ওমরা করতে যাওয়া বাংলাদেশির সংখ্যা অন্যান্য বছরে একই সময়ের তুলনায় এবার ১০ থেকে ১৫ হাজার বেশি। এরা সত্যিকার অর্থে ওমরাহ করতে গেছেন কিনা এ নিয়ে খোদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টরা সন্দিহান। বিভিন্ন হজ এজেন্সি, ইমিগ্রেশন পুলিশ ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বরাতে এমন তথ্য ও সন্দেহের কথা জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো মনে করছে, দুটি কারণে এ বছর ওমরা পালনে বেশি মানুষ বাংলাদেশ ছেড়েছেন। এক, হাতে প্রচুর টাকা আছে এবং তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ী। তারা চলমান মাদকবিরোধী অভিযানের পরিণতি টের পেয়ে গা ঢাকা দিতে অভিযান শুরুর সঙ্গে সঙ্গে ওমরা করতে গেছেন।
অন্যদিকে সরকারবিরোধী শিবিরের বিত্তশালী নেতারাও অভিযানের সময়ে বিপদে পড়ার আশঙ্কায় ওমরার সুযোগ নিয়ে আপাতত দেশের বাইরে অবস্থান করছেন।
এ বিষয়ে কারওয়ানবাজারের ট্রাভেলিং অ্যান্ড টিকেটিং এজেন্ট এসএস ট্রাভেলসের স্বত্ত্বাধিকারি নিতাই চন্দ্র বলেন, কি পরিমাণ মানুষ এবার ওমরা করতে গেছেন, আমি সুনির্দিষ্ট করে বলতে পারব না। তবে এটা বলতে পারি এ বছর অন্যবারের তুলনায় অন্তত ১০ হাজার বেশি মানুষ ওমরা করতে গেছেন।
এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল শুক্রবার রাতে বলেন, বিষয়টি আমার চোখেও পড়েছে। বিগত কয়েকদিন ধরেই দেখছি হঠাৎ বিভিন্নজন মাথায় টুপি দিয়ে হাজির হচ্ছেন। সালাম দিয়ে বলছেন, ওমরা পালন করে এসেছি, দোয়া করবেন। এদের আগে কখনো সেভাবে ধর্মীয় বিষয়ে সচেতন দেখিনি। আমার কাছেও বিষয়টি খটকা লেগেছে।
তিনি বলেন, কেউ যদি ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদি পালনে যান, তাকে তো বাধা দেয়া যায় না। তবে বিষয়টি নিয়ে আমরাও খোঁজ-খবর নেব।
তালিকা থেকে থাকলে অপরাধীরা বিদেশ যাচ্ছেন কিভাবে— এমন প্রশ্নের জবাবে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, তাদের কাছে শুধুমাত্র বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞার তালিকা রয়েছে। এরপরও অনেক সময় দাগী আসামিরা ইমিগ্রেশনের চোখ ফাঁকি দিয়ে চলে যান।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কিংবা বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ীদের সরাসরি বিদেশে গমনের ওপর নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত কোনো নির্দেশনা বা তালিকা ইমিগ্রেশন পুলিশকে দেয়া হয়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওমরা ভিসা নিয়ে যারা সৌদি আরব গেছেন, তাদের মধ্যে অপরাধীরা সেখান থেকে অন্য দেশে যাওয়ার চেষ্টা করবেন। কারণ, ওমরা ভিসার মেয়াদ শেষে দেশটিতে বেশিদিন অবস্থান করা সম্ভব নয়।সৌদি আরবে ওমরা পালনে এসে কেউ বাড়তি সময় থাকলে এবং ধরা পরলে ৫০ হাজার রিয়েল জরিমানা ও ৬ মাসের কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে।