বারান্দায় বারোমাসি ফুল

বারান্দায় রোদ্দুর, আরাম কেদারা, আর রঙিন ফুলগাছ—মন ফুরফুরে হতে আর কী লাগে? বারান্দা সাজাতে ফুলগাছের জুড়ি নেই। যদি থাকে বারোমাসি ফুলগাছ, তাহলে তো কথাই নেই! কোন গাছ লাগাবেন কোন ধরনের বারান্দায়, কিভাবে নেবেন যত্ন জানিয়েছেন নাঈম সিনহা

ফুলে সজ্জা

ফুলে ফুলে ভরে যাক বারান্দা। গাছের ফোটা ফুলেই হয়ে যাবে বারান্দার সাজ। প্রায় সব ধরনের ছোট ও মাঝারি ফুলগাছ বারান্দার টবে লাগাতে পারবেন। বারান্দা ছোট হলে সিলিং থেকে ঝুলিয়ে দিতে পারেন দূর্বা কিংবা ঘাসফুলের ছোট্ট টব। রেলিংয়ের সঙ্গে গাছ রাখার জন্য রাখতে পারেন র্যাক। সেখানে ফুলের গাছ সারি বেঁধে রাখতে পারবেন কিংবা বারান্দার এক কোণে বানাতে পারেন ছোট্ট র্যাক। সেখানে বিভিন্ন লেয়ারে গাছ রাখতে পারেন। আবার এক কোণে ছোট, মাঝারি, বড়—তিন লেয়ারে গাছ দিয়েও সাজাতে পারেন। যেমন—প্রথমে নিচে থাকতে পারে ছোট বেলি, নয়নতারা, সন্ধ্যামালতী। মাঝারি লেয়ারে রাখতে পারেন গোলাপ, কামিনী কিংবা টগর। মাটি থেকে দ্বিতীয় লেয়ারের উচ্চতা হবে দুই থেকে আড়াই ফুট। আর সবার ওপরের লেয়ারে রাখতে পারেন ঝুমকো জবা, মাধবীলতা কিংবা বাগানবিলাসের ছোট ঝাড়।

দেয়ালের রঙের সঙ্গে সামঞ্জস্য

বারান্দার দেয়ালে রঙের সঙ্গে সামঞ্জস্য করে রাখতে হবে ফুলগাছ। ছোট বারান্দার সাদা বা অফহোয়াইট দেয়ালের সঙ্গে যেকোনো গাঢ় রঙের ফুলের গাছ মানাবে। যেমন—নয়নতারা, লাল গোলাপ, সন্ধ্যামালতী। কমলা, লাল, হালকা নীল রঙের বারান্দায় দেয়ালের সামনে হালকা রঙের ফুলের গাছ লাগাতে পারেন। যেমন—হাইব্রিড টগর, বেলি, কাঠগোলাপ।

যত্ন

♦ গাছগুলো পর্যাপ্ত রোদ পাচ্ছে কি না খেয়াল রাখুন।

♦ গাছ রোদ কম পেলে অল্প পানি দিন। আর রোদ বেশি হলে বেশি পানি দিন।

♦ প্রতি সপ্তাহে টবের মাটি খুঁচিয়ে আলগা করে দিন। এতে গাছের শিকড় সহজে বাড়বে।

♦ গাছের পাতায় বেশি ধুলো জমলে পানি দিয়ে হালকা স্প্রে করুন।

♦ সূর্যের আলো একেবারেই পায় না এমন হলে সপ্তাহে অন্তত এক দিন গাছগুলোকে রোদ্রস্নান করান।

♦ পচা পাতা, হলুদ বা খয়েরি কাণ্ড গাছের কাছে না জমিয়ে রেখে ফেলে দিন।

♦ মাসে একবার গাছে সার দিন।

দরদাম

আগারগাঁওয়ের কৃষিবিদ উপকরণ নার্সারির মোহাম্মাদ রানা জানান, কোনো গাছই পুরো বারো মাস ফুল দেয় না। জাতভেদে ৩ থেকে ৯ মাস ফুল হয়। তবে এখন হাইব্রিড অনেক গাছেই ১২ মাস ফুল থাকে। গাছের দরদাম করতে গেলে তিনি জানান, রঙ্গন, বেলি, নয়নতারা, হাসনাহেনা, গন্ধরাজ, কামিনীর ছোট চারাগাছগুলো পাওয়া যাবে ৫০ থেকে ১০০ টাকায়। ছোট জুঁই ও কামিনী ফুলগাছের দাম ১০০ থেকে ১৫০ টাকা। ছোট চায়নিজ টগর চারা ৫০ টাকা আর হাইব্রিড টগর ১৫০ টাকা। দেশি জবা পাওয়া যাবে ৫০ টাকা আর হাইব্রিড ৩০০ টাকায়। লতানো ফুলের গাছ যেমন—মাধবীলতা ২০০ টাকা, বাগানবিলাস ২০০ টাকা, ঝুমকোলতা ২৫০ টাকা ও নীলকণ্ঠ ১৫০ টাকায় পাওয়া যাবে।

কোথায় পাবেন

রাজধানীর দোয়েল চত্বর, ধানমণ্ডির তাজমহল রোড ও মিরপুর রোডের পাশে, বেগম রোকেয়া সরণি, শেরেবাংলানগর, ঢাকা ক্যান্টমেন্টের দেওয়ানপাড়া বালুর মাঠ, উত্তরার দিয়াবাড়ী রোড, মোহাম্মদপুরের আওরঙ্গজেব রোড, আগারগাঁও বাসস্ট্যান্ড, উত্তরা সেক্টর-৩ প্রভৃতি স্থানে। যোগাযোগ : আগারগাঁওয়ের কৃষিবিদ উপকরণ নার্সারি ০১৮১৯ ১৯৪৩০৩; উত্তরা-৩ এর ভাই ভাই নার্সারি ০১৭২৫ ৫৯০৫০০; দোয়েল চত্বরের ইকবাল নার্সারি ০১৬৭৩ ৫৬৮১৬৫