‘‍বিয়ের আগে সহবাস করতে কোনো আপত্তি নেই’

বিয়ের আগে সহবাস! আমরা যতই আধুনিক হই না কেন, এখনও লিভ ইন রিলেশনশিপ শুনলেই চোখ কপালে উঠে যায় অনেকেরই। এবার সেই লিভ ইন রিলেশনশিপ নিয়েই ‘জি বাংলা সিনেমা অরিজিনালস’-এ সুদেষ্ণা রায় ও অভিজিত গুহর নতুন ছবি ‘চলো লেটস লিভ’।

ছবির মুখ্য চরিত্র রাহীর ভূমিকায় দেখা যাবে সায়নী ঘোষকে। ছবির প্রিমিয়ারের দিন ভারতীয় গণমাধ্যম সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল-এর মুখোমুখি হয়েছেন এ অভিনেত্রী।

ছবির প্রেক্ষাপট কি শুধুই লিভ ইন রিলেশনশিপ? প্রতিবেদকের এমন প্রশ্নের জবাবে সায়নী জানান, লিভ ইন রিলেশনশিপকে ঠিক কীভাবে দেখা হয় এই মধ্যবিত্ত বাঙালি সমাজে, তাই উঠে এসেছে চিত্রনাট্যে।

আমরা যতই আধুনিক হই না কেন, যদি আমাদের বাবা-মাকে গিয়ে বলি একটি ছেলের সঙ্গে আমি লিভ ইন করতে চাই, ভুরুতে ভাঁজ পড়বেই। কিন্তু বিয়ে করা আর লিভ ইনের মধ্যে খুব একটা পার্থক্য আমি দেখি না, কারণ দুটোই তো সেই একসঙ্গে থাকা।

যার সঙ্গে আমি সারাজীবন থাকার কথা ভাবছি, তাঁকে ভাল করে জেনে নেওয়া বা বুঝে নেওয়াটা খুব জরুরি। এই ছবির চিত্রনাট্যেও সেরকমই একটা সম্পর্ক তুলে আনা হয়েছে। এবং তারফলে কী কী ঘটছে তাঁদের জীবনে, তা নিয়েই এগিয়েছে গল্প।

পাশাপাশি সাবপ্লটে আবার এক নিম্নমধ্যবিত্ত মেয়ের গল্পও বলা হচ্ছে। কন্যাসন্তান জন্ম দেওয়ার ফলে তাঁকে পরিবারের তরফ থেকে কী কী সহ্য করতে হচ্ছে, তাও দেখানো হয়েছে এই ছবিতে।

রাহী চরিত্রটা কী ধরনের? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রাহী মফস্বলের মেয়ে। তার বয়ফ্রেন্ড অর্জুন। দু’জনে বিয়ে করতে চায়। কিন্তু বিয়ের আগে রাহী অর্জুনকে লিভ ইনের পরামর্শ দেয়। মফস্বলে থাকে বলে যে লিভ ইন শুনলে চমকে উঠবে, এমন মেয়ে কিন্ত নয় রাহী।

এখানে অর্জুনের থেকেও লিভ ইন-এর ইচ্ছেটা যেন রাহীরই বেশি। লিভ ইনটা একটা সাধারণ সম্পর্ক বলেই মনে করে সে। লিভ ইন মানেই যে গদগদ প্রেম, এরকমটা কিন্তু নয়।

এই ধরনের বিষয়বস্তু নিয়ে কাজ হচ্ছে টলিউডে, বাংলা ছবি কি তাহলে সাবালক হচ্ছে? জবাবে সায়নী বলেন, দেখো, বাংলা ছবি কতটা সাবালক হচ্ছে তা আমি বলতে পারব না। কিন্তু ‘জি বাংলা সিনেমা অরিজিনালস’-এ কিন্তু আমরা অনেক সাহসী ছবি দেখতে পাচ্ছি। আর বিশেষ করে রানাদা, সুদেষ্ণাদি কিন্তু বরাবরই এ ধরনের সামাজিক বিষয় নিয়ে ছবি করে থাকেন।

আমি এর আগে ‘একলা চলো’, ‘আবার একলা চলো’- তে অভিনয় করেছি। যেখানে সিঙ্গল মাদারহুডের মতো বিষয়ে কাজ করা হয়েছে। সবসময়ই নতুন বিষয়বস্তু নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করতে দেখা যায় রানাদা, সুদেষ্ণাদিকে। যেটা খুবই ভালো। কিন্তু বাংলা ছবিতে এখনও মনে হয় গল্প নিয়ে এতটা এক্সপেরিমেন্ট এখনও খুব একটা করা হয় না।

তোমার ব্যক্তিগত জীবনে বিয়ের আগে সহবাসে মত আছে তোমার? প্রতিবেদকের এমন প্রশ্নের জবাবে সায়নী জানান, পুরোপুরি মত আছে। আমার কাছে বিয়ে করা আর ঘর করা একই। আর এখন পতি পরমেশ্বর কনসেপ্টটা পুরো চেঞ্জ হয়ে গিয়েছে।যার সঙ্গে সারাজীবন থাকার পরিকল্পনা করছি, তাঁকে যদি আগে থেকে জেনে নেওয়া যায় তাহলে ক্ষতি কী!

কারণ বিয়ের পর যদি মনে হয়, তাহলে সেটা একদম শেষপর্যায় হয়ে যায়। তাই আগেভাগে জেনে নেওয়াতে কোন আপত্তি নেই। বিশেষ করে আমার মতো যারা নিজেকে নিয়ে আপ্লুত, তাদের তো আরওই দেখে নেওয়া উচিত। কারণ বিয়ে শুধু মাত্র একটা ইনস্টিটিউশন, এর বাইরে বিয়ে আর লিভ ইনের মধ্যে কোনও পার্থক্য আমি দেখি না।