চলতি বছর বাংলাদেশি হজযাত্রীদের নিয়ে বাংলাদেশ বিমানের প্রথম হজ ফ্লাইট ২৪ জুলাই ঢাকা থেকে জেদ্দার উদ্দেশে ছেড়ে যাবে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
চলতি বছর যারা পবিত্র হজ পালনেরে ইচ্ছা করেছেন তাদের আন্তরিক মোবারকবাদ। আল্লাহর ঘরের পথিকদের হাদিসে আল্লাহর মেহমান বলা হয়েছে। বিদেশ বিভূঁইয়ে মাসাধিককালের এ পবিত্র সফরের কিছু পূর্বপ্রস্তুতি আল্লাহর মেহমানদের অবশ্যই থাকতে হবে।
আত্মিক ও আধ্যাত্মিক প্রস্তুতি
হজের নিয়তকে বিশুদ্ধ করুন। মহান আল্লাহর সন্তোষ ও মাগফিরাত অর্জনকেই হজের একমাত্র লক্ষ্য নির্ধারণ করুন। এ বিষয়ে গর্ব ও আত্মপ্রচারের সব পথ বন্ধ করে দিন।
বিশুদ্ধ কোরআন তেলাওয়াত শুদ্ধ নামাজের পূর্বশর্ত। কোরআন তেলাওয়াতে কোনো ঘাটতি থাকলে হজের পূর্বে অভিজ্ঞ কোনো আলেম কিংবা হাফেজের সহায়তায় তা দূর করুন। নামাজ ও হজের মাসয়ালাগুলো অধ্যয়ন করুন।
জীবনের ফেলে আসা দিনগুলোর কথা স্মরণ করুন। ভালো কাজগুলোর জন্য আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করুন, সংঘটিত খারাপ কাজগুলোর জন্য অনুতপ্ত হোন এবং তওবা করুন। সুস্থতা ও সঠিকভাবে হজ পালনের তওফিক চেয়ে নিভৃতে চোখের পানি ফেলে আল্লাহর কাছে রোনাজারি করতে থাকুন। বস্তুগত স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিবাদ-বিশ্বাদ কিছুটা ছাড় দিয়ে হলেও যতটা সম্ভব দূর করার চেষ্টা করুন। এতে আপনার অন্তরের স্বস্তি এবং সচ্ছতা দু’টোই বৃদ্ধি পাবে এবং ইবাদতে পাবেন অধিক তৃপ্তি।
শারীরিক প্রস্তুতি
ব্লাড প্রেসার, ডায়াবেটিক, হৃদরোগ, শ্বাসকষ্ট কিংবা অন্যকোনো অসুস্থতা থাকলে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের নিয়মিত চেকআপে থাকুন এবং হজের সময়ের জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশিকা ও ঔষধ সংগ্রহ করুন। ২/৩ দিনের ঔষধ হাত ব্যাগে রাখুন, বাকী ঔষধ বড় ব্যাগে সযত্নে রাখুন। ওজন বেশি হলে, ‘ডায়েটিং’ (পরিমিত খাদ্যাভ্যাস) ও হালকা ব্যয়ামের মাধ্যমে ওজন নিয়ন্ত্রণ করুণ। এটা আপনাকে তাওয়াফ ও হজের মূল কার্যক্রমে (৮ জিলহজ থেকে ১২ জিলহজ) বেশ উপকার দেবে।
আপনি সুস্থ-সবল হলেও কিছু ওরস্যালাইন, প্যরাসিটামল, ১টা স্যভলন ক্রিম, অল্প তুলা, ছোট্ট এক বান্ডিল গজ ও ১ কোর্স এন্টিবায়টিক (ডাক্তারের পরামর্শ সাপেক্ষে) সঙ্গে রাখতে পারেন।
মনে রাখবেন, চিকিৎসা ও সতর্কতা তাওয়াক্কুলের পরিপন্থী নয়, বরং এটা সুন্নত।
একটি সুসংবাদ না দিলে সত্য গোপন করা হবে, আর তা হলো- পবিত্র কাবার শান ও মর্যাদার বদৌলতে পবিত্র জমজমের পানির বরকতে সর্বোপরি মহান আল্লাহর বিশেষ মেহেরবানিতে হজের সফরে হাজিদের রোগ প্রশমিত হয়, কর্মস্পৃহা বৃদ্ধি পায় এবং অধিক পরিশ্রমেও কষ্ট কম অনুভূত হয়। এটা অভিজ্ঞতাপ্রসূত সত্য। লাখো পূণ্যাত্মা এর জ্বলন্ত সাক্ষী।
নারীরা প্রতি মাসে যে প্রাকৃতিক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়, হজের সময় সে সমস্যার মোকাবেলার জন্য (সময় নিয়ন্ত্রণের জন্য) ঔষধ সেবনকে বরেণ্য আধুনিক ইসলামি স্কলাররা বৈধ বলেছেন। এ জন্য স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শে ঔষধ সেবন করতে হবে। এ ব্যাপারে ডাক্তারের পরামর্শ নিন। আর যদি হিসেবে নির্ধারিত সময়টি তামাত্তু হজের প্রাথমিক ওমরা ও মূল হজের (৮ জিলহজ থেকে ১২ জিলহজ) বাইরে থাকে তবে ঔষধ সেবন না করলেও কোনো ক্ষতি নেই। এতে আপনি অপারগ হয়ে যে নফল ইবাদত করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবেন, আল্লাহতায়ালা অবশ্যই তা আপনাকে পুষিয়ে দেবেন।
এ বিষয়ে হজরত আয়েশা (রা.)-এর সূত্রে বর্ণিত হাদিস থেকে শিক্ষা নেওয়া যেতে পারে। তবে নির্ধারিত সময়ের হিসাবে সংশয় থাকলে বা সময় অনিয়মিত হলে ঔষধ সেবন নিরাপদ।