যেকোনো অপারেটরে ৪০ পয়সা!

যেকোনো অপারেটরে- সবগুলো অপারেটরে অভিন্ন কলরেট চালু করতে যাচ্ছে টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়। এতদিন এক মোবাইল অপারেটর থেকে অন্য মোবাইল অপারেটরে ফোন করতে তিন থেকে চারগুণ চার্জ গুনতে হতো। এখন নতুন প্রস্তাবনা অনুযায়ী যে কোনো অপারেটরে কথা বলা যাবে ৪০ পয়সা মিনিটে।

শীর্ষ মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোন এই অভিন্ন কলরেটের তীব্র বিরোধিতা করে আসছিল। অফনেটে (গ্রামীণফোন থেকে অন্য অপারেটরে) এতদিন গ্রামীণফোনের চার্জই সবচেয়ে বেশি ছিল। তবে গ্রামীণফোনের এই আপত্তি আমলেই নেয়নি মন্ত্রণালয়।

টেলিযোগাযোগ ও আইসিটি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার জানান, ‘সবাইকে খুশি করে কিছু করা যাবে না। আমাদের কাছে গ্রাহকের সন্তুষ্টিই বড় কথা। সেখানে গ্রামীণফোন কি বলল তাতে কিছু আসে যায় না। আমরা অভিন্ন কলরেটের যে প্রস্তাব দিয়েছি সেটা শিগগিরই পাশ হয়ে যাবে বলে আশা করছি। বর্তমানে ওই প্রস্তাবনা অর্থ মন্ত্রণালয়ে আছে। সেখান থেকে অনুমোদন হলেই এটির বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়ে যাবে।’

ঘোষণা অনুযায়ী নম্বর না বদলিয়ে অপারেটর পরিবর্তন সেবা বা এমএনপি চালু হওয়ার কথা আগস্টেই। তার আগেই এই অভিন্ন কলরেট চালু হচ্ছে। অন্যদিকে এমএনপির টেস্টিং শুরু করেছে গ্রামীণফোন, রবি ও বাংলালিংক।

দেশে দুই ধরনের কলরেট চালু আছে, অননেট ও অফনেট। অননেট (একই মোবাইল নেটওয়ার্ক) ও অফনেট (এক নেটওয়ার্ক থেকে অন্য নেটওয়ার্কে) তুলে দিয়ে সরকার মোবাইল ফোন অপারেটরগুলোর জন্য ‘একটিই কলরেট’ চালু করতে যাচ্ছে। এমএনপি (মোবাইল নম্বর পোর্টেবিলিটি) সেবা চালুর আগেই এক কলরেট চালু হলে সুফল পাবেন মোবাইলফোন ব্যবহারকারীরা।

গ্রামীণফোনের হেড অব কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স মাহমুদ হোসেন কয়েকদিন আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বলেছেন, অভিন্ন কলরেট হলে সাধারণ গ্রাহকের খরচ বেড়ে যেতে পারে। কারণ সাধারণ গ্রাহক তাদের সুবিধামতো অননেট প্যাকেজ ব্যবহার করে। সেক্ষেত্রে তারা ৩০ থেকে ৩৫ পয়সায়ও কথা বলার সুযোগ পান। এখন সেটা বেড়ে গেলে গ্রাহকের খরচও বাড়বে।

বর্তমানে বিটিআরসির নির্ধারণ করে দেওয়া সর্বনিম্ন অননেট চার্জ প্রতি মিনিট ২৫ পয়সা, অফনেট ৬০ পয়সা। সর্বোচ্চ চার্জ প্রতি মিনিট দুই টাকা। মোবাইল ফোন অপারেটররা এই সীমার মধ্যে থেকে নিজেদের অপারেটরের চার্জ নির্ধারণ করেছে। ফলে একেক অপারেটরের চার্জ একেকরকম। মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীরা বিভিন্ন অপারেটরে অননেটে ৩০ থেকে ৩৯ পয়সা এবং অফনেটে ৯১ পয়সা থেকে এক টাকা ৪০ পয়সায় কল করার সুযোগ পাচ্ছেন বর্তমানে। এক রেট চালু হলে এই পার্থক্য এবং বৈষম্য থাকবে না।

প্রসঙ্গত, গত ৩১ মের মধ্যে এমএনপি সেবা চালুর কথা ছিল। কিছু কারিগরি সমস্যার কারণে আগামী আগস্টের যে কোনো সময় গ্রাহকরা এই সেবা পাবেন বলে জানা গেছে। তবে সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে যেভাবেই হোক এমএনপি সেবা চালু করতে হবে। এমএনপি সেবার অনুমোদন পেয়েছে বাংলাদেশ ও স্লোভেনিয়ার যৌথ কনসোর্টিয়াম ইনফোজিলিয়ান বিডি টেলিটেক।