পবিত্র হজ ইসলামের অন্যতম স্তম্ভ। ইসলামে হজ আদায়ের গুরুত্ব অপরিসীম। আল্লাহ তাআলা তাঁর প্রিয় বান্দাদের মধ্যে সামর্থ্যবান ব্যক্তিদের ওপর হজ ফরজ করেছেন। ইরশাদ হয়েছে, প্রত্যেক সামর্থ্যবান মানুষের ওপর আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য বায়তুল্লাহর হজ করা ফরজ। (আল ইমরান, আয়াত : ৯৭)
তবে যাদের হজ অথবা ওমরায় যাওয়ার সামর্থ্য ও সক্ষমত নেই, তাদের জন্যও দয়াবান আল্লাহ এমন কিছু পথ বের করে দিয়েছেন। যেগুলো দ্বারা দুর্বল বান্দারা মকবুল হজ্জের অথবা ওমরাহর সওয়াব পেয়ে যেতে পারে। প্রিয় নবী (সা.) আমাদের সেসব রকমারি পথ বা আমল বাতলিয়ে দিয়েছেন বিভিন্ন হাদিসে। সেসব হাদিসের কোনোটা সহিহ বোখারি, সহিহ মুসলিম, সুনানে তিরমিজি কিংবা অন্য কোনো হাদিসগ্রন্থে অকাট্য সূত্রে বর্ণিত হয়েছে আবার কোনোটা ওই মানের না হলেও জয়িফ কিংবা মওজু নয়, পারিভাষিক দৃষ্টিকোণ থেকে যেগুলোকে হাসান বলা হয়। অতএব আমরা যদি বিশ্বাস এবং সওয়াবের দৃঢ় আশ্বাস নিয়ে এসব আমল করতে পারি, তবে ইনশাআল্লাহ অনেক বিরাট প্রতিদানের অধিকারী হতে পারবো।
আবু উমামা (রা.) বর্ণনা করেন, নবীজি (সা.) ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি মসজিদে গিয়ে জামাতের সঙ্গে ফরজ নামাজ আদায় করল সে যেন হজ্জ করে আসল। আর যে ব্যক্তি নফল নামাজ আদায় করতে মসজিদে গমন করল সে যেন ওমরাহ করে আসল। (তাবারানি: ৭৫৭৮) হাদিসটি হাসান।
দ্বীন শিখা বা শিখানোর উদ্দেশ্যে মসজিদে যাওয়া। এটা অনেক বড় সওয়াবের একটা কাজ। আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি মসজিদে গেল কোনো ভালো কথা শিখা বা শিখানোর উদ্দেশ্যে, সে পরিপূর্ণরূপে হজ আদায়কারী একজন ব্যক্তির ন্যায় সওয়াব লাভ করবে। (তাবারানি: ৭৪৭৩)
আনাস ইবনে মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত, নবীজি (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি জামাতের সঙ্গে ফজরের নামাজ আদায় করল, তারপর সূর্যোদয় পর্যন্ত মসজিদে বসে আল্লাহর জিকির করল, এরপর দু রাকাত নামাজ আদায় করল, সে ব্যক্তি হজ ও ওমরাহর সওয়াব নিয়ে ফিরল। (তিরমিজি: ৫৮৬)
হজরত আনাস ইবনে মালিক (রা.) বর্ণনা করেন, জনৈক ব্যক্তি নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট এসে বলল, আমি জিহাদে অংশগ্রহণ করতে চাই, কিন্তু আমার সেই সামর্থ্য ও সক্ষমতা নেই। নবীজি প্রশ্ন করলেন, তোমার মাতা-পিতার কেউ কি জীবিত আছেন? লোকটি বলল, আমার মা জীবিত। প্রত্যুত্তরে নবীজি বললেন, তাহলে মায়ের সেবা করে আল্লাহর নিকট জিহাদে যেতে না পারার অপারগতা বা ওজর পেশ কর। এভাবে যদি করতে পার এবং তোমার মা সন্তুষ্ট থাকেন তবে তুমি হজ্জ, ওমরাহ এবং জিহাদের সওয়াব পেয়ে যাবে। সুতরাং আল্লাহকে ভয় কর এবং মায়ের সেবা কর। (মাজমাউয যাওয়াইদ: ১৩৩৯৯) হায়সামি (রহ.) বলেন, হাদিসটি সহিহ।