চলার পথের সঙ্গী

জাকিয়া বারী মম ও মেহজাবিন চৌধুরী—দুজনই লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার। তবে সেই পরিচয় ছাপিয়ে আজ দুজনই দেশের সেরা অভিনেত্রীতে পরিণত হয়েছেন নিজেদের অভিনয়গুণে। এবারের ঈদে দুজনের অভিনয়ের সেরা নাটক-টেলিফিল্ম বিভিন্ন চ্যানেলে প্রচারিত হয়েছে। দুজনের অভিনয়ে মুগ্ধ হয়েছেন দর্শক। তাদের নিয়ে লিখেছেন

অভি মঈনুদ্দীন

মম ও মেহজাবিন দুজনই অভিনয়ের দুনিয়ার চলার পথের সঙ্গী। দুজনই একই প্লাটফর্ম থেকে উঠে আসা শিল্পী। তাই একের প্রতি অন্যের ভালোবাসাও রয়েছে অসীম। দুজনই এবারের ঈদে তাদের অভিনয়ের কারণে দর্শকের ভালোবাসায় মুগ্ধ হয়েছেন। তাদের অভিনীত প্রতিটি নাটক-টেলিফিল্মের গল্পে যেমন ভিন্নতা ছিল, নির্মাণেও বেশ যত্ন ছিল নির্মাতাদের। যে কারণে তাদের দুজনের অনবদ্য অভিনয়ে নাটক-টেলিফিল্মগুলো হয়ে উঠে দর্শকের কাছে দারুণ উপভোগ্য। নির্মাতারা যেন মম ও মেহজাবিনের ওপরই এই সময়ে যেকোনো চ্যালেঞ্জিং চরিত্রের জন্য অনায়াসে নির্ভর করতে পারেন। এবারের ঈদে মম ও মেহজাবিনকে একসঙ্গে একটি টেলিফিল্মেই দেখা গেছে। জাকারিয়া শৌখিনের রচনা ও নির্দেশনায় শরত্চন্দ্রের ‘দেবদাস’-এর ছায়া অবলম্বনে নির্মিত ‘জলসা ঘর’-এ তাদের দুজনকে দেখা গেছে। এতে তাদের বিপরীতে ছিলেন অপূর্ব। এছাড়া মম ও মেহজাবিন অভিনীত ভিন্ন ভিন্ন নাটক টেলিফিল্মে তাদের দুজনের অনবদ্য অভিনয় মন ছুঁয়ে গেছে। মম অভিনীত শিহাব শাহীন পরিচালিত ‘শেষ পর্যন্ত’, মাহমুদুর রহমান হিমির ‘আনমনে তুমি’ আবু হায়াত মাহমুদের ঈদ ধারাবাহিক ‘লাভলী কথাচিত্র’, শামীম জামানের ‘ঘাওরা মজিদ’, সালাহ উদ্দিন লাভলুর ‘বুকের মাঝে নূপুর বাজে’ ও রুবেল হাসানের ‘পরশ’ দর্শকের মধ্যে দারুণ সাড়া ফেলেছে। অন্যদিকে মেহজাবিন অভিনীত মিজানুর রহমান আরিয়ান পরিচালিত ‘বুকের বাঁ পাশে’, আশফাক নিপুণের ‘ফেরার পথ নেই’ নাটকে অভিনয়ের জন্য বেশি সাড়া পেয়েছেন। তবে সাজ্জাদ সুমনের ‘দ্বৈরথ’, মাহিদুল মনের ‘খেয়ালি তুমি হেয়ালী আমি’, তুহিন হোসেনের ‘কতটা পথ পেরুলে’, হাবিব সাকিলের ‘নিঃশব্দে সুর’সহ আরো বেশকিছু নাটক টেলিফিল্মে মেহজাবিনের আন্তরিক অভিনয়ও দর্শকের মন ছুঁয়ে যায়। মম ও মেহজাবিন দুজনই তাদের নিজ নিজ চরিত্রে নিজেদেরকে ভাঙার চেষ্টা করেছেন। মম