আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল পাগল দুই ভাইয়ের করুণ মৃত্যু, এলাকা জুড়ে শোকের ছায়া!

বিশ্বকাপ ফুটবল আসলেই যেন সবার মাঝে অন্যরকম এক উত্তেজনা কাজ করে। আমাদের দেশেও তার ব্যতিক্রম নয়। তবে সেই উত্তেজনা যখন বাড়াবাড়ি পর্যায়ে চলে যায় তখনি ঘটে দুর্ঘটনা। যেমনটি ঘটেছে এই দুই ভাইয়ের সাথে।
আর্জেন্টিনা-ব্রাজিলের ফুটবল আসক্তিতেই মাতামুহুরী নদীত সলিল সমাধি হলেন দুই মেধাবী সহোদর আমিনুল হোসেন এনশাদ (১৬) ও আফতাব হোসেন মেহরাব (১৪)। তারা দুজনই চকরিয়ার বিশিষ্ট শিল্পপতি ও আনোয়ার শপিং কমপ্লেক্সের মালিক আলহাজ আনোয়ার হোসেনের সন্তান। আনোয়ার হোসেনের দুই ছেলে ও এক মেয়ে।

বড় মেয়ে নওশাদ বিনতে আনোয়ার স্মৃতি চকরিয়া কলেজে ইন্টারমিডিয়েটে পড়েন। আফতাফ হোসেন মেহরাব চকরিয়া গ্রামার স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে এবং আমিনুল হোসেন এনশাদ বিজ্ঞান বিভাগের দশম শ্রেণির ছাত্র।
শনিবার (১৪ জুলাই) বিকেলে মেধাবী ও দুরন্তপনা এই দুই ভাই আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিল দলে বিভক্ত হয়ে খেলতে নামে মাতামুহুরীর ব্রিজের নিচে বালু চরে।

স্কুলের দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষা শেষ হলে প্রিয় ফুটবল দলের হয়ে প্রীতি ম্যাচে অংশ নিয়েছিল আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল সমর্থক এই দুই সহোদর। খেলা শেষে বন্ধুদের সাথে নদীতে গোসল করতে নেমে চির বিদায় নিতে হলো তাদের। তাদের সাথে রাক্ষুসে মাতামুহুরীতে তলিয়ে যায় আরো ৩ ব্রাজিল সমর্থক। নদীতে নিখোঁজ ৫ জনের মধ্যে মেহরাব, এনসাদ ও ফারহানের মরদেহ শনিবার সন্ধ্যায় উদ্ধার হলেও এখনো নিখোঁজ তূর্য ও আবির।

আনোয়ার হোসেনের দুই ছেলে আমিনুল হোসেন এনশাদ ও আফতাব হোসেন মেহরাব অত্যন্ত মেধাবী।
শখের বশে ফুটবল খেলতে গিয়ে দুই ভাই লাশ হয়ে ফিরল বাড়িতে।
শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে যখন সহোদরের মরদেহ বাড়িতে নেয়া হয়, তখন নেমে আসে নীরবতা, নিস্তব্ধতা। পিতা-মাতা ও বোনসহ স্বজনদের আর্তচিৎকারে পুরো এলাকা স্তব্ধ হয়ে গেছে। চকরিয়া পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ডের স্টেশনপাড়ায় চলছে শোকের মাতম।

চারদিকে কান্নার রোল ও আহাজারি। শোকাহত স্বজন ছাড়াও বিলাপ করছেন পাড়া-প্রতিবেশীরা। দুই ভাইকে হারিয়ে বারবার জ্ঞান হারাচ্ছেন একমাত্র বোন সৃতি। বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন তাদের পিতা-মাতাও। তাদের সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা নেই কারোর।

আফতাফ হোসেন মেহরাব ও আমিনুল হোসেন এনশাদের মতো হতভাগার কাতারে শামিল হলো ফারহান বিন শওকত, সাঈদ জওয়াদ অবির ও পূর্ণ ভট্টাচার্য।

ফারহানের মরদেহ পাওয়া গেলেও এখনো নিখোঁজ পূর্ণ ও আবির। তারা সবাই চকরিয়া গ্রামার স্কুলের ছাত্র।