ওমর শাহ: ধর্মীয় সমাজে ওসিলা শব্দটি খুব পরিচিত। ওসিলা অর্থ হচ্ছে মাধ্যম গ্রহণ। অর্থাৎ কারও মাধ্যমে অপর কারও কাছে কোনো কিছু চাওয়া বা প্রার্থনা করা। পার্থিব কোনো উদ্দেশ্য অর্জনের জন্যও মানুষ কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করে থাকে। প্রার্থনা কবুলের জন্যও নবী সা. এর ওসিলা গ্রহণ করা হয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে এটি শিরকের পর্যায়েও চলে যায়। ইসলামে ওসিলা গ্রহণের অনুমতি থাকলেও কোনো ক্ষেত্রে ওসিলা গ্রহণকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। যা শিরকের অন্তর্ভুক্ত হয়ে থাকে।
ওসিলা ধরা বা মাধ্যম গ্রহণ করার চারটি অর্থ হতে পারে। নিচে কোন প্রকারের ওসিলা গ্রহণ জায়েজ বা নাজায়েজ আলোচনা করা হলো,
এক. যে ওসিলা গ্রহণ করা ব্যতীত ঈমান সম্পূর্ণ হবে না। এটি হচ্ছে, আল্লাহর প্রতি ঈমান, তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান, আল্লাহ্র আনুগত্য করা ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করার মাধ্যমে আল্লাহ্র নৈকট্য তালাশ করা। আল্লাহর বাণী: ‘হে ঈমানদারেরা! তোমরা আল্লাহ্কে ভয় কর এবং তাঁর নৈকট্য লাভের জন্য ওসিলা অনুসন্ধান কর। [সূরা মায়িদা, আয়াত: ৩৫]
এ প্রকারের মধ্যে আল্লাহ্র নাম ও গুণাবলী দিয়ে ওসিলা দেয়াও অন্তর্ভুক্ত হবে। ওসিলা প্রার্থনাকারীর নিজের নেক আমল দিয়ে আল্লাহ্র কাছে ওসিলা দেয়াও অন্তর্ভুক্ত হবে।
দুই. রাসূলের জীবদ্দশায় তার থেকে দোয়া চেয়ে আল্লাহ্র কাছে ওসিলা দেয়া এবং মুমিনদের একে অপরের কাছে দোয়া চাওয়া। এই প্রকারের ওসিলা প্রথম প্রকারের অধিভুক্ত এবং এটা পালনেও উৎসাহ এসেছে।
তিন. কোন মাখলুকের মর্যাদার দোহাই দিয়ে কিংবা মাখলুকের সত্তার দোহাই দিয়ে ওসিলা দেয়া। যেমন এমনটি বলা যে, আমি আপনার নবীর মর্যাদার দোহাই দিয়ে আপনার অভিমুখী হচ্ছি কিংবা এ জাতীয় কোনো কথা। কোনো কোনো আলেম এ প্রকারের ওসিলাকে জায়েয বলেছেন; কিন্তু তাদের অভিমত দুর্বল। সঠিক মত হচ্ছে, এমন ওসিলা দেয়া হারাম। কেননা আল্লাহ্র কাছে দোয়ার মধ্যে তাঁর নাম ও গুণাবলী ছাড়া অন্য কিছু দিয়ে ওসিলা দেয়া যাবে না।
চার. পরবর্তী যামানার অনেকের কাছে ওসিলার প্রচলিত অর্থ হচ্ছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে ডাকা, বিপদ উদ্ধারের জন্য নবীর কাছে প্রার্থনা করা (মৃতব্যক্তি ও ওলিদের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা): এটি বড় শিরক। কেননা যা করার ক্ষমতা আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কারো নাই সেটা করার জন্য ডাকা ও সাহায্য চাওয়া-ইবাদত। এই ইবাদত আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কারো জন্য সম্পন্ন করা বড় শিরক।