হাসপাতালে লিঙ্গ পরিবর্তন করতে গিয়ে বন্ধুত্ব-প্রেম, অতঃপর…

দু’জনেই রুপান্তরকামী। মুম্বাইয়ে একটি হাসপাতালে লিঙ্গ পরিবর্তনের জন্য অস্ত্রোপচার করাতে গিয়েই হয় প্রথম পরিচয়। সেখান থেকে বন্ধুত্ব এবং ধীরে ধীরে প্রেম। আইনি বাধা পেরিয়ে এখন দু’জনে বিয়ের অপেক্ষায়। আর প্রেম যে জাতি, শ্রেণি ও বর্ণ নির্বিশেষ সবার জীবনে আসে সেটাও প্রমাণ করলেন রুপান্তরকামী এই যুগল।

আনন্দবাজার পত্রিকার খবর, বছর তিনেক আগের কথা। মুম্বইয়ের ওই হাসপাতালে প্রথম আলাপ আরভ আপ্পুকুট্টান এবং সুকন্যা কৃষ্ণার। ৪৬ বছরের আরভ শরীরে নারী হলেও লিঙ্গ পরিবর্তন করে পুরুষ হতে চান। আর সুকন্যা ঠিক তার উল্টো। আরভ জানিয়েছেন, হাসপাতালের ওয়েটিং রুমে তাঁদের প্রথম দেখা। সমাজ ও পরিবারের চোখ রাঙানি এড়িয়ে তখন দু’জনেই এসেছেন তাঁদের স্বপ্নকে বাস্তব রূপ দিতে। ফলে চূড়ান্ত মানসিক টানাপড়েনে ভুগছেন দু’জনেই। সেখান থেকেই পরস্পরের প্রতি আকর্ষণ জন্মায়। তাঁর কথায়, ‘‘অস্ত্রোপচারের জন্য হাসপাতালে নিয়মিত যেতে হত। সেখানেই আলাপ সুকন্যার সঙ্গে। আমরা একে অপরকে পছন্দ করতাম।’’

আইনি পথেই নিজেদের বিয়েকে স্বীকৃতি দিতে চান আরভ এবং সুকন্যা। তার আগে সরকারিভাবে কাগজে-কলমে অনেক বাধা পেরোতে হবে বলে জানিয়েছেন ২১ বছর বয়সী সুকন্যা। সব সমস্যা মিটে গেলে কেরলে গিয়েই সাত পাকে বাঁধা পড়তে চান তাঁরা।

সুকন্যার কথায়, ‘‘সমাজে রুপান্তরকামীরা বরাবরই ব্রাত্য। বঞ্চিত হতে হয় তৃতীয় লিঙ্গদেরও। এঁদের মধ্যে বেশিরভাগকেই ভিক্ষাবৃত্তি করতে হয়। কেউ আবার জড়িয়ে পড়েন দেহব্যবসায়। সন্তান নিয়েও রূপান্তরকামী দম্পতিদের অনেক সমস্যার মুখে পড়তে হয়।’’ তবে বিয়ের পর সন্তান দত্তক নিতে চান বলে জানিয়েছেন সুকন্যা। তিনি জানান, ‘‘আমরা আমাদের প্রেমকে স্বীকৃতি দিয়ে সমাজের কাছে একটা দৃষ্টান্ত তুলে ধরতে চাই। সবাইকে শোনাতে চাই আমাদের গল্প। এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা।’’