এক দম্পতিকে উদ্দেশ করে হাইকোর্ট বলেছেন, বিচ্ছেদের সংসারে শিশুর শারীরিক বিকাশ ঘটলেও মানসিক বিকাশ ঘটে না। মামলা করে সংসার করা যায় না।
মঙ্গলবার দুপুরে বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ বিচ্ছেদে থাকা দম্পতির উদ্দেশে এমন মন্তব্য করেন।
নওগাঁর সদর উপজেলার বাংগাবাড়িয়া গ্রামের বিচ্ছেদে থাকা এক দম্পতির আট বছর বয়সী শিশুর হেফাজতে থাকার মামলার শুনানিতে উচ্চ আদালত বলেন, বিচ্ছেদের সংসারে শিশুর শারীরিক বিকাশ ঘটলেও মানসিক বিকাশ ঘটে না।
আদালতে শিশুর মায়ের পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটির প্যানেল আইনজীবী অমিত দাস গুপ্ত । শিশুর বাবার পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এ এস এম শাহরিয়ার কবির।
পরে আইনজীবী অমিত দাস গুপ্ত বলেন, আদালত উভয়পক্ষকে পারস্পরিক বোঝাপড়া করতে সময় দিয়েছেন। এ মামলার পরবর্তী আদেশের জন্য ৫ আগস্ট দিন রেখেছেন।
অমিত দাস গুপ্ত বলেন, আদেশ অনুসারে শিশুটির বাবা দুবার তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। শিশুটির সঙ্গে সম্পর্ক হয়েছে। এখন বাবা শিশুর ভরণপোষণের জন্য পাঁচ হাজার টাকা করে দিতে প্রস্তুত রয়েছেন। এরপর আদালত বাবা-মায়ের পারস্পরিক বোঝাপড়ার জন্য আরো সময় দিয়ে ৫ আগস্ট আদেশের দিন রেখেছেন।
অমিত দাস গুপ্ত আরো বলেন, বিচ্ছেদের পর শিশুটির মা তার বাবার বিরুদ্ধে দুটি মামলা করেছেন। এ বিষয়ে আদালত বলেছেন, মামলা করে সংসার করা যায় না। এ ছাড়া আদালতে শিশুটির বাবা বলেছেন, তিনি (শিশুটির মা) আমার মায়ের সঙ্গে থাকতে চান না। তখন আদালত বলেন, শাশুড়ি হচ্ছে মায়ের মতো। তাকে নিয়েই তো সংসার করতে হয়।
মামলার বিবরণে বলা হয় , ২০০৮ সালের ২৭ জুন নওগাঁর সদর উপজেলার বাংগাবাড়িয়া গ্রামের মো. সাজ্জাদুর রহমানের সঙ্গে একই উপজেলার কুসুমদি গ্রামের তৌহিদা আক্তারের বিয়ে হয়। পরে সন্তান সাজফা সাজিদার জন্ম হয়। দাম্পত্য কলহের কারণে গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়। সন্তানকে নিজ হেফাজতে নিতে হাইকোর্টে রিট করেন সাজ্জাদুর। গত ৩০ মে হাইকোর্ট শিশুটিকে আদালতে হাজির করতে নওগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দেন। এরপর ২৭ জুন শিশুটিকে আদালতে হাজির করা হয়। একই সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন বাবা-মাও।
ওই দিন শিশু সাজফা সাজিদাকে (৮) আপাতত মায়ের হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। তবে তার বাবা সপ্তাহে কমপক্ষে একদিন সন্তানকে দেখতে পারবেন। তবে এ সময়ের মধ্যে স্বামী-স্ত্রীর দ্বন্দ্ব নিরসন করা যায় কিনা সে বিষয়ে উভয়পক্ষকে প্রচেষ্টা চালাতে বলেছেন আদালত।