বড়পুকুরিয়া কয়লা চুরি সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, চাঁদের মধ্যে একটু কলঙ্ক হতে পারে। তাই বলে এ বিষয়ে সরকারকে দায়িত্বহীন বলা যাবে না।
রোববার দুপুরে সচিবালয়ে সমসাময়িক ইস্যু নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি একথা বলেন।
কাদের বলেন: সরকার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে। কোন অনিয়ম মোকাবেলায় সরকার পিছপা হয়নি। বর্তমান সরকারের আমলে অন্যায় করে কেউ পার পেয়ে যাচ্ছে না। যেকোন অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এখানেও তার ব্যত্যয় ঘটবে না।
আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংলাপে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সাম্প্রতিক ইতিবাচক মনোভাব উঠে আসে সংবাদিকদের প্রশ্নোত্তরে।
কাদের বলেন: সংলাপের এখন আর সুযোগ নেই, এমনকি কোনো সম্ভাবনাও নেই। তবে সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যোগাযোগ থাকা ভালো। যোগাযোগটা থাকলে অনেক কঠিন বরফও গলতে পারে।
এক্ষেত্রে সংলাপ নয় ফোনালাপকেই শ্রেয় মানছেন আওয়ামী লীগের এ নেতা। তবে বিএনপির কোন আগাম শর্ত মেনে ফোনালাপে অংশ নেবে না বলেও পরিষ্কার জানিয়ে দেন তিনি।
এর আগে বিএনপি মহাসচিব তার এক প্রতিক্রিয়ায় বলছিলেন: সংলাপের জন্য বিএনপি সবসময় প্রস্তুত রয়েছে। এক্ষেত্রে আওয়ামী লীগকেই প্রথম এগিয়ে আসতে হবে বলে শর্ত দেন তিনি।
যোগাযোগ তৈরিতে বারবার নিজ থেকে এগিয়ে গেলেও ফখরুল ইসলাম আলমগীর কাছ থেকে আশানুরুপ সাড়া পাননি বলে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন কাদের।
তিনি বলেন: আমার জানা মতে ফখরুল সাহেব ভালো মানুষ। তার সঙ্গে যে কথা-বার্তা কখনও হয়নি বিষয়টি এমন নয়। আমি সৈয়দপুরে ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে কথা বলেছি। উনি পাশের রুমে ছিলেন, গিয়ে বলেছি ফখরুল ভাই কেমন আছেন?
ওনার মায়ের মৃত্যুর পর আমি তাকে ফোন করেছি। উনি কখনও আমাকে ফোন করেন না। আমি জানি ওনার দলের মধ্যে অনেক সমস্যা আছে। ওনাদের দলীয় অফিসে একজন আরেকজনকে সরকারের দালাল বলেন! ফোন করলে আবার লন্ডনের রোষানলেও পড়তে পারেন বলে যোগ করেন কাদের।
সম্প্রতি কয়েকটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তার বৈঠক প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বলেন: সিপিবির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। একসময় আমরা একসঙ্গে ছাত্র রাজনীতি করেছি। জাতির পিতাকে হত্যার পর একসঙ্গে রাজপথে আন্দোলন করেছি। আজ আমি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছি। রাজনৈতিক ব্যস্ততায় অনেক দিন দেখা-সাক্ষাত ছিলো না। তাই সৌজন্য সাক্ষাতের অংশ হিসেবে সিপিবি কার্যালয়ে গিয়েছিলাম।
‘তারপরও রাজনৈতিক আলোচনা হয়নি তা নয়। তারা জানিয়েছে, আওয়ামী লীগ-বিএনপি কোন জোটেই তারা আসবে না। ৮টি রাজনৈতিক দল নিয়ে তারা বাম গণতান্ত্রিক জোট করেছে। মুক্তিযুদ্ধের স্পিরিট নিয়ে তারা সামনের দিনগুলোতে রাজনীতি করবে।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন: কাদের সিদ্দিকী, আসম আব্দুর রব, কর্ণেল (অব.) অলির সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। আমি বলেছি সভা সমাবেশে কোনো সমস্যা হলে আমাকে জানাবেন।
এগুলো প্রাথমিক পর্যায়ের আলোচনা বলে দাবি করেন কাদের। তাদের জোটে টানার কোন সম্ভবনা আছে কিনা জানতে চাইলে বলেন: আমাদের জোটে আমরা তাদের চাই কিনা? তার চেয়ে বড় কথা তারা আগ্রহী কিনা? এটা জানতে হবে। এটুকু বলবো দেশে যেহেতু জোটের রাজনীতি চলে আসছে, নির্বাচন সামনে পোলারাইজেশন হতেই পারে। সেটা দেখার জন্য অপেক্ষা করার আহ্বান জানান কাদের।
তিন সিটিতে বিএনপি নেতা-কর্মীদের গণগ্রেপ্তারের যে অভিযোগ বিএনপির পক্ষ থেকে করা হয়েছে, তার জবাবে তিনি বলে: শুধুমাত্র যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে তাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। হেরে যাওয়ার ভয়ে বিএনপি আগে থেকেই নানা অভিযোগ করে অজুহাত তৈরি করে রাখছে।