গত বছরের ঈদ থেকেই দেশি চলচ্চিত্রের নতুন জুটি হিসেবে দর্শকমন কাড়ছেন শাকিব-বুবলী। আসন্ন ঈদে সুপার পাওয়ার নিয়ে বড় পর্দায় ঈদ ধামাকা হয়ে আসছেন এ জুটি। ঈদে দর্শক দেখতে পাবেন এ জুটির ‘সুপার হিরো’ ছবিতে তাদের সুপার শক্তি প্রদর্শন। তাহলে তারা সুপার শক্তি দিয়ে কি ঈদে আকাশে উড়বেন, বাতাস কাঁপাবেন— এ প্রশ্নে স্মিত হেসে ছবির প্রযোজক তাপসী ঠাকুর বলেন, না, মোটেও তা নয়। প্রত্যেক মানুষের মধ্যে একটি সুপার পাওয়ার থাকে। বিশেষ সময়ে তা প্রকাশ হয়। এ ছবিতে মানুষের কল্যাণে শাকিব তার সর্বশক্তি নিয়োগ করেন। বুবলী কোনো এক অশুভ শক্তির চক্রান্তে দেশবিরোধী কাজে লিপ্ত হন। পরে ভুল বুঝতে পেরে শাকিবের পাশে এসে দাঁড়ান। অসহায় মানুষের কল্যাণে শাকিবের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সুপারওমেনের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। ছবিতে তাকে অ্যাকশন গার্ল হিসেবে দেখা যাবে। তাপসী ঠাকুর বলেন, একেবারেই ভিন্নধর্মী মজার গল্পে নির্মিত হয়েছে ‘সুপার হিরো’। এ দেশে এ ধরনের গল্পের ছবি এটিই প্রথম। তার কথায়, ‘আমার প্রযোজিত সাত নম্বর এই ছবিতে আমি প্রথমবার বিদেশি লোকেশন ব্যবহার করেছি। আর প্রথমবার এ কাজ করতে গিয়ে অজ্ঞতার কারণে কিছু নিয়মকানুন বুঝতে পারিনি। আর এ অজ্ঞতা পুজিঁ করে একটি চক্র মনোপলি ব্যবসার চেষ্টায় আমার ছবিটি ঈদে আটকে দেওয়ার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছিল। এমন একটি আন্তর্জাতিক মানের ছবি আটকে দেওয়ার হীন চেষ্টা করে শুধু আমার নয়, দেশ আর দেশি ছবির ক্ষতির পথ বেছে নিয়েছিল তারা। দর্শকের কাছে অনুরোধ— আপনারা সিনেমা হলে গিয়ে দেশের ভালো ছবি দেখুন। এ দেশের ছবি দেশ-বিদেশে আবার মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠা করুন।’ ছবির নায়ক শাকিব খান বলেন, ‘সুপার হিরো হলো আমার অভিনয় জীবনের অন্যতম একটি অসাধারণ ছবি। দুঃখের বিষয়, এতদিন দেখছিলাম আমদানিকৃত ও যৌথ প্রযোজনার ছবি এ দেশে প্রদর্শন বন্ধে একটি চক্র নানা চক্রান্তে মেতে ছিল। এবার তারা খোঁড়া যুক্তিতে দেশীয় সমৃদ্ধ ছবি ঈদ উৎসবে আটকে দেওয়ার পাঁয়তারা করেছে। এ ধরনের চক্রান্ত দেশি চলচ্চিত্রশিল্প বিনাশের জন্য যথেষ্ট।’ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক আওলাদ হোসেন উজ্জ্বল শাকিব-বুবলীর সুপার হিরোকে অহেতুক আটকে দেওয়ার হীন চেষ্টার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘এতদিন যে অশুভ শক্তি আমদানিকৃত ও যৌথ প্রযোজানার ছবির ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে এ দেশের সিনেমা হল বন্ধ করে দিয়ে শিল্পটির বিনাশের খেলায় মেতে ছিল তারা এবার দেশীয় সম্ভাব্য ব্যবসাসফল ছবি আটকে দেওয়ার চক্রান্তে মেতেছে। এর সাম্প্রতিক উদাহরণ হলো গত পয়লা বৈশাখ একটি ছবিকে জোর করে ব্যবসাসফল করতে আমদানিকৃত ও যৌথ প্রযোজনার ছবি আটকে দেওয়া হলো। কিন্তু সেই ছবিটি দেশি একটি গড়পড়তা মানের ছবির কাছে মার খেল। এবারও ঈদ উৎসবে যাতে আমদানিকৃত ও যৌথ প্রযোজনার ছবি চলতে না পারে সেজন্য ষড়যন্ত্রের জাল পাতা হলো। এখানেই ষড়যন্ত্রের শেষ নয়। শেষ পর্যন্ত স্থানীয়ভাবে নির্মিত মানসম্মত ছবি সুপার হিরো যাতে মুক্তি পেতে না পারে সেজন্য নির্লজ্জ আক্রমণ করা হলো; যা সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক। এ চক্রটির অপকৌশলের কারণে দেশের ১ হাজার ২৩৫টি সিনেমা হলের মধ্যে ১ হাজারের মতো সিনেমা হল বন্ধ হয়ে গেছে। তার পরও তারা একের পর এক অযৌক্তিক প্রটেকশনের আশ্রয় নেওয়ার মতো হাস্যাস্পদ অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আমার বিশ্বাস, এবারের ঈদেও তাদের কূটকৌশল ব্যর্থ হবে এবং শাকিব-বুবলীর সুপার হিরো সফল হবে। সবার মনে রাখা দরকার, চলচ্চিত্রশিল্প বাঁচাতে ভালো ছবিকে উৎসাহ দেওয়ার বিকল্প নেই।’
সুপার হিরো ছবিটি পরিচালনা করেছেন আশিকুর রহমান।
- ব্রেকিংবিডিনিউজ২৪ / ০৯ জুন ২০১৮ / তানজিল আহমেদ