নামাজ ফরজ ইবাদত। আল্লাহ তাআলা মানুষের জন্য প্রতিদিন ৫ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করেছেন। ঈমান গ্রহণ করার পর মানুষের ওপর প্রধান ইবাদত হলো নামাজ আদায় করা।
আবার সাদকা বা দান অনেক গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। এ ইবাদত দুনিয়াতে যেমন কার্যকরী, পরকালে তা নাজাতের জন্য আরো বেশি উপকারি।
এ কারণেই প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাদিসে পাকে নামাজ ও সাদকা কবুল না হওয়া প্রসঙ্গে সতর্ক করতে ছোট্ট একটি হাদিস বর্ণনা করেছেন। যাতে মানুষ বিষয় দুটির ব্যাপারে যথাযথ সতর্কতা অবলম্বন করে। হাদিসে এসেছে-
হজরত ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘পবিত্রতা ছাড়া নামাজ কবুল হয় না। আর খেয়ানতের মাল দ্বারা সাদকা কবুল হয় না।’ (তিরমিজি)
উল্লেখিত হাদিসে নামাজের ব্যাপারে বলা হয়েছে যে-
পবিত্রতা ছাড়া নামাজ কবুল হয় না। এ পবিত্রতা বলতে সব ধরনের অপবিত্রতাকে বুঝানো হয়েছে। যে পবিত্রতা অর্জনের জন্য গোসল করা আবশ্যক, তাও এ পবিত্রতার জন্য শমিল। আবার যার অজু নাই, তাও এ পবিত্রতায় শামিল। সুতরাং অজু হোক আর গোসল হোক নামাজের জন্য সার্বিক পবিত্র অর্জন জরুরি।
এ কারণেই নামাজের জন্য শরীর, পোশাক, নামাজের স্থান পবিত্র হওয়া জরুরি। শুধু তাই নয়, নামাজ কবুলে হালাল আয়ে অর্জিত সম্পদ দ্বারা জীবিকা নির্বাহ করাও আবশ্যক। কেননা ইবাদত কবুলের জন্য হালাল আয়-রোজগারকে শর্ত করা হয়েছে।
সাদকার ব্যাপারে বলা হয়েছে
আবার দান-সাদকা অনেক গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। দান-সাদকায় আল্লাহ তাআলা দুনিয়ায় মানুষের যাবতীয় বিপদ-আপদ এমনি রোগ থেকেও মুক্তি দান করেন। আর পরকালের চিরস্থায়ী জীবনের জন্য দান-সাদকার উপকারিতাও সীমাহীন।
এ কারণেই কষ্টার্জিত আয় থেকে দান-সাদকা করতে হবে। যদিও খেয়ানতের মাধ্যমে অর্জিত ধন-সম্পদ দ্বারা দান-সাদকা কবুল হবে না বলে হাদিসে এসেছে। তথাপিও খেয়ানতের মাল, গনিমতের মাল, চুরির মালসহ যাবতীয় অন্যায় পন্থায় অর্জিত ধন-সম্পদ দ্বারা দান-সাদকায় কোনো উপকার নেই। আর তা আল্লাহর দরবারে কবুলও হবে না।
সুতরাং মুসলিম উম্মাহর উচিত
নামাজের আগে অজু, গোসলের মাধ্যমে পবিত্রতা অর্জন করা; নামাজের স্থান পবিত্র করা; নামাজে পরিধেয় পোশাক পবিত্র রাখা সর্বোপরি হালাল খাদ্য-দ্রব্য খাওয়ার মাধ্যমে মানুষের গুরুত্বপূর্ণ প্রধান ইবাদত নামাজের প্রতি যত্নবান হওয়া জরুরি।
আবার দান-সাদকার বেলায় অনেক ধন-সম্পদ দানে কোনো উপকার নেই, যদি দান করা অর্থ অবৈধ উপায় অর্জিত হয়। তাই কষ্টের সামান্য অর্থ অবৈধ অঢেল সম্পদের তুলনায় উত্তম। মুমিন মুসলমানের উচিত কষ্টার্জিত হালাল আয়-রোজগার থেকে স্বচ্ছল ও অস্বচ্ছল উভয় অবস্থায় দান করা।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে নামাজের জন্য ভালোভাবে পবিত্রতা অর্জন করার এবং দান-সাদকায় হালাল উপায়ে অর্জিত অর্থ থেকে দান করার তাওফিক দান করুন। হাদিসের ওপর যথাযথ আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।