বেপরোয়া বাসের চাপায় গত ২৯ জুলাই রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কের শহীদ রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় টানা সপ্তম দিনেরমতো আন্দোলন করছে শিক্ষার্থীরা। নিরাপদ সড়কের দাবিতে বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে শনিবারও রাজধানীর বিভিন্ন রাস্তা অবরোধ করে রেখেছে তারা।
বাংলামোটর মোড়ে অবস্থান নিয়ে চার দিকের সিগন্যাল নিয়ন্ত্রণ করছেন ঢাকা কমার্স কলেজ, ধানমন্ডি আইডিয়াল কলেজ, উইলস লিটল স্কুল অ্যান্ড কলেজসহ আশেপাশের স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। অ্যাম্বুলেন্স ও রোগীদের গাড়ি যাওয়ার জন্য সেখানে তারা ইমার্জেন্সি লেন তৈরি করেছে। আর পথচারীদের তুলে দেয়া হচ্ছে ফুটওভার ব্রিজে।
সকাল থেকে সেখানে উপস্থিত আছেন অনেকের অভিভাবক। অনেকনের অভিভাবক ফুটওভার ব্রিজের ওপরে ওঠে শিক্ষার্থীদের ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা দেখছেন।
এক অভিভাবক শিক্ষার্থীদের জন্য সিংগারা নিয়ে এসেছেন। সবাইকে ডেকে ডেকে সিংগারা দিচ্ছেন। বোতলে পানি ভরে আনছেন, শিক্ষার্থীদের পানি খাওয়াচ্ছেন।
পরিচয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি সবার মা।’ ওই নারী তার নাম না বললেও ইস্কাটনে থাকেন বলে জানিয়েছেন।
এদিকে কাগজপত্র না থাকায় পুলিশের রিকুইজেশন করা ‘সুপ্রভাত স্পেশাল’ পরিবহনের একটি বাসও (ঢাকা মেট্রো-ঠ-১৪-২৮৬৫) ফিরিয়ে দিয়েছে শিক্ষাথীরা। একই কারণে ‘সংবাদপপত্র’ লেখা গাড়ির (ঢাকা মেট্রো চ-১৩-২০৯৯) চাবি নিয়ে নেয়া হয়েছে।
এছাড়া গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের একটি গাড়ি আটকে পুলিশে সোপর্দ হয়। লাইসেন্স ও কাগজের মেয়াদ শেষ হওয়ায় মোট ১৭০০ টাকার মামলা দেন কর্তব্যরত ট্রাফিক সার্জন।
উল্লেখ্য, গত রোববার (২৯ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কের কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সামনে এমইএস বাসস্ট্যান্ডে জাবালে নূর পরিবহনের বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহত হন। একই ঘটনায় আহত হন আরও ১০/১৫ জন শিক্ষার্থী।
জাবালে নূর পরিবহনের বাসের চাকার নিচে পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান ওই দুই শিক্ষার্থী। তারা হলেন শহীদ রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী দিয়া খানম মিম ও বিজ্ঞান বিভাগের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র আব্দুল করিম রাজিব।
ওই ঘটনায় জাবালে নূরের তিন গাড়ির দুই চালক ও দুই সহযোগীকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১। এর আগে নিহত মিমের বাবা ক্যান্টনমেন্ট থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।