ভাড়া হয়ে গেল বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর প্রথম ট্রান্সপন্ডার

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর গত মে মাসে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণ করা হয়।উটক্ষেপণের পর কক্ষপথে পৌঁছাতে নির্ধারিত সময় নেয়। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের কাজ সফল ভাবে সম্পূর্ণ করে এরপর বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এটি বহন করা ফ্যালকন-৯ রকেটটি।

বাংলাদেশ ৫৭ তম দেশ হিসেবে নিজস্ব স্যাটেলাইটের মালিক হলো। মহাকাশ জয় হলো ছোট্ট এই দেশটির। যা বাংলাদেশের ইতিহাসের খাতায় লেখা হয়ে থাকবে যুগ যুগ ধরে। আগামী সেপ্টেম্বর থেকে বাণিজ্যিকভাবে সেবা দিতে শুরু করবে দেশের প্রথম স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১। ইতোমধ্যে স্যাটেলাইট সেবা ব্যবহারের জন্য বাংলাদেশ কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডের (বিসিএসসিএল) সঙ্গে প্রথম চুক্তি সই করেছে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়।

রোববার বিকেলে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক অনুষ্ঠানে এ চুক্তি সই হয়। নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারের উপস্থিতিতে চুক্তিতে সই করেন নৌ-মন্ত্রণালয়ের সচিব আবদুস সামাদ এবং বিসিএসসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সাইফুল ইসলাম।

এবিষয়ে বিসিএসসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফুল ইসলাম জানান, আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে এ সেবা দেওয়া শুরু হবে। এর মাধ্যমে আয় করতে শুরু করবে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট। এর ব্যবহার ব্যয় বিদেশি সাটেলাইটের চেয়ে সাশ্রয়ী হবে। নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের ৪০টি ট্রান্সপন্ডারের একটি ব্যবহার করবে। তবে তারা এটা ভাড়া দিতে পারবে না।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সচিব শ্যামসুন্দর সিকদার জানান, দেশের ৯০ হাজার নৌযান ও প্রতিবছর বাংলাদেশে আসা চার হাজার জাহাজ এই সেবার আওতায় আসবে। বর্তমানে দেশের অভ্যন্তরীণ নদী ও সমুদ্রপথে চলমান জাহাজে উচ্চগতির টেলিযোগাযোগ সেবা না থাকায় সেখানে টেলিফোন, ইন্টারনেট, টেলিভিশন ও টেলিযোগাযোগের অন্যান্য সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে না।

এই চুক্তির মাধ্যমে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন সংস্থার অধীনস্থ বন্দর, ফেরিঘাট, জাহাজ ও অন্যান্য স্থাপনায় বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ থেকে প্রয়োজনীয় সেবা দেওয়া হবে। এর ফলে জাহাজগুলো স্থলভাগের সঙ্গে সার্বক্ষণিক দ্রুতগতির ইন্টারনেট সেবা গ্রহণ ও টেলিভিশন প্রদর্শন করতে পারবে।

অনুষ্ঠানে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের পরই গুজব রটানো হয়েছিলো, রাষ্ট্রের টাকায় উৎক্ষেপণ করা এই স্যাটেলাইটের মালিকানা দু’জন বিশেষ ব্যক্তিকে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আজ এই চুক্তি সইয়ের মাধ্যমে প্রমাণ হয়েছে- দেশের মানুষের রক্ত পানি করে দেওয়া করের টাকায় উৎক্ষেপিত স্যাটেলাইটের মালিক এদেশের জননগণই আছেন।

এ ব্যাপারে, নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান বলেন, এই স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের পর বলা হয়েছিল এটা দেশের কোনো কাজে আসবে না। আবার বলা হয়েছিল, এটার মাধ্যমে টাকা পাচার করা হয়েছে, টাকা নষ্ট করা হয়েছে। কিন্তু আজ এই চুক্তির মাধ্যমে প্রমান পাচ্ছে বিনিয়োগের টাকা ফেরত আসার পথ চালু হলো। আমার জানা মতে আট বছরে এই স্যাটেলাইটের বিনিয়োগের টাকা উঠে আসবে।আর আমরা এটার ব্যাবহার করতে পারবো।এটা দেশের অর্জন।