বাবা আমি কি সত্তিই- রাইফার কাজীর দেউড়ির বাসার ড্রয়িং রুমে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে হরেক রকমের খেলনা। আর এ রুমের ঠিক মাঝখানেই ঝুলছিল কাপড়ের একটি দোলনা।
শুক্রবার রাত ১০টায়ও বাসায় গিয়ে দেখা মিলেছিল দোলনাটির। কিন্তু দু’ঘণ্টা পর এ দোলনাটি সরিয়েই তার স্থানে রাখা হলো রাইফার নিথর দেহটি। রাইফাদের ড্রয়িং রুমের পাশে ডাইনিং রুম। এখানে যেতেই হাতের বাম পাশে থরে থরে সাজানো আছে ছোট্ট পায়ের চার জোড়া জুতো।
আরেকটু এগিয়ে দক্ষিণের কক্ষটিতে গেলে দেখা মিলে রাইফার সাদা রঙের ফ্রকটি। রাইফার মা বলছেন, এটি পড়লে ওকে নাকি পরী পরী লাগতো। এসব বলে বিলাপ করছিল মা। অশ্রুহীন চোখে সেই বিলাপ দেখছিল রাইফার শোকাহত বাবা ও আমাদের সহকর্মী রুবেল খান।
রাইফার মা বলছিল, এ ঘরের প্রতিটি কক্ষ হেসে খেলে মাতিয়ে রাখতো রাফিদা খান রাইফা। এরই মধ্যে গলায় ব্যাথা অনুভব করছিল সে। গায়ে এসেছিল হালকা জ্বরও। কাল বিলম্ব না করে গত বৃহস্পতিবার বিকালে আদরের রাইফাকে মা-বাবারা নিয়ে গেলেন নগরের সবচেয়ে অভিজাত বেসরকারি হাসপাতাল ম্যাক্সে।
তাদের আশা ছিল চিকিৎসকের সঠিক চিকিৎসা নিয়ে রাইফা ঘরে ফিরবে সুস্থ দেহে। একদিন পর ঠিকই ঘরে ফিরলো রাইফা। তবে সচল নয়; নিথর।অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ প্রয়োগের পর ব্যাথায় ছটপট করতে থাকা রাইফাকে ঘুমের ওষুধ দিয়েছিল চিকিৎসক।
সেই ওষুধই রাইফাকে পাড়িয়ে দিল চিরদিনের ঘুম। ওপারে যাওয়ার আগে বাবাকে কিছু কথা বলেছিল আড়াই বছরের মেয়েটি।
ব্যাথায় অস্থির রাইফা নাকি বলেছিল- ‘বাবা আমি কি মারা যাবো?’
(সারওয়ার সুমনের ফেসবুক স্ট্যাটাস থেকে)