বলেন, ‘বছরজুড়েই দর্শক ঈদের নাটক-টেলিফিল্ম দেখার জন্য অধীর আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করেন। যে কারণে আমি ঈদের কাজ করার ব্যাপারে ভীষণ চুজি থাকি। গল্প নির্বাচন থেকে শুরু করে চরিত্র ও কস্টিউম নিয়েও সচেতন থাকি। সর্বোপরি যেসব নাটক-টেলিফিল্মে কাজ করি, আমি আমার সর্বোচ্চটা দিয়েই ভালোভাবে কাজগুলো শেষ করার চেষ্টা করি। এবারের ঈদেও যেসব কাজ করেছি, অনেক কষ্ট করে নির্ধারিত সময়ের পরেও কষ্ট করে কাজগুলো শেষ করেছি। যার ফল আমি কিন্তু ঠিকই পাচ্ছি। দর্শকের কাছ থেকে প্রতিদিনই সাড়া পাচ্ছি। সহকর্মীরা উত্সাহ দিচ্ছেন। নির্মাতারাও অনুপ্রেরণা জোগাচ্ছেন। মনে হয় আমি যেন নতুন আমাকে আবিষ্কার করছি।’ মেহজাবিন বলেন, ‘অভিনয়ে আমি আগের চেয়েও যে অনেক বেশি সিরিয়াস, তা দর্শক আমার কাজগুলো দেখলেই বোঝেন। এবারের ঈদে অনেক স্ক্রিপ্ট এসেছিল আমার কাছে। সেখান থেকে ভালো গল্পের নাটক-টেলিফিল্মগুলোতেই আমি কাজ করেছি। আমি কিন্তু দর্শকের কথা ভেবেই ভালো ভালো গল্পে কাজ করেছি। কারণ আমি দর্শকের কারণেই আজকের মেহজাবিন। তাই আগামী দিনের চলার পথে এগিয়ে যেতে হলে দর্শকের কথা মাথায় রেখেই আমাকে কাজ করতে হবে এবং ভালো ভালো গল্পে চ্যালেঞ্জিং চরিত্রগুলোর মুখোমুখি হয়ে নিজেকে ভেঙে অভিনয় করতে হবে আমাকে। সবার সহযোগিতা নিয়েই আমি এগিয়ে যেতে চাই আগামীর পথে।’ এদিকে ঈদ শেষে এরমধ্যে মেহজাবিন কাজে ফিরেছেন। বর্তমানে তিনি মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর নির্দেশনায় একটি বিজ্ঞাপনচিত্রের কাজ করছেন। মম গেল ২০ জুন থেকে নতুন চলচ্চিত্র রায়হান রাফি পরিচালিত ‘দহন’-এর কাজ শুরু করেছেন। এই চলচ্চিত্রে মম একজন সাংবাদিকের চরিত্রে অভিনয় করছেন। আরও এক সপ্তাহ তিনি এই চলচ্চিত্রের কাজ নিয়েই ব্যস্ত থাকবেন। জাকিয়া বারী মম বলেন, ‘দহনে কাজ করা নিয়ে আমি সত্যিই অনেক বেশি উচ্ছ্বসিত। একেবারেই নতুন একটি ইউনিটে নতুন একটি প্রজেক্টে কাজ করছি। তাই অনেক বেশি টেনশনও কাজ করছিল যে যথাযথভাবে কাজ করতে পারব কিনা। কিন্তু সবাই আমাকে খুব সহযোগিতা করছেন। রাফির আমার প্রতি অগাধ বিশ্বাস আমাকে মুগ্ধ করেছে। যে নির্মাতা আমার অভিনয়ের উপর আস্থা রাখেন, আমি তার কাজটি সর্বোচ্চ আন্তরিকতা দিয়ে করার চেষ্টা করি।’