ময়মনসিংহে বিরল রোগে- আম্মু আব্বু একটা মজার কথা শুনো, সবাই খাচ্ছে মিষ্টি, মাংস, পোলাও আর আমার খাবার একমুটি বড়ি? তাও আবার সেলাইন দিয়ে খেতে হচ্ছে! মজা না আব্বু খুব মজা! বুজতে পারছি আমি খুব অসুস্থ। সবাই মিথ্যা বলে আমাকে ফাঁকি দিচ্ছে তাই না! আচ্ছা তোমরাই বলো একই খাবার দিনে ৩ বার কি কেউ খেতে পারে? আমার আর এই গুলো খেতে ভালো লাগেনা। ঈদে বাসায় নিলেনা, ঈদের খাবার কি আমি খাবোনা? এবার কি নানুর বাড়িতে ঘুরতে নিয়ে যাবে না?
এমন দুঃখভরা ক্লান্ত সুরে এভাবেই কথা গুলো বলছিলেন, বিরল রোগে আক্রান্ত ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার ধানীখোলা ইউনিয়নের উজানদাস পাড়া কমিউনিটি ক্লিনিকের (সিএইচসিপি) দায়িত্বে থাকা মোছা. তাছলিমা আক্তারের (কল্পনা)ফুটফুটে হাস্যজ্জল শিশু কন্যা মোছা. তাসমীয়া ফাইরুজ ওরফে ফিহা (১১)। তার বাবার নাম ফেরদৌস আলম। সে পেশায় একজন কৃষক ও ফিসারীজ ব্যবসায়ী ছিলেন। কিন্তু মেয়ের চিকিৎসার জন্য ভিটে বাড়ি ছাড়া সবই বিক্রি করে দিয়েছে এই হতোভাগ্য বাবা। মায়ের চাকুরি থেকে বাঁচানো সঞ্চয়ের কিছু টাকা ছিল, সে গুলোও মেয়ের পিছনেই খরচ হয়ে গিয়েছে। সব কিছু বিক্রি করেও টাকার অভাবে একমাত্র মেয়ের উন্নত চিকিৎসা করাতে ব্যর্থ হয়েছেন এই দম্পত্তি। তাই মানবিক সাহায্যের জন্য দেশের বৃত্তবান ও ধনাঢ্য ব্যাক্তিদের কাছে মেয়ের উন্নত চিকিৎসার খরচ মেটাতে সাহায্য চেয়ে আবেদন করেছেন। মায়ের আকুতি, সবাই এই অবুজ শিশুটির পাশে দাঁড়ান। আপনাদের সহানুভূতি ও সহায্যই আমার মেয়ের মুখে একটু হাসি ফুটাতে পারে।
জানা যায়, গত ৩০ এপ্রিল ২০১৮ তারিখ থেকে শিশু ফিহার শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ প্রতঙ্গ দিয়ে রক্তক্ষরণ শুরু হয়। এমন অবস্থা দেখে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে ভর্তি করেন পরিবার। পরবর্তীতে ১ মে ফিহার অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে সেখান থেকে পেডিয়াট্রিক হ্যাটটোলজি এ্যান্ড অনকোলজি বিভাগের প্রফেসর ডা. মো. আনোয়ার করিমের তত্বাবধানে ঢাকার পান্থপথ এলাকায় গ্রীনরোডের হেলথ এ্যান্ড হোপ স্পেশালাইজড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। ফিহার শরীর বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে রক্তের হিমোগ্লোবিন ৩.২ গ্রাম/ ডিল এবং প্লেটলেট সংখ্যা মাত্র ৭০০০ সিএমএম থাকায় বোন ম্যারো টেস্ট করতে দেরি হয়। পরবর্তীতে ২৬ মে এই কঠিনতম পরীক্ষা সম্পন্ন করে ৩০ এপ্রিলের রির্পোটে জানা যায়, ফিহার এ প্লাষ্টিক এনেমিয়া রোগ হয়েছে। যেই রোগটি ব্লাড ক্যান্সার থেকেও মারাত্মক এবং এর চিকিৎসা প্রচুর ব্যয়বহুল বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
আরও জানা যায়, বাংলাদেশে এই রোগের চিকিৎসা করালে প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে প্রায় ১ কোটি টাকা খরচ হতে পারে। তাও আবার আরোগ্য লাভ করার সম্ভাবনা খুবই কম। বিদেশে এই চিকিৎসা করালে প্রচুর টাকার প্রয়োজন। যা তার তার পরিবারের পক্ষে ধারণ ক্ষমতার সম্ভব নয়। ইতোমধ্যে ১ মাসে প্রায় ৭ লক্ষাধিক টাকা খরচ হয়ে গেছে। এখন প্রতিদিন বিভিন্ন ধরনের রক্ত গ্রহণ, চিকিৎসা ও অন্যানভাবে প্রচুর খরচ হচ্ছে। যা বহন করার ক্ষমতা এই পরিবারের পক্ষে হয়তো অল্প কিছুদিনের শেষ হয়ে যাবে। টাকার অভাবে ঝড়ে যাবে নিষ্পাপ কোমলমতী ফুটফুটে কচি একটি প্রাণ। ভেঙ্গে যাবে একটা পারিবারের সাজানো ফুলের বাগান। তাই এই পরিবারটি সকল বন্ধু বান্ধব, সমাজের সচেতন ব্যক্তিবর্গ, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, ধনাঢ্য দানবীর, জনপ্রতিনিধি, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মকতা/কর্মচারী মহোদয়গণ সকলের প্রতি বিনীতভাবে অনুরোধপূর্বক একটি মানবিক সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন।
মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য, তাই আসুন নিজ নিজ সামথ্য অনুযায়ী অল্প কিছু অর্থ দিয়ে একটি ফুটফুটে নিষ্পাপ কোমলমতী শিশুর প্রাণ বাঁচানোর জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিই।
যোগাযোগঃ মোছাঃ তাছলিমা আক্তার (কল্পনা) এ্যাকাউন্ট নং-১৩০০১, রুপালী ব্যাংক ত্রিশাল শাখা ময়মনসিংহ। বিকাশ এ্যাকাউন্ট নং- ০১৭১৪৮০৮২৭৯।
নিবেদক, মোছাঃ তাছলিমা আক্তার (কল্পনা), ফিহার ‘মা’- ০১৮৬১৪২৬৭৪৫/০১৭১৪৮০৪২৭