রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় পৃথক অভিযানে ৩৬ হাজার পিস ইয়াবাসহ সাতজনকে আটক করেছে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। এ সময় একটি মিনি ট্রাকও জব্দ করা হয়। সোমবার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পৃথক অভিযানে তাদেরকে আটক করা হয়েছে।
ডিবি জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার বিকেলে যাত্রাবাড়ী থানার ঢাকা-মাওয়া রোডের পাশে মেট্রো সিএনজি ড্রেন স্টেশনের ভেতরে নামাজের জায়গায় ইয়াবা ক্রয়-বিক্রয়ের সময় চারজনকে আটক করা