অতিরিক্ত স্মার্টফোনের ব্যবহার টিনএজারদের মস্তিষ্কে খারাপ প্রভাব ফেলে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় অতিরিক্ত সময় কাটানোর কারণে অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের বিষন্নতায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি ২৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
যেসব কিশোর-কিশোরী দিনে তিন ঘণ্টার বেশি স্মার্টফোন ব্যবহার করে তাদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতাও বেশি থাকে। যুক্তরাষ্ট্রে আত্মহত্যার সংখ্যা দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর পেছনে কারণ হিসেবে দায়ী করা হচ্ছে স্মার্টফোনকে।
যুক্তরাষ্ট্রের দুই শিক্ষাবিদ জোক্লেমেন্ট ও ম্যাট মাইলসের লেখা ‘স্ক্রিন স্কুল’ নামে একটি বইয়ে প্রযুক্তির অতি ব্যবহারের ফলে শিশুরা কীভাবে ‘হাবা-গোবা’ হিসেবে বেড়ে উঠছে তা তুলে ধরা হয়েছে।
এছাড়াও, টেক বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী দুই ব্যক্তি স্টিভ জবস ও বিল গেটস কিভাবে তাদের সন্তানদের নিজেদের উদ্ভাবিত পণ্য থেকে দূরে রেখেছেন তাও উঠে এসেছে এ বইতে।
তাই দুই লেখক প্রশ্ন তুলেছেন, নিজেদের পণ্য সম্পর্কে তারা কী এমন জানেন যা সাধারণ গ্রাহকরা জানেন না? ডিজিটাল প্রযুক্তিতে সবাইকে আসক্ত করার শক্তি উদ্ভাবন করেছেন বলেই তারা এর অতি ব্যবহারে সতর্ক।
বাচ্চাদের প্রযুক্তি ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণ
২০০৭ সালে একটি ভিডিও গেইমের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়েছিলো বিল গেটসের মেয়ে জেনিফার ক্যাথরিন গেটস। এ ঘটনায় সচেতন হয়ে বিল গেটস স্ক্রিন টাইম নির্ধারণ করে দেন। এখনকার যুগে স্মার্টফোন হাতে পাওয়ার গড় বয়স ১০ বছর। কিন্তু মাইক্রোসফট প্রতিষ্ঠাতা সন্তানদের বয়স ১৪ হওয়ার আগে তাদের হাতে স্মার্টফোন তুলে দেননি।
অ্যাপলের প্রয়াত সিইও স্টিভ জবস ২০১১ সালে এক ইন্টারভিউয়ে বলেছিলেন, আইপ্যাড ব্যবহারে তিনি বাচ্চাদের ওপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন।
আইপডের সহ-নির্মাতা টনি ফ্যাডেল সম্প্রতি এক ইন্টারভিউয়ে জানিয়েছেন, আজ স্টিভ জবস বেঁচে থাকলে বলতেন, এ বিষয়ে আমাদেরকে কিছু করতে হবে।
কারণ স্মার্টফোন, ট্যাবলেট ও কম্পিউটারের আকর্ষণ শক্তি সম্পর্কে সিলিকন ভ্যালির বাসিন্দারা বেশ ভালোভাবেই অবগত।
লেখক ক্লেমেন্ট ও মাইলের মতে, স্টিভ জবসের সন্তানেরা স্কুলে যতটা সময় প্রযুক্তি পণ্য ব্যবহার করেছে তার চেয়ে অনেক কম সময় তারা তা বাসায় ব্যবহার করতে পেরেছে।
মজার ব্যাপার হলো, সিলিকন ভ্যালির স্কুলগুলোতে প্রযুক্তির ব্যবহার কম। আজও এই স্কুলগুলোতে চক বোর্ড ও পেন্সিল ব্যবহার করা হয়ে থাকে। কোডিংয়ে বদলে শিক্ষার্থীদের একে অপরকে সহযোগিতা ও শ্রদ্ধা করতে শেখানো হয়। সেখানকার ব্রাইটওয়ার্কস নামে একটি স্কুলে ট্রিহাউজেও ক্লাস করানো হয়। বিভিন্ন জিনিস বানাতে দিয়ে তাদেরকে শেখানো হয় সৃজনশীলতা।