শুধু তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ হওয়ার কারণে নায়াব আলিকে তার স্বজনরাই শারীরিক ও যৌন নিপীড়ন করত। যে কারণে বাধ্য হয়ে ১৩ বছর বয়সে ঘর ছাড়েন। হন অ্যাসিড হামলার শিকার। তার পরও দমে যাননি।
বরং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি গ্রহণের পর জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। নিজেদের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে কাজ করতে এ নির্বাচনে তৃতীয় লিঙ্গের চার প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এক সাক্ষাৎকারে বিবিসিকে নায়াব বলেন, ‘আমি বুঝতে পেরেছি, রাজনৈতিক শক্তি এবং পার্লামেন্টের অংশ না হয়ে আমরা আমাদের অধিকার অর্জন করতে পারব না।’
পাকিস্তানের রক্ষণশীল সমাজব্যবস্থায় তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের চরম বৈষম্যের শিকার হতে হয়। তাদের এমনকি শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ পাওয়ার মতো মৌলিক মানবিক অধিকার থেকেও বঞ্চিত হতে হয়। যদিও ভারতীয় উপমহাদেশের দেশগুলোর মধ্যে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের নানা অধিকার প্রদানের দিকে দিয়ে পাকিস্তান ‘প্রথম দিকে আছে’ বলে জানান উজমা ইয়াকুব। যিনি তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের অধিকার সুরক্ষায় কাজ করেন।
তৃতীয় লিঙ্গকে আইনি বৈধতা দেওয়া দেশগুলোর মধ্যেও পাকিস্তান প্রথম দিকে আছে। প্রায় এক দশক আগে দেশটির জাতীয় পরিচয়পত্রে তৃতীয় লিঙ্গকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। গত বছর থেকে পাসপোর্টেও তৃতীয় লিঙ্গ লেখার অনুমোদন দেয় সরকার। অথচ পশ্চিমা অনেক দেশে পাসপোর্ট করার ক্ষেত্রে এখনো এ সুযোগ নেই।
গত মে মাসে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের বিরুদ্ধে বৈষম্য রোধে পাকিস্তানে একটি আইন পাস হয়। তবে এত কিছুর পরও দেশটিতে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের বিরুদ্ধে নৃশংসতা অব্যাহত আছে। শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হওয়ায় জীবনধারণে তারা নানা অসম্মানজনক পেশা বেছে নিতে বাধ্য হচ্ছে।