরাপত্তার জন্যই।’
মো. নোমান আরও বলেছেন, আকিজের তৈরি ‘ই-বাইক’ এ চালক ছাড়াও আরেকজন আরোহন করতে পারবেন। যদি কোনো ভারী জিনিসিপত্র নিতে হয়, তার জন্যেও রয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা।
পেছনের সিটটা খুলে সেখানে মালপত্র বহন করতে পারবেন। আরোহীর পা রাখার জন্য পাদানিও রয়েছে। যেটা অন্যসব বাইকের তুলনায় বেশ বড়। এই বাইকের ব্যাটারির চার্জ শেষ হয়ে গেলেও প্যাডেল ব্যবহার করে চালক খুব সহজে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবেন।’
এই ইলেকট্রিক বাইকের ব্যাটারিতে কতোটুকু চার্জ রয়েছে সেটি জানার উপায় রয়েছে। ‘ই-বাইক’ চালানোর সময় আপনার প্রস্তুতি সে ধরণের হবে যেভাবে আপনি জ্বালানি চালিত গাড়ির ক্ষেত্রে রিফুয়েল করার চিন্তা করে থাকনে। ‘ঈগল’ এ তো বাড়তি সুবিধা হিসেবে প্যাডেল রয়েছেই।’
নতুন এই বাইকটির সামনে ও পিছনে ড্রাম ব্রেক ব্যবহার করা হয়েছে। টায়ার সাইজ ২.২৫-১৭। রাতে চলাচলের জন্য বাইকের সামনে হেডলাইট ও পেছনে টেললাইটও রয়েছে। ডানে বা বামে যাওয়ার জন্য সিগন্যাল লাইটও রয়েছে।
বাইকটির সামনে রয়েছে ঝুড়ি। বড় সাইজের এই ঝুড়িতে সহজে অনেক আনুসঙ্গিক জিনিসপত্র বহন করা যাবে।বাইকটি চালানোর সময় পেছনের গাড়ি দেখার জন্য লুকিং গ্লাসও রয়েছে। বাইকটির মূল্য ধরা হয়েছে ৪৯ হাজার ৫০০ টাকা। রাজধানীর বাণিজ্য মেলাসহ আকিজ মটরস এর সকল শো’রুমে ‘ঈগল’ পাওয়া যাচ্ছে।