মৃত্যুকূপ সড়কে ৬ ঘণ্টায় ঝড়ে গেল ৩৩ প্রাণ

ঈদ পরবর্তী সময়ের ব্যস্ত সড়কে দেশের সাত জেলায় শুক্রবার দিবাগত গভীর রাত থেকে আজ সকাল পর্যন্ত মোটামুটি ছয়-সাত ঘণ্টার মধ্যে ৩৩ জনের প্রাণহানীর খবর এসেছে। এ সময় আহত হয়েছেন আরো অর্ধ শতাধিক মানুষ।

হতাহতদের মধ্যে অনেকেই পরিবার-পরিজনের সঙ্গে ঈদ আনন্দ উপভোগ করে কর্মস্থলে ফেরার পথে দুর্ঘটনার শিকার হন। দূরপাল্লার বাস বেশি দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে এই সময়ে।

এর মধ্যে সবচেয়ে বড় দুর্ঘটনাটি ঘটেছে গাইবান্ধার পলাশতলী উপজেলার মহেশপুরে। এখানে একসঙ্গে ১৬ জনের প্রাণহানী ঘটেছে। এরপর রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার পাগলাপীরের সালেয়া শাহ বাজারে আরো একটি দুর্ঘটনায় ছয়জন প্রাণ হারিয়েছেন।

এর বাইরে ঢাকা জেলার সাভারে চারজন, সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলায় দুজন, গোপালগঞ্জের সদর উপজেলায় দুজন, নাটোর সদর উপজেলায় দুজন এবং চুয়াডাঙ্গার সদর উপজেলায় একজন নিহত হয়েছেন।

গাইবান্ধা: গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলায় বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন আরো অন্তত ৩৩ জন।

শনিবার ভোর সোয়া ৪টার দিকে উপজেলার ঢাকা-রংপুর সড়কের মহেশপুর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন পলাশবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান।

নিহতদের মধ্যে ১৫ জনই পুরুষ, একজন নারী। আহতদের মধ্যে নারী-পুরুষ ছাড়া শিশুরাও রয়েছে।

রংপুর: তারাগঞ্জ উপজেলার পাগলাপীরে বিআরটিসির দোতলা বাস ও ট্রাকের সংঘর্ষে ছয়জন নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন আরো অন্তত ১০ জন।

শুক্রবার দিবাগত রাত ২টার দিকে উপজেলার পাগলাপীরের সলেয়া শাহ বাজারে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

তারাগঞ্জ হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল বাকি বলেন, দোতলা বাসটি যাত্রী নিয়ে দিনাজপুর থেকে ঢাকার দিকে যাচ্ছিল। পাগলাপীরের সলেয়া শাহ এলাকায় বাসটির চাকা পাংচার হয়ে যায়।

তখন যাত্রীদের অনেকে গরমের কারণে বাস থেকে নেমে রাস্তার উপর বসে বিশ্রাম নিচ্ছিল। এ সময় একই দিক থেকে আসা একটি বালুবোঝাই ট্রাক বাসটিকে পিছন থেকে ধাক্কা দেয়। এতে রাস্তায় বসা ছয় বাসযাত্রী ঘটনাস্থলেই নিহত হন। হতাহতরা সবাই দিনাজপুরের।

সাভার: সাভারের ঢাকা-আরিচা সড়কের আমিনবাজারের তুরাগ এলাকায় বাসের সঙ্গে ট্রাকের সংঘর্ষে চারজন নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন আরো অন্তত ২০ জন।

শনিবার সকাল ৭টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতদের নাম-পরিচয় এখনো জানা যায়নি।

নাটোর: নাটোর সদর উপজেলায় ইজিবাইক ও ট্রাকের মধ্যে সংঘর্ষে দুজন নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন আরো তিনজন।

শনিবার সকাল ৭টার দিকে নাটোর শহরের আলাইপুর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন সুলতা রানী দেবনাথ ও কানাই লাল দেবনাথ। তাদের বাড়ি নলডাঙ্গা উপজেলার সোনাপাতিল গ্রামে।

পাবনা: সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলায় বাস ও ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে চালক ও তাঁর সহকারী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো ২০ বাসযাত্রী।

শনিবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে উপজেলার বগুড়া-নগরবাড়ী সড়কের ভুইয়াগাতী এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন রায়গঞ্জ উপজেলার শ্যামনাই গ্রামের জসিম উদ্দিনের ছেলে ট্রাকচালক শরিফ ফকির (৩৫) এবং একই গ্রামের ধুকু মিয়ার ছেলে চালকের সহকারী রফিকুল ইসলাম (৩০)।

চুয়াডাঙ্গা: চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার আলোকদিয়া বাজারে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় এক ধানকল মালিক নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন দুই মোটরসাইকেল আরোহী। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার রাত ১০টার দিকে।