বাবা-মাসহ শিক্ষকদের আছে অপমানিত হয়ে নবম শ্রেণির ছাত্রী অরিত্রি অধিকারীর আত্মহত্যার ঘটনায় নিজের কোনো দায় নেই বলে দাবি করেছেন অরিত্রির শ্রেণি শিক্ষিকা হাসনা হেনা; অরিত্রির আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে যিনি গ্রেফতার হয়ে বর্তমানে ডিবি কার্যালয়ে আছেন।
নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, হাসনা হেনা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে জানিয়েছে, আমার কাজ হলো কোনো মেয়ে যদি ঝামেলা করে তাহলে তার বাবা-মাকে নিয়ে প্রিন্সিপালের কাছে দাঁড় করানো। এ ক্ষেত্রে মোবাইল পাওয়ার কারণে আমি তাই করেছিলাম। এ ছাড়া আমার কোনো দায় নেই। অরিত্রির বাবা-মায়ের সাথে কোনো কথা হয়নি আমার। অধ্যক্ষ আমাকে যা বলেছেন আমি তাই করেছি।
সোমবার দুপুরে অরিত্রির আত্মহত্যার পর ভিকারুননিসার বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করলে বুধবার রাতে গ্রেফতার হন অরিত্রির শ্রেণি শিক্ষক হাসনা হেনা।
সোমবার দুপুরে রাজধানীর শান্তিনগরের নিজ বাসায় ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস দেয় অরিত্রি। মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল (ঢামেক) কলেজ হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
অরিত্রির আত্মহত্যার কারণ সম্পর্কে তারা বাবা দিলীপ অধিকারী বলেছিলেন, অরিত্রির স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষা চলছিল। গতকাল রোববার সমাজবিজ্ঞান পরীক্ষা চলার সময় তার কাছে একটি মোবাইল ফোন পাওয়া যায়। এজন্য স্কুল কর্তৃপক্ষ আমাদের ডেকে পাঠায়। সোমবার স্কুলে গেলে স্কুল কর্তৃপক্ষ আমাদের জানায়, অরিত্রি মোবাইল ফোনে নকল করছিল, তাই তাকে বহিষ্কারের (টিসি) সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। স্কুল কর্তৃপক্ষ আমার মেয়ের সামনে আমাকে অনেক অপমান করে। এই অপমান এবং পরীক্ষা আর দিতে না পারার মানসিক আঘাত সইতে না পেরে সে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। বাসায় ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস দেয় অরিত্রি।
এ ঘটনার পর মঙ্গলবার রাত ১০টায় রাজধানীর পল্টন থানায় ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস, প্রভাতী শাখার প্রধান জিনাত আক্তার ও শ্রেণি শিক্ষিকা হাসনা হেনার বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচণার মামলা দায়ের করেন অরিত্রির বাবা।
এরপর শিক্ষামন্ত্রণালয় ওই তিন শিক্ষককে বরখাস্তোর নির্দেশ দেয়। রাতে গ্রেফতার হন হাসনা হেনা।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পরিদর্শক এসআই কামরুল জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। আজ তাকে (হাসনা হেনা) আদালতে তোলা হবে তবে রিমান্ড নাও চাওয়া হতে পারে। সিনিয়র অফিসাররা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন।