অসুস্থ মাকে বাঁচাতে দুই অবুঝ শিশুর লড়াই, পাশে দাঁড়ায়নি কেউ!

রাজধানী ঢাকার প্রতিটি দিনই যেন এক একটা নির্মমতার গল্প! এখানে কংক্রিটের দেয়ালে চাপা পড়ে যায় মানবিকতা, যেভাবে চাপা পড়ে যায় সকালের সোনালী রোদ, সেভাবেই চাপা পড়ে অসংখ্য অভাবী অসহায় মানুষের হাহাকার। কারো দিকে ফিরে দেখার সময় নেই। অবাক করা এ শহরে বিত্তশালীদের বিলাসী জীবনের ঝলকানিতে যেমন চোখ ধাঁধিয়ে যায়, তেমনি অসহায় জীবনের করুণ কাহিনি ছুটন্ত মানুষকে থমকে দাঁড়াতেও বাধ্য করে।

রাজধানীর ধানমণ্ডির সোবহানবাগ মসজিদ এলাকা, ব্যস্ততম নগরী। সময়ের সাথে ছুটে চলছে অসংখ্য মানুষ। কিন্তু রাস্তার এক কোনো পড়ে থাকা অসহায় মায়ের দিকে দৃষ্টি নেই কারো। অসহায় ‘মা’। সাথে দুই অবুঝ শিশু। কেউই যেন দেখছে না তাদের। এ শহরে সাহায্যের হাত বাড়ানোর জন্য অনেক হাত আছে। তবে, হয়তো কার সাহায্য দরকার তা দেখার মতো কোনো চোখ নেই। চোখে জল আনা মানবিক দৃশ্যপটের এ ছবি তুলে ধরে আমাদের এক করুণ বাস্তবতার মুখোমুখি এনে দাঁড় করিয়েছেন সাইফুল ইসলাম জুয়েল নামে এক ব্যক্তি। নিজের ফেসবুক টাইমলাইনে শেয়ার করেছেন ছবিটি।

শনিবার (০৭ জুলাই) সোবহানবাগ মসজিদ থেকে ২০০ গজ দক্ষিণের ফুটপাতে এক ছিন্নমূল অসহায় মাকে বাঁচাতে তার দুই শিশুসন্তানের লড়াইয়ের দৃশ্য মোবাইল ফোনে ক্যামেরাবন্দি করেন জুয়েল।ছবিতে দেখে যায়, মাতৃসেবায় ব্যস্ত দুই অবুঝ শিশু। মাথায় পানি ঢেলে মায়ের জ্বর প্রশমনের চেষ্টা করছে বড় ছেলেটি। পাশে কারা যেন রুটি, কলা রেখে গেছে। পানি রাখার জন্য কোনো পাত্রও নেই তাদের। কুড়িয়ে পাওয়া মিনারেল ওয়াটারের বোতলেই কাজ চালিয়ে নিচ্ছে শিশুটি। ছোট ছেলেটির কিছু করার ক্ষমতা নেই দেখে বিদ্যুতের একটি খুঁটিতে মাথা ঠেকিয়ে রেখে তার অসহায়ত্বের জানান দিচ্ছে।

শনিবার রাতে সামাজিকমাধ্যম ফেসবুকে ছবিটি শেয়ার করে জুয়েল লিখেছেন, ‘একজন অসুস্থ মা ও তার দুই অবুঝ সন্তানের মাতৃসেবা… মা-দের এমন অসুস্থ অবস্থায় দেখলে কষ্ট লাগে, একেবারে দিলে লাগে কষ্টটা।’