নতুন শাড়ি পরেননি, সেমাই–মিষ্টি খেয়েছেন

তৃতীয়বারের মতো কারাগারে ঈদ কাটালেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। গত ফেব্রুয়ারিতে গ্রেপ্তার হওয়ার পর এই প্রথম একত্রে পরিবারের ২০ সদস্যের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পেয়েছেন তিনি।

আজ শনিবার বেলা সোয়া দুইটায় খালেদা জিয়ার পরিবারের ২০ সদস্য কারাগারে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ পান। খালেদা জিয়ার সঙ্গে প্রায় দেড় ঘণ্টা সময় কাটিয়ে বিকেল চারটার দিকে কারাগার থেকে বেরিয়ে আসেন তাঁরা। পরে পরিবারের কয়েকজন সদস্য প্রথম আলোকে বলেন, অনেক স্বজনকে একসঙ্গে পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন খালেদা জিয়া।
২০ জন স্বজনের মধ্যে ছিলেন বড় বোন সেলিমা ইসলাম, ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার, তাঁর স্ত্রী কানিজ ফাতেমা, ছেলে অভিক এস্কান্দার, খালেদার জিয়ার একান্ত সচিব এ বি এম আবদুস সাত্তার প্রমুখ।
এক স্বজন বলেন, তাঁরা খালেদা জিয়ার জন্য তাঁর পছন্দের মিষ্টি এবং সেমাই রান্না করে নিয়ে যান। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মিলে মিষ্টি-সেমাই খান তিনি। তবে শারীরিক অসুস্থতার কারণে ভালো করে খেতে পারেননি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে খালেদা জিয়ার একজন স্বজন প্রথম আলোকে বলেন, কারাগারে প্রবেশের পর স্বজনেরা খালেদা জিয়াকে দেখেই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। খালেদা জিয়াও আবেগ ধরে রাখতে পারেননি। তাঁর স্বাস্থ্যের ভগ্নদশা দেখে সবাই কান্নায় ভেঙে পড়েন। এ সময় আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
ওই স্বজন বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের শারীরিক অবস্থা ভালো নয়। তিনি কারও সাহায্য ছাড়া দাঁড়াতে পারেন না। তাঁর মনটাও ভালো নেই। ঈদের দিন তিনি নতুন শাড়ি পরেননি। স্বজনেরা যে যাঁর মতো খালেদা জিয়ার পছন্দের খাবার রান্না করে নিয়ে গিয়েছিলেন। সেই খাবার সবাই একত্রে খেয়েছেন। তবে খালেদা জিয়া খেয়েছেন সামান্য।
নতুন শাড়ি না পরার কারণ জানতে চাইলে ওই স্বজন বলেন, ‘নির্যাতন এবং কারাবন্দী অবস্থায় নতুন শাড়ি পরে আনন্দ করার মনোভাব থাকে না।’ তিনি আরও বলেন, নিকটাত্মীয়দের দেখে একপর্যায়ে খালেদা জিয়ার মন কিছুটা ভালো হয়। তিনি সবার খোঁজখবর নেন।
পরিবারের সদস্যরা জানান, দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা নেতারা দুপুরে কারাফটকে গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করার না পাওয়ার বিষয়টি খালেদা জিয়া শুনেছেন। এ জন্য হতাশা প্রকাশ করেছেন। তিনি পরিবারের সদস্যদের মাধ্যমে দেশবাসী, দলের জ্যেষ্ঠ নেতাসহ সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন এবং দোয়া চেয়েছেন।
কারাগারে খালেদা জিয়ার সঙ্গে তাঁর গৃহপরিচারিকা ফাতেমাও আছেন। স্বজনেরা জানিয়েছেন, প্রয়োজন হলে ফাতেমার সেবা নিতে পারছেন খালেদা জিয়া।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত হয়ে গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন বিএনপির চেয়ারপারসন। এর আগে ২০০৭ ও ২০০৮ সালের দিকে সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে দুটি ঈদ কারাগারে কাটাতে হয়েছে খালেদা জিয়াকে। তখন তিনি জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায় ঘোষিত সাবজেলে ছিলেন।