বাংলার রাজনীতিতে নতুন চমক আবার মাঠে পঞ্চ পাণ্ডব!

সরকারকে চাপে ফেলতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে জোর লবিং করছেন বাংলাদেশের পাঁচজন বিশিষ্ট নাগরিক। গত একমাসে এই পাঁচজনই দেশে বিদেশে বিভিন্ন পর্যায়ের বিদেশি কূটনীতিকদের সাথে কথা বলছেন। অংশগ্রহণমূলক অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সরকারকে বাধ্য করার কৌশল নিয়ে কথা বলছেন। বিদেশি দূতাবাস গুলোতে সরকারের বিরুদ্ধে দীর্ঘ নালিশের তালিকা উপস্থাপন করছেন। এই পাঁচজনকে বলা হচ্ছে পঞ্চ পাণ্ডব। এই পাঁচ বিশিষ্ট নাগরিক হলেন শান্তিতে নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহম্মদ ইউনুস, বিশিষ্ট আইনজীবী এবং গণফোরাম নেতা ড. কামাল হোসেন, প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান, ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম এবং সিপিডির সম্মানিত ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। এই পঞ্চ পাণ্ডবই ছিলেন ২০০৭ সালের ওয়ান ইলেভেনের মূল পরিকল্পনাকারী। এখন তাদের তৎপরতায় সরকারও চোখ রাখছে। সম্প্রতি এদের তৎপরতায় ইঙ্গিত করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘ওয়ান ইলেভেনের কুশীলবরা এখন তৎপর।’

মূলত তিনটি বিষয় নিয়ে এরা সরকারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কথা বলছেন:

১. তাদের ভাষায় ‘সরকারের মাদক বিরোধী অভিযানের নামে বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড’।

২. আগামী নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক এবং অবাধ করার ক্ষেত্রে বাধা।

৩. বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে দলীয়করণের অভিযোগ।

গত দুইমাসে এরা পাঁচজনই দেশে-বিদেশে সরকারের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলেছেন। দুজন সম্পাদকের একজন কিছুদিন আগে একটি সাংবাদিক দলের সঙ্গে ভারত সফর করেন। যেখানে তিনি দলের বাইরে গিয়ে ভারতের থিংক ট্যাংকদের সঙ্গে একান্ত বৈঠক করেন। একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে যে, সেখানে তিনি আগামী নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা এবং উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। অন্য একজন সম্পাদক সম্প্রতি ঢাকাস্থ মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠক করে ‘বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড’ নিয়ে তাঁর উদ্বেগ জানিয়েছেন। তিনি মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে সুশাসন ও জবাবদিহিতামূলক শাসনের অভাবের কথা বলেছেন।

মে মাস জুড়েই নোবেল জয়ী ড. মুহম্মদ ইউনুস ফ্রান্স, ইতালিসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশ সফর করেন। সেখানে অন্তত দুটি সেমিনারে তিনি বর্তমান সরকার জনপ্রতিনিধিত্বশীল নয় বলে দাবি করেছেন। আগামী জাতীয় নির্বাচনে যেন জন আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটে সেজন্য তিনি ইউরোপীয় ইউনিয়নের শক্ত ভূমিকা প্রত্যাশা করেছেন।

ড. কামাল হোসেন এখন যেকোনো মূল্যে সরকার হটানোর জন্য আদাজল খেয়ে লেগেছেন। একাধিক সূত্র বলছে, জাতিসংঘ মহাসচিব যেন বাংলাদেশে না আসে সেজন্য ড. কামাল ব্যক্তিগত অনুরোধও করেছিলেন। কিন্তু সেই অনুরোধ কাজে লাগেনি। এছাড়াও ড. কামাল হোসেন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কমিশনে বাংলাদেশে মাদক বিরোধী অভিযানের বিরুদ্ধে চিঠি দিয়েছেন।

ড: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যও সুশীল সমাজের প্রতিনিধি হিসেবে দূতাবাসে দূতাবাসে যাচ্ছেন। সরকার যেন নির্বাচনে সবাইকে একটা স্পেস দেয় সেজন্য তিনি কূটনীতিকদের চাপ সৃষ্টির পরামর্শও দিচ্ছেন।

একাধিক সূত্র বলছে, পঞ্চ পাণ্ডবের মূল উদ্দেশ্য এখনো স্পষ্ট নয়। তবে, তাদের কার্যক্রম যে সরকারকে চাপে ফেলার জন্যই, তা নিয়ে কোন সংশয় নেই।

বাংলা ইনসাইডার/জেডএ