আমি সেক্স সিম্বল নাকি’ ভালো অভিনেত্রী

ওয়েব সিরিজ ‘দুপুর ঠাকুরপো লাস্যময়ী উমা বৌদি চরিত্রে সাড়া জাগিয়েছিলেন স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়। তার শরীরী আবেদনে মুগ্ধ হয়েছিলেন দর্শকেরা। গতবারের তুমুল সাফল্যের পর আবার শুরু হয়েছে ‘দুপুর ঠাকুরপো’ সিরিজের সেকেন্ড ইনিংস।
কিন্তু উমা বৌদির চরিত্রে এবার আর থাকছেন না স্বস্তিকা। উমা বৌদি না থাকলেও বৌদি কিন্তু আছেন। ‘উমা’ বৌদি নেই, আছেন ‘ঝুমা’ বৌদি। প্রথমে ঝুমা বৌদির চরিত্রে দেখা যাওয়ার কথা ছিল শ্রীলেখা মিত্রকে। সেটা নিজেই জানিয়েছিলেন। পরে হঠাৎ জানা যায় ঝুমা বৌদির বেশে ঠাকুরপোদের জন্য হাজির হবেন মোনালিসা, শ্রীলেখা নন।
)
ভারতীয় এক পত্রিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শ্রীলেখা জানান, আমি সত্যিই জানি না। আমাকে অফিশিয়ালি কেউ কিছু জানায়নি, কেন আমি করছি না। শুটিং এর আগে প্রযোজনা সংস্থা ‘‌টিভিওয়ালা মিডিয়া’‌ এসে খবর দিল আমি করছি না!‌ তার আগে অবধি আমি জানতামই না যে আমাকে মানায় কিনা সেটা দেখার জন্য ‘লুক টেস্ট‌’‌ হচ্ছে, তাহলে আমি নিজেকে গিনিপিগ বা ‘সাবজেক্ট‌’‌ হতে দিতাম না। আমাকে ডাকা হয়েছে যখন, তখন আমাকে মানায় এমন পোশাক তো দিতে হবে। পোশাকের জন্য আমি, না আমার জন্য পোশাক?‌ আমি তো নতুন না। ২০ বছর ধরে কাজ করছি, আমাকে কেমন দেখতে, কিসে মানায় সেটা এতদিনেও জানে না!‌ স্বচ্ছ শাড়িটাই গুরুত্বপূর্ণ, শ্রীলেখা নয়।
তিনি বলেন, ভালোই হয়েছে এটা আমি করিনি। আমার সঙ্গে তো নিউকামারের থেকেও খারাপ ব্যবহার করা হয়েছে। আই ওয়জ টেকেন ফর গ্রান্টেড রিয়েলি। এটাই আমার আঁতে লেগেছে। আমার আত্মসম্মানবোধ আমার জন্মগত অধিকার। আমি কিন্ত চরিত্রটা নিয়ে ভাবতে শুরু করে দিয়েছিলাম, চিত্রনাট্য শুনব বলেও অপেক্ষা করছিলাম। তখনও জানি না অয়ন (চক্রবর্তী‌)‌ পরিচালনা করছে। হঠাৎই শুনলাম আমি করছি না। কেন করছি না, সেটা বলার প্রয়োজনই কেউ মনে করেনি।
এক প্রশ্নের জবাবে শ্রীলেখা বলেন, এই বিষয়টা নিয়ে আমি লড়াইটা আরও এগিয়ে নিয়ে যেতাম। আমি অত্যন্ত অপমানিত বোধ করেছিলাম, তারাই আমাকে বলেছিল মিডিয়াতে জানাতে যে আমি ‘দুপুর ঠাকুরপো ২‌’‌ করছি। তারপর যখন করছি না জানলাম, তখন আমাকেই মিডিয়ার সেই প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়েছে, যে প্রশ্নের উত্তর আমার নিজেরই জানা নেই। কী জানি এটাই হয়তো সিস্টেম। আমিই বোকা, আমিই বুঝিনি। আমি আসলে সত্যিই জানি না, কারো গুডবুকে যেতে গেলে কী করতে হবে, আর এতদিন পরে গুডবুক, ব্যাডবুক নিয়ে ভাববোই বা কেন, সেটাও বুঝিনা। এখনও নিজেকে প্রমাণ করতে হবে?‌ আমি সত্যিই কনফিউজড, আমাকে ভাল অভিনেত্রী হিসেবে, নাকি সেক্স সিম্বল হিসেবে গণ্য করা হয়।
তিনি বলেন, আমি নিজেকে কখনও তারকা মনে করি না। অভিনেতা মনে করি। নানা ধরণের চরিত্র, নানাবিধ ছবিতে অভিনয় করেছি। এই তো পরিপিসি করতে গিয়ে নিজেকে ভেঙেছি। হাঁটাচলা, পাকাচুল, নাকের ডগায় চশমা। গ্ল্যাম কোশেন্ট নিয়ে ভাবিনি। তখন আবার অনেকে বলেছে, এইরকম একটা চরিত্র তোমার ইমেজের সঙ্গে যায় না। আমার মনে হয় ‘দুপুর ঠাকুরপো ২‌’‌-‌এর নির্মাতারাও কনফিউজড ছিলেন, শ্রীলেখাকে অভিনেত্রী হিসেবে ডাকছেন, নাকি সেক্স সিম্বল হিসেবে।
শ্রীলেখা বলেন, দেখুন আমি বাণিজ্যিক ছবিতে যেমন কাজ করেছি, তেমনই ‘কাঁটাতার‌’‌ বা ‘রেনবো জেলি‌’‌ও করেছি। কাজেই অভিনেতা হিসেবে আমার ব্যপ্তি অনেক বেশি। আমার সঙ্গে তো মোনালিসার (‌ঝুমাবৌদি)‌ তুলনা হতে পারে না। তার মার্কেট আলাদা, তার দর্শক আলাদা। মোনালিসাকে তো কেউ ‘‌পরিপিসি’‌ ভাববে না। কিন্তু আমাকে কেউ একজন তো ‘‌ঝুমাবৌদি’‌ ভেবেছিল। তার মানে আমার রেঞ্জটা অনেক বেশি। কাজেই আমাকে না নেওয়া দূরদর্শিতার অভাব, নাকি দেখতে না পাওয়া, নাকি অনেক মাথা এক হয়ে গোলমাল হয়ে যাওয়া, কে জানে!‌ আচ্ছা আপনিই বলুন, বৌদির আর্কিটাইপ চেহারা কি স্বচ্ছ শাড়িতে লাস্যময়ী?‌
তিনি বলেন, আমার কাছে তো বৌদি মানে স্নেহ, আবদার, ফ্যান্টাসির জায়গা। আমার কাছে তো বৌদি মানে ‘চারুলতা‌’‌। এভাবে যদি দেখানো হতো অনেক অন্যরকম হতো ব্যপারটা। এদের কাছে বৌদি মানেই একটু সস্তা কল্পনার জায়গা, যে পুরুষ দেখলেই ঠোঁট কামড়ায়।