ছবিটি দেখলেই অবাক হতে হয়। হাত জোড় করা পুলিশ কর্মকর্তা আর উল্টোপথে আসা এক ভিআইপি গাড়ি অনেক কিছু বলে দেয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ ছবি ছড়িয়ে পড়লে ছবির সেই পুলিশ কর্মকর্তাকে স্যালুট জানিয়ে ধন্যবাদে ভাসিয়েছেন অনেকেই।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক পদমর্যাদার এই কর্মকর্তার নাম তারিকুল আলম সুমন। প্রধানমন্ত্রীর প্রটোকলে ২০০৯ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত কাজ করেছেন তারিকুল আলম সুমন।
এ নিয়ে কথা হয় সুমনের সঙ্গে। তিনি বলেন, পরিবর্তনের শুরুটা আমাদেরই করতে হবে। শুরুটা না হয় আমিই করে দিলাম, অপেক্ষায় আছি আপনাদের।
সুমন জানান, প্রতি রমজানেই ইফতারির আগে আগে এ রকম ভিআইপি গাড়ির চাপ থাকে। গতবছরও এরকম অভিযান করেছিলাম। এ বছরও রমজানে গাড়ির চাপ বেড়ে যাওয়ায় উল্টো পথে যাত্রা, সিএনজি স্টেশনে লাইন দিয়ে মূল রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা, অবৈধ পার্কিং এসব বিষয়ে আমাদের সিনিয়র অফিসারদের টনক নড়ে। স্বভাবতই এসব অভিযান পরিচালনার জন্য আমার ডাক পড়ে।
তিনি বলেন, আমিও অনিচ্ছা সত্ত্বেও অভিযানে ঝাঁপিয়ে পড়লাম। প্রায় প্রতিটা গাড়িতেই ৯০০ টাকা করে মামলা হলো। প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব, সংসদ সদস্য শাওন, সাবেক সংসদ সদস্য পাপিয়া, ঢাকা জেলা জজ, বিচারপতি, গণমাধ্যমের ছোট মাইক্রোবাস, সিএনজি, প্রাইভেটকার ও মোটরবাইক— কিছুই মামলা থেকে রেহাই পায়নি।
আমাদের একজন সিনিয়র মন্ত্রী মহোদয় উল্টোপথে এগিয়ে আসছিলেন। আমিও দুরুদুরু বুকে এগিয়ে গিয়ে বাধা দিলাম এবং বললাম উল্টো গেলে মামলা হবে। উনি খানিকটা হতবাক হয়ে কিছু একটা বলেন (আমি শুনতে পাইনি, হয়তো রাবিশ) গাড়ি ঘুরিয়ে চলে গেলেন।
তারিকুল আলম সুমন মনে করেন, সাধারণ মানুষের যানবাহনকে অনেক মামলাই দেওয়া হয়। এর বাইরে যদি দুয়েকজন ভিআইপিকেও মামলা দেওয়া যায় এবং সেটা প্রচারণায় আসে, তবে সাধারণ মানুষের মধ্যেও নিয়ম ভাঙার এই প্রবণতা অনেকটা কমবে।