বান্দরবানে যে কারণে পানিতে ভাসিয়ে দেয়া হচ্ছে হাজার হাজার লাউ!

বাংলাদেশের পরতে পরতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে অপরূপ সৌন্দর্য। আর এই সৌন্দর্যের আঁধার হলো বাংলার নদী। এই সৌন্দর্যে বিমোহিত হয়ে কতো কবি রচনা করেছেন কতো শত গল্প, কবিতা আর গান।

হাজার বছর আগে নদীকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে এই জনপদ। তাইতো বাংলাদেশকে বলা হয় নদীমাতৃক দেশ। এদেশের মানুষের সঙ্গে নদীর যেন নিবিড় সম্পর্ক। ফেসবুক ঘাঁটতে ঘাঁটতে চোখে আটকে গেল একটি ছবিতে। দেখতে অনেকটা খালের মতো অথবা নদীর কোন শাখা হবে হয়তো। যেখানে ভাসতে দেখা যাচ্ছে শত শত লাউ।

আর সেই লাউগুলো সংগ্রহ করছে কিশোর-কিশোরীরা। কৌতুহল নিয়ে তাকিয়ে থাকলাম। আর ভাবলাম কি অপূর্ব সুন্দর এই বাংলাদেশ। আরো অবাক হলাম, যখন জানলাম এই পানিপথে ইচ্ছে করেই ভাসিয়ে দেয়া হয়েছে লাউগুলো।

ছবিটি নিয়ে বেশ ঘাঁটাঘাঁটি করলাম সার্চ ইঞ্জিন গুগলও ব্যর্থ হলো। অনেক কষ্টে সেই ছবির গল্প পেলাম। এটি বাংলাদেশের বান্দরবানের ছবি। সেখানকার চাপাছড়ি নামক জায়গা থেকে মাত্র দুই কিলোমিটার দূরে লাউচাষীরা তাদের পরিবহন খরচ বাঁচাতে ব্যবহার করেছেন খালটি। তবে যেহেতু স্রোত আছে তাহলে শাখা নদী হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।

বাগান থেকে লাউ সংগ্রহ করে সেগুলো ভাসিয়ে দেয়া হয় খালের পানিতে। এরপর দুই কিলোমিটার দূরে স্রোতের দিকে বাজারের কাছাকাছি জায়গায় সেই লাউগুলো সংগ্রহ করা হয়। কী চমৎকার সেই দৃশ্য!

অনুভ্রমণ নামের সেই ওয়েবসাইটে ছবিগুলো আপলোড দিয়ে লেখা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ যে গল্পের নেই শেষ। বান্দরবানের চাপাছড়িতে ২ কিমি দূরের খামার থেকে পাশের খালে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে হাজার হাজার লাউ। সেগুলো বাজারের কাছেই নদীতে পড়ার ঠিক আগেই সংগ্রহ করছে খামারের লোকেরা! নদী ভর্তি লাউ দেখা দূরে থাক, শুনিও নাই এর আগে!’

সত্যিই এমন ছবি আমাদের মন ভালো করে দেয়। মনের অজান্তেই বলে উঠি, কবি জীবনানন্দ দাসের কবিতা, “বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি, তাই আমি পৃথিবীর রূপ / খুঁজিতে যাই না আর।”