‘রাজলক্ষীর চরিত্রে কাজ করাটা ছিলো চ্যালেঞ্জিং’

টিভি ও চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় অভিনেত্রী জ্যোতিকা জ্যোতি। যদিও বানিজ্যিক নয়, একটু ভিন্নধর্মী ছবিতেই তাকে এ যাবৎ বেশি দেখা গেছে। এদিকে জ্যোতি গত দুই বছর ধরে ছোট পর্দায় কাজ একেবারেই কমিয়ে দিয়েছেন। আর এটা করেছেন বড় পর্দায় কিছু ভালো কাজের জন্যই। গতানুগতিক ধারার কাজ আর তিনি করতে চান না। এ কারণেই জ্যোতির এমন সিদ্ধান্ত।
বড় পর্দায় ব্যস্ত হওয়ার পর থেকে জ্যোতি এরই মধ্যে দুটি ছবির কাজ শেষ করেছেন। আর হাতেগোনা মানসম্পন্ন কয়েকটি নাটকে অভিনয় করেছেন। চলতি বছরই তিনি শেষ করেছেন কলকাতার ‘রাজলক্ষী শ্রীকান্ত’ ছবির কাজ। প্রদীপ্ত ভট্টাচার্য পরিচালিত এ ছবিতে জ্যোতি অভিনয় করেছেন রাজলক্ষী চরিত্রে। আর শ্রীকান্তের চরিত্রে দেখা যাবে কলকাতার জনপ্রিয় অভিনেতা হৃতিক চক্রবর্তীকে। ছবিটি চলতি বছরই মুক্তি পাওয়ার কথা রয়েছে। এ ছবি প্রসঙ্গে জ্যোতি বলেন, কর্মাশিয়াল হোক আর আর্টফিল্ম, আমি ভালো চলচ্চিত্রে অভিনয় করতে চাই। গল্প, নির্মাণশৈলি, কাস্টিংয়ের ওপর আসলে অনেক কিছু নির্ভর করে। তাই আমি একটু বেছে ছবির কাজ করছি। ‘রাজলক্ষী শ্রীকান্ত’ একটি ঐতিহাসিক গল্পের ছবি। এ ছবিতে রাজলক্ষীর চরিত্রে কাজ করাটা ছিলো চ্যালেঞ্জিং। আমি এর জন্য ব্যাপক প্রস্তুতিও নিয়েছিলাম। আমি আমার পক্ষ থেকে শতভাগ উজার করেই কাজ করেছি এতে। বাকিটা দর্শক বিচার করবেন। জ্যোতি এ ছবির পর পরই কাজ শেষ করেছেন ‘মায়া- দ্য লস্ট মাদার’ ছবির। মাসুদ পথিক পরিচালিত সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত এ ছবির নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছেন তিনি। তার বিপরীতে রয়েছেন অভিনেতা প্রাণ রায়। এটিও মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে। জ্যোতি বলেন, ছবিটি নিয়ে আমি আশাবাদী। গ্রামের একজন তরুণীর জীবনযুদ্ধের কথা উঠে আসবে এ ছবির মাধ্যমে। ছবিটি করতে গিয়ে আমি যেন সত্যিকারের মায়া বনে গিয়েছিলাম। গ্রামের তরুণীর সাজজ্জা, জীবনযাত্রা এ সব কিছুতে অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছিলাম কিছুদিন। আমি মনপ্রাণ দিয়ে এ ছবির কাজটি করেছি। ছবির গল্প, নির্মাণশৈলি সবই অসাধারণ হয়েছে। এ ছবিটিও দর্শকদের ভালো লাগবে বলে বিশ্বাস করি। সম্প্রতি জ্যোতি কাজ শেষ করেছেন একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের। এর নাম ‘ফার্নিচার’। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জ্যোতি বলেন, মজার ব্যাপার হলো ছবিটিতে আমার বোনের ছেলে সোনাই অভিনয় করেছে আমার সঙ্গে। এটা মজার অভিজ্ঞতা। আমি ছাড়া আমার পরিবারের মধ্যে কেউ কোনোদিন অভিনয় করেনি। টিপিক্যাল ভাবনার কনজার্ভেটিভ পরিবার থেকে অভিনয় ক্যারিয়ার বেছে নেওয়া ছিল আমার জন্য এক মহাযুদ্ধ। এবার আমার কাতারে পরিবারের আরেকজন এলো। ‘ফার্নিচার’ শর্টফিল্মে সোনাইয়ের চরিত্রের নাম মানিক। এই ফিল্মটি সত্যজিৎ রায় ফিল্ম ইন্সটিটিউটের প্রোডাকশন। প্রথমেই আন্তর্জাতিক একটি সিনেমায় অভিনয় করা, ফ্লাইটে গিয়ে অন্যদেশে শুটিং করা, এমন একটা ইউনিটে কাজ করা যার সদস্যরা একেক দেশের, একেক ভাষাভাষী, যাদের সঙ্গে সোনাইয়ের খুব স্মার্টলি এডজাস্ট করা, রুপিতে পেমেন্ট পাওয়া-সবকিছু ৬ বছরের সোনাইকে যেন আরও আত্মবিশ্বাসী করে তুলেছে। ফেসবুকে ছবি দেখে পরিচালক তাকে পছন্দ করেছে। আমরা না করেছিলাম। কিন্তু সে কোনোদিন ক্যামেরার সামনে যায়নি, যদি ফেল করে। বাট পরিচালক ছিলেন নাছোড়বান্দা। কিন্তু সোনাই এত ভালো অভিনয় করেছে যে আমি খুব অবাক আর পুরো ইউনিট মুগ্ধ! ভবিষ্যত কি হবে জানিনা, বাট অভিনেতা হিসেবে আমি সোনাইয়ের ফ্যান হয়ে গেলাম।