পাপ করেছে সৈন্যরা, আমি তো করিনি: রোহিঙ্গা নারী

পালিয়ে আসার সময় রোহিঙ্গা নারীদের ধরে ধরে যৌন নির্যাতন করে মিয়ানমারের সৈন্যরা ।মাত্র সাতদিন আগে জন্ম দেয়া এক শিশুর মা বলছিলেন, ‘আমি পালানোর আগেই সৈন্যরা আমাকে ধরে ফেলে।

তারা আমাকে আটক করে এবং ধর্ষণ করে। একবার পালানোর পর আবারো ধরা পড়েন তিনি। এরপর আরো অনেকবার ধর্ষণ করা হয় তাকে।’ এরপর একদিন সীমান্ত পার হয়ে বাংলাদেশে পৌঁছাতে সক্ষম হন তিনি। জীবনের সবচেয়ে কঠিন সঙ্কটের সম্মুখীন হন তিনি কিছুদিন পর, যখন বুঝতে পারেন তিনি অন্তঃসত্ত্বা।

সন্তান জন্মের পর তাদেরকে পরিত্যাগ করা হয়েছে।কিন্তু অনেক নারীই সন্তান লালন-পালন করার সিদ্ধান্তও নিয়েছেন। ,সন্তান জন্ম দেবেন না গর্ভপাত করবেন- এই সংশয়ে কিছুদিন জর্জরিত হয়ে শেষ পর্যন্ত মা হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন মাত্র ১৭ বছর বয়সী ওই নারী। ‘গর্ভপাত করাটা যেমন পাপ, আমার সন্তানকে জন্ম দেয়ার পর তাকে ফেলে দেয়াও তেমন পাপ হতো।

তারা পাপ করেছে, আমি তো কোনো ভুল করিনি।’বয়স্ক দাদা-দাদী ছাড়া এই নারীর পরিবার বলতে আর কেউ নেই। তার বাবা-মা নিখোঁজ, সম্ভবত নিহত হয়েছেন তারা। দাদা মনে করেন বাচ্চাটিকে ফেলে দেয়া উচিত তার।‘আমি তাকে বলেছিলাম বাচ্চাটিকে ফেলে দিতে। কিন্তু সে রাজি হয়নি। তার কথা হলো, আল্লাহর ইচ্ছার ওপর নির্ধারিত হবে শিশুটির জীবন- বলছিলেন ওই নারীর দাদা।

এসব শিশুর জন্য প্রস্তুত ছিল সাহায্যকারী সংস্থাগুলোও। এখন পর্যন্ত এধরনের শিশুর সংখ্যা বেশ কম বলেই জানান সেইভ দ্য চিলড্রেনের ডেফনি কুক। কুক বলেন, ‘আমাদের সবচেয়ে বড় ভয়, এই শিশুদের অধিকাংশই মনের মধ্যে একধরনের কলঙ্ক নিয়ে বড় হবে, যা এইরকম পরিবেশে জন্ম হওয়া শিশুদের মধ্যে তৈরি হওয়া স্বাভাবিক।’

‘আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি যেন এখানকার শিশুদের স্বাভাবিকভাবে বড় হওয়ার মত পরিবেশ তৈরি করতে পারি।’ যৌন সহিংসতার শিকার হওয়া অধিকাংশ রোহিঙ্গা নারীই মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। ধর্ষণের শিকার হওয়া এক নারী বলছিলেন, তার গর্ভপাত হয়ে গেছে, কিন্তু তিনি সন্তানটি জন্ম দিতে ইচ্ছুক ছিলেন। কারণ তার দুই ছেলেই সেনাবাহিনীর হাতে মারা গেছে।সূত্রঃ বিবিসি বাংলা।