আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা মাগারিবের নামাজ শেষ করে নফল আমল না করেই মসজিদ থেকে বেরিয়ে আসেন। আবার অনেকেই বিভিন্ন নফল আমলে মগ্ন থাকেন। তবে যারা কোন নফল ইবাদত জানেন না। তারা ছোট্ট এই দোয়াটি জেনে নিয়তিম পাঠ করবেন।
দোয়াটি হলো : (সাত বার): اللَّهُمَّ أَجِرْنِى مِنَ النَّارِ
বাংলা উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা আজিরনি মিনান নার।
অর্থ : “হে আল্লাহ! আমাকে জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি দাও
ফজিলত ও পড়ার নিয়ম: হজরত মুসলিম ইবনে হারেস তামিমি [রা.] বলেন রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে কানে কানে বললেন, যখন মাগরিবের নামাজের সালাম ফেরাবে, তখন কারো সঙ্গে কথা বলার আগে এই দোয়াটি সাত বার পড়বে।
যদি তুমি পড় আর ওই রাতেই তুমি মারা যাও তাহলে তোমার জাহান্নাম থেকে মুক্তির ফায়সালা লিখে দেয়া হবে।
ফজরের নামাজের পরও এ দোয়াটি একই নিয়মে সাতবার পড়বে।
যদি তুমি পড়ে থাক আর ওই দিনেই তুমি মারা যাও তাহলে তোমার জন্য জাহান্নাম থেকে মুক্তির ফায়সালা লিখে দেয়া হবে। [আবু দাউদ-৫০৮১ নাসায়ি সুনানে কুবরা-৯৯৩৯ সহি ইবনে হিব্বান-২০২২]
আরও পড়ুন:
বড় পীর আব্দুল কাদের জিলানী (রঃ) যে ভাবে শয়তানকে বোকা বানিয়েছিলেন!
একবার এক মরুপ্রান্তরে হযরত বড়পীর (রহ.) ভ্রমণ করছিলেন। ইবাদত-বন্দেগী ও ধ্যানসাধনার এক বিশেষ ক্ষণে অদৃশ্য থেকে আওয়াজ এলো!
হে আবদুল কাদের আমি তোমার প্রতি সন্তুষ্ট। সাধনার মাধ্যমে তুমি আজ এমন এক পর্যায়ে উপনীত হয়েছ যে, আমি আল্লাহ তোমার প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে গিয়েছি।
অতএব, এখন থেকে শরীয়তের কোন বিধান তোমার উপর বাধ্যতামূলক নেই। তুমি ইবাদত কর বা না কর, এতে কিছু আসবে যাবে না। যে কোন ধরনের কাজে তুমি এখন থেকে স্বাধীন।
এ ধরনের কথা শুনে হযরত জিলানী (রহ.) খুব দৃঢ়তার সাথে ‘লা-হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’ পড়লেন। অদৃশ্য আওয়াজটি বন্ধ হয়ে গেল। তিনি বলতে লাগলেন হে অভিশপ্ত শয়তান, তোর কুমন্ত্রণা থেকে আমি আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করি।
তোর এ প্রস্তাব শুনেই আমি বুঝতে পেরেছি যে, এ তোর ভয়াবহ কৌশল। আমকে পথচ্যুত করার এক মারাত্মক কূটচাল। কেননা, পবিত্র কোরআনে আছে, আল্লাহ কোন মানব সন্তানের সাথে সরাসরি কথা বলেন না।
তাছাড়া সাধনার কোন পর্যায়েই ইবাদত-বন্দেগীর দায়িত্ব কারো উপর থেকে তুলে নেয়া হয় না। শরীয়ত অমান্য করার নির্দেশ আল্লাহ কখনও কোন ব্যক্তিকে দেন না।
তোর আওয়াজ শোনামাত্রই আমি বুঝতে পেরেছি যে, এমন বাণী আল্লাহর পক্ষ থেকে আসতে পারে না। এ নিশ্চয়ই শয়তানের কৌশল।
এ কথা শুনে শয়তান বলল, এ ধরনের কথা বলে এর আগে আমি এই প্রান্তরেই অন্তত ২৭ জন সাধকের সর্বনাশ করেছি। আজ আপনি নিজ প্রজ্ঞা, জ্ঞান ও উচ্চপর্যায়ের সাধনাবলেই রক্ষা পেয়ে গেলেন, হে যুগশ্রেষ্ঠ ওলী।
তখন এ কথা শুনে হযরত জিলানী (রহ.) আবার পড়লেন ‘লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’। অর্থাৎ আল্লাহর খাস রহমত ছাড়া ধূর্ত প্রতারক শয়তান থেকে বেঁচে থাকার কোন শক্তি ও ক্ষমতা আমার নেই।
শয়তানের প্ররোচনা থেকে রক্ষা পাওয়ারও দোয়া আল্লাহর প্রিয় নবী (সা.) আমাদের শিক্ষা দিয়ে গিয়েছেন। হযরত জিলানী (রহ.) এ দোয়া পড়ে বলতে লাগলেন, ঘটনার শেষ অংশে এসে তুই আমাকে নতুন করে আবার ধোঁকা দেয়ার চেষ্টা করছিস হে বিতাড়িত শয়তান।
তুই বুঝাতে চাইছিস যে, আমার জ্ঞান ও প্রজ্ঞার দ্বারা আমি রক্ষা পেয়েছি। অথচ আমি যে দোয়াটি পড়েছি, এতে বলা আছে ‘আল্লাহর সাহায্য ও করুনা ছাড়া রক্ষার কোন উপায় বান্দার নেই।
এ মন্তব্য শুনে শয়তান বলল, সত্যিই আপনি আল্লাহর প্রকৃত খাস বান্দা। কোনভাবেই আমি আপনাকে খোদাবিমুখ করতে পারলাম না। একথা বলে শয়তান ব্যর্থ হয়ে দূরে সরে গেল।