মিয়ানমার থেকে আসা বাংলাদেশ অভিমুখে রোহিঙ্গাদের এখন ১০ লাখের ওপরে এসে ঠেকেছে।মিয়ানমার সেনাবাহিনীর গণহত্যা, ধর্ষণ ও নিপীড়নের শিকার হয় রোহিঙ্গারা।মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গারা টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের জাদিমুড়া এলাকা ওঠে শালবাগান রোহিঙ্গা শিবির। বর্তমানে সেখানে প্রায় ২০ হাজারের বেশি মানুষের বসতি। শিবিরের বাসিন্দাদের বিশৃঙ্খল জীবনকে শৃঙ্খলায় বাঁধতে খুব প্রয়োজন ছিল একজন নেতার।
যিনি আশ্রিত রোহিঙ্গাদের নেতৃত্ব দেওয়ার পাশাপাশি তাদের সমস্যা ও চাহিদাগুলো তুলে ধরবেন বাংলাদেশ সরকার ও সাহায্য সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিদের কাছে। এ লক্ষ্যেই গত জুনে শালবাগান রোহিঙ্গা শিবিরে প্রতিনিধি নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু করে জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর)।
তারই ধারাবাহিকতায় মাসের শুরুতে নির্বাচনের মাধ্যমে রোহিঙ্গারা ওই শিবির কমিটির প্রধান নির্বাচনের পাশাপাশি তার ডেপুটি ও সহকারী এবং ১২টি ব্লকের প্রতিনিধি নির্বাচন করেন। আশ্চর্যের বিষয় হলো নির্বাচিতদের মধ্যে অর্ধেকের বেশিই ছিলেন নারী। আর তাদেরই একজন মিয়ানমারের রাখাইনের রাইম্ম্যাবিল গ্রামের আবুল হোসেনের মেয়ে রমিদা বেগম। ক্যাম্প কমিটির প্রধান নির্বাচিত হয়ে যিনি চমকে দিয়েছেন সবাইকে।স্থানীয় সূত্র জানায়, ইউএনএইচসিআর রোহিঙ্গাদের মধ্যে গণতান্ত্র চর্চার লক্ষ্যে কমিটি নির্বাচনের এই আয়োজন করেছিল।
অ্যাডভেন্টিস্ট ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড রিলিফ এজেন্সি (এডিআরএ) এবং বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ এতে সহায়তা করে। নির্বাচনে আরও পাঁচজন নারী কমিটির মেম্বার নির্বাচিত হয়েছেন। তারা হলেন জুহুরা বেগম, রেহেনা বেগম, ইশারা, লালজান ও লাইলা বেগম।২৫ বছর বয়সী রমিদা বলেন, ‘যুগ যুগ ধরে রোহিঙ্গারা অবহেলিত ছিল মিয়ানমারে।
সবচেয়ে বেশি অবহেলিত ছিল নারীরা। সেদেশে রোহিঙ্গারা যেমন নানা কুসংস্কারে নিমজ্জিত, ঠিক তেমনি বঞ্চিত ছিল শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাসস্থানসহ নিজেদের মৌলিক অধিকার থেকেও। তবে এপারে আশ্রয় নেওয়ার পর থেকে বাংলাদেশ থেকে আমরা অনেক কিছু পেয়েছি। যা নিজ দেশে কোনোদিন স্বপ্নেও চিন্তা করিনি। এই শিবিরে আমি কাউকে কোনো অধিকার থেকে বঞ্চিত করব না। তা ছাড়া আমরা যে দেশে আশ্রয় পেয়েছি, সেদেশের সরকারপ্রধান নারী।’