ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশ,একি বলল জাবালে নূরের’ মালিক!

ড্রাইবারদের বেপরোয় গাড়ি চালানোতে সড়ক দূর্ঘটনা গুলো ঘটে।অকালে ঝরে যায় হাজারে মানুষের প্রাণ।অনেকে হয়ে যান পঙ্গু জীবনে নেমে আসে অন্ধকার।এমনি এক সড়ক দূর্ঘটনা ঘটলো রাজধানীর খিলক্ষেতে গত রবিবার।প্রান কেড়ে নিল ২ শিক্ষার্থীর।

বিমানবন্দর সড়কের কুর্মিটোলা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বাসের চাপায় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থীর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। গুরুতর আহত হয় আরও ক’জন। দুপুর ১টার দিকে উত্তরাগামী জাবালে নূর পরিবহনের একটি বাস মিরপুর ফ্লাইওভার থেকে নেমে অন্য আরেকটি বাসের সাথে পাল্লা দিলে কুর্মিটোলায় এমন দুর্ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুরে ফ্লাইওভার থেকে নামার পর উত্তরাগামী আরেকটি বাসের সাথে প্রতিযোগিতায় পাল্লা দেয় জাবালে নূর বাসটি। এ সময় রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে ছিল শিক্ষার্থীরা। বেপরোয়া গতির কারণে সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা শিক্ষার্থীদের ওপর তুলে দেন চালক। ঘটনার পরপরই আশপাশের এলাকায় গাড়ি ভাঙচুর করেন ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।

এ নিয়ে সারা দেশে সমালোচনার ঝড় বইছে। সাধারণ মানুষ উগরে দিচ্ছে তাদের ক্ষোভ। সবারই এক প্রশ্ন, আর কত মানুষের প্রাণ গেলে থামবে এই মৃত্যুর মিছিল?

এ ঘটনায় গত সোমবার (৩০ জুলাই) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলের এক রিট আবেদনে বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ বাস মালিককে নিহত দুই শিক্ষার্থীর পরিবারকে এক সপ্তাহের মধ্যে পাঁচ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেন।একইসঙ্গে দুই পরিবারকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে দুই কোটি টাকা করে দেওয়ার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।

শিক্ষার্থীদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়ে কথা হয় ‘জাবালে নূর’ পরিবহনের চেয়ারম্যান জাকির হোসেনের সঙ্গে। তিনি জানান, হাইকোর্টের নির্দেশ মানতে বাধ্য নয় কর্তৃপক্ষ।

পরিবহনটির মালিক জাকির হোসেন জানান, আদালতের অনুযায়ী নয়, মোটরযান আইন অনুযায়ী যে ক্ষতিপূরণ হয়, সেটা দেওয়া হবে। এ জন্য আইনি প্রক্রিয়াতেও যাবেন তিনি।

তিনি আরও জানান, আদালত দুই পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার যে নির্দেশ দিয়েছেন, তা আমরা শুনেছি। তবে আমরা মোটরযান আইনে যেভাবে বলা হয়েছে, সেই অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ দেবো। এ জন্য আইনি প্রক্রিয়ায় যাব আমরা।

এখানে উল্লেখ্য, মোটরযান অধ্যাদেশ আইন ১৯৮৩ অনুযায়ী দুর্ঘটনার ক্ষতিপূরণের পরিমাণ মাত্র ২০ হাজার টাকা।

জাকির হোসেন বলেন, এ ঘটনায় মূল অপরাধী বাসচালকদের তো আমরা ধরিয়ে দিয়েছি। তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাহলে কেন ক্ষতিপূরণ দিতে হবে? এরপরও যেহেতু আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, তার মোকাবেলা আমরা আইনি প্রক্রিয়াতেই করব।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মানবিক দিক থেকে ক্ষতিপূরণ দেওয়াটা যুক্তিসঙ্গত। কিন্তু তাদের পরিবার তো মামলা করে ফেলেছে। এরপর তো আমরা আর তাদের (পরিবার) কাছে যেতে পারি না। আমরা আইনি প্রক্রিয়াতেই যাব।

এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা বাসে আগুন ধরিয়ে দেয়, শতাধিক বাস ভাঙচুর করে। বন্ধ হয়ে যায় যানবাহন চলাচল।গতকাল ছাএ-ছাএীরা রাস্তা অবরোধ করে যান চলারল বন্ধ করে দেয়।শহীদ রমিজ উদ্দিন কলেজের শিক্ষার্থীদের সাথে যোগ দিয়েছে কয়েকটি কলেজের শিক্ষাথীরা আদমজী স্কুল, কুর্মিটোলা শাহীন, বিএফ শাহীন, ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা। ফলে এই এলাকা এখন শুধু শিক্ষার্থীদের দখলে।তারা এয়ারপোর্ট রোড বন্ধ করে দিয়ে বিক্ষোভ করছে গতকাল সারাদিন।