চিকিৎসকদের ধর্মঘটে দুর্ভোগে রোগীরা

ত্রুটিপূর্ণ লাইসেন্সে অদক্ষ-অনভিজ্ঞ ডাক্তার-নার্স দ্বারা পরিচালিত নগরের মেহেদিবাগের বেসরকারি ম্যাক্স হাসপাতালকে র‌্যাবের অভিযানের পর হঠাৎ করে স্বাস্থ্যসেবা বন্ধ ঘোষণা করেছে বেসরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান সমিতি।

গতকাল রোববার দুপুরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সারওয়ার আলম ম্যাক্স হাসপাতালকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করেন।

এরপর দুপুর ২টা থেকে ধর্মঘট শুরু হলে বন্দরনগরীতে অচল হয়ে পড়ে বেসরকারি চিকিৎসাসেবা। এতে অবর্ণনীয় দুর্ভোগে পড়ে রোগীরা। ধর্মঘটের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেছে বিএমএ চট্টগ্রাম এবং বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিক্যাল প্র্যাকটিসনার্স অ্যাসোসিয়েশন।

এদিকে দুপুর ২টা থেকে ধর্মঘট শুরু করার ঘোষণা দেওয়া হলেও এর আগেই ধর্মঘট শুরু করে দেয় কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান। ২টার পর ধর্মঘট পুরোপুরি শুরু হলে নগরীর বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টারসহ বেসরকারি চিকিৎসাসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোতে অচলাবস্থা দেখা দেয়। নতুন করে রোগী ভর্তি বন্ধ রয়েছে। সেই সঙ্গে পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং সব চিকিৎসকের ব্যক্তিগত চেম্বারও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। দুপুরের পর থেকে বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে অপারেশন কার্যক্রমও বন্ধ রয়েছে।

গতকাল দুপুর ১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন সরকারি হাসপাতাল থেকে বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে গিয়ে পরীক্ষা করাতে না পেরে সবাই ফিরে যায়। বেসরকারি হাসপাতাল থেকে রোগীরা যায় সরকারি মেডিক্যালের দিকে। হঠাৎ ধর্মঘটে দিশাহারা হয়ে পড়ে রোগী ও তাদের স্বজনরা। চিকিৎসাসেবা পাওয়ার আশায় বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সামনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করে তারা।

এদিকে সেমাবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, চিকিৎসকদের ধর্মঘটের খবর না জেনে অনেকেই আশপাশের জেলা উপজেলা থেকে চিকিৎসা নিতে এসে দুর্ভোগে পড়েন। মুমূর্ষু রোগীকে বাঁচাতে বাধ্য হয়ে ছুটে যাচ্ছেন সরকারি হাসপাতালের দিকে। এ অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বাড়ছে রোগীর চাপ।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কর্তৃপক্ষ জানায়, গতকাল থেকে আজ সকাল ৮টা পর্যন্ত বহির্বিভাগে প্রায় দ্বিগুণ টিকিট বিক্রি হয়েছে। জরুরি বিভাগে ভর্তি রয়েছে অতিরিক্ত ৩শ’ রোগী। হাসপাতালের বারান্দায়ও জায়গা হচ্ছেনা রোগীদের। এ অবস্থায় বাড়ছে রোগীদের দুর্ভোগ। চিকিৎসা দিতেও হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক ও নার্সরা।