পদ্মাসেতুর খরচ বাড়ল আরও ১৪শ কোটি

নির্মাণাধীন পদ্মা সেতু প্রকল্পের খরচ আবার বাড়ছে। ভূমি অধিগ্রহণের কারণে বাড়তি এক হাজার চারশ কোটি টাকা খরচ করতে হচ্ছে সরকারকে। তৃতীয়বারের মতো বাড়ানোয় এখন সেতুর ব্যয় ছাড়িয়েছে ৩০ হাজার কোটি টাকা।
নদীর গতিপথ পরিবর্তন ও ডুবোচর জেগে ওঠায় এ ব্যয় বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে সেতু বিভাগ। এটিসহ ১৮ হাজার কোটি টাকার মোট ১৫টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার শেরেবাংলা নগর এনইসি সম্মেলনকক্ষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি-একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সভায় এ প্রকল্পগুলো অনুমোদন দেওয়া হয়।

এসব প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১৮ হাজার ৩৭২ কোটি ২৪ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন করা হবে ১১ হাজার ২২৪ কোটি ৮২ লাখ টাকা, সংস্থার নিজস্ব অর্থায়নে ব্যয় করা হবে ৫৮৮ কোটি ৪৬ লাখ টাকা এবং প্রকল্প সাহায্য ছয় হাজার ৫৫৪ কোটি ৯৬ লাখ টাকা।

পরিকল্পনা কমিশন জানায়, পদ্মা সেতু প্রকল্প শুরু হতে দেরি হওয়ায় মূল নকশার চিহ্নিত স্থানে চর জেগে ওঠে ও বসতি তৈরি হয়। কৃষিকাজ শুরু করেন অনেকে। তাই নতুন করে প্রায় এক হাজার দুইশ হেক্টর জমি অধিগ্রহণ প্রয়োজন। এটি করা না হলে বাঁধার মুখে পড়বে ড্রেজিং।

তাই জমি অধিগ্রহণ প্রকল্পটি আলাদা করে একনেকে উপস্থাপন করা হয়েছে। অন্যদিকে, প্রায় সাড়ে চার হাজার কোটি টাকার ই-পাসপোর্ট প্রকল্প নিয়ে আলোচনা হয় একনেক সভায়।

২০১০ সালের আগে পদ্মাসেতু নির্মাণের সম্ভাব্য যত ব্যয় ধরা হয়েছিল, কাজ করতে গিয়ে তা বেড়ে যাচ্ছে বারবার। গত ডিসেম্বরে দ্বিতীয়বারের মতো এই সেতুর ব্যয় বাড়ানো হয় আট হাজার কোটি টাকা। ফলে তখনকার হিসাবে পদ্মা সেতুর ব্যয় দাঁড়ায় সব মিলিয়ে ২৮ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকায়।

২০০৭ সালে। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকার ওই বছরের ২৮ আগস্ট ১০ হাজার ১৬১ কোটি টাকার প্রকল্প পাস করেছিল। পরে আওয়ামী লীগ সরকার এসে রেলপথ সংযুক্ত করে ২০১১ সালের ১১ জানুয়ারি প্রথম দফায় সেতুর ব্যয় সংশোধন করে। তখন এর ব্যয় ধরা হয়েছিল ২০ হাজার ৫০৭ কোটি টাকা।

অবশ্য দ্বিতীয় ও তৃতীয়বার ব্যয় বাড়ানোর পরও মূল সেতুর খরচ বাড়েনি। দেশের সবচেয়ে বড় সেতু প্রকল্পে মূল সেতু নির্মাণ হবে আগের মতোই ১২ হাজার ১৩৩ কোটি টাকায়।

একনেক সভাশেষে প্রকল্পগুলো নিয়ে সাংবাদিকদের পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, আজকের সভায় ১৫টি (নতুন ও সংশোধিত) প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে মোট ব্যয় হবে ১৮ হাজার ৩৭২ কোটি ২৪ লাখ টাকা।

এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন করা হবে ১১ হাজার ২২৪ কোটি ৮২ লাখ টাকা, সংস্থার নিজস্ব অর্থায়নে ব্যয় করা হবে ৫৮৮ কোটি ৪৬ লাখ টাকা এবং প্রকল্প সাহায্য ছয় হাজার ৫৫৪ কোটি ৯৬ লাখ টাকা।