রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের বেতন প্রায় দ্বিগুণ হচ্ছে। এ সংক্রান্ত একটি আইনের খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় এ আইনের খসড়াটি নীতিগতভাবে অনুমোদন করা হয়। সভা শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সভাকক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম একথা জানান। তিনি বলেন, মন্ত্রিসভার বৈঠকে রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শ্রমিকদের মজুরি স্কেল ও ভাতা অনুমোদন এবং পণ্য উৎপাদনশীল রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প প্রতিষ্ঠান শ্রমিক (চাকরির শর্তাবলী) আইন ২০১৮-এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন হয়েছে। জাতীয় মজুরি ও উৎপাদনশীলতা কমিশন ২০১৫ এর সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি মিল-কারখানায় কর্মরত শ্রমিকদের বেতন দ্বিগুণ করে এই আইনটি অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
সচিব বলেন, এই আইনে কমিশন মজুরি স্কেল ২০১০-এর তুলনায় ১০০ শতাংশ বৃদ্ধি এবং বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট ৫ শতাংশ হারে বাড়ানোর সুপারিশ করে। সুপারিশ অনুযায়ী, সর্বনিম্ন বেতন স্কেল ৪ হাজার ১৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮ হাজার ৩০০ টাকা এবং সর্বোচ্চ বেতন স্কেল ৫ হাজার ৬০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১১ হাজার ২০০ টাকার প্রস্তাব করা হয়েছিল। এতে ১৬টি বেতন গ্রেড রয়েছে। মজুরি কাঠামোর ২০১০ সালের মতো ২০১৫ সালে করা সুপারিশেও মূল মজুরির ৫০ শতাংশ হারে বাড়ি ভাড়া, চিকিৎসা ভাতা ১ হাজার ৫০০ টাকা, যাতায়াত ভাতা ২০০ টাকা, ধোলাই ভাতা ১০০ টাকা, উৎসব ভাতা দুই মাসের মূল বেতনের সমপরিমাণ, ছুটি নগদায়নে বাৎসরিক অর্জিত ছুটির ৫০ শতাংশ, ফান্ড মূল বেতনের ১০ শতাংশ, টিফিন ভাতা ২০০ টাকা, ২০ শতাংশ হারে নববর্ষ ভাতা, ঝুঁকি ভাতা ৪০০ টাকা, শিক্ষা সহায়তা ভাতা এক সন্তানের জন্য ৫০০ টাকা ও দুই সন্তানের জন্য এক হাজার টাকা রাখা হয়েছে। আর নারী শ্রমিকদের মাতৃত্বকালীন ছুটি ৬ মাস নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া প্রচলিত অন্যান্য সুবিধাদি বহাল রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। এ আইনের খসড়া অনুযায়ী মজুরি ১লা জুলাই ২০১৫ এবং ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার নতুন হার ১লা জুলাই ২০১৬ থেকে কার্যকর করার সুপারিশ করা হয়েছে। বর্ধিত বকেয়া মজুরি ও অন্যান্য ভাতা/প্রান্তিক সুবিধাদি সমান দুই কিস্তিতে (২০১৮-২০১৯ ও ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে) প্রদান করা হবে। মজুরি স্কেল কার্যকর হওয়ার তারিখ থেকে মহার্ঘভাতা বিলুপ্ত করা হয়েছে বলে গণ্য হবে এবং ১লা জুলাই ২০১৫ তারিখ হতে ইতিমধ্যে আহরিত মহার্ঘভাতা প্রাপ্য বকেয়া মজুরির সঙ্গে সমন্বয় করা হবে মর্মে প্রস্তাব করা হয়েছে। সভায় ‘বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা আইন-২০১৮’ এবং ‘মৎস্য সঙ্গনিরোধ আইন-২০১৮’-এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে। ‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) (সংশোধন) আইন, ২০১৮’-এর খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয় বলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব উল্লেখ করেন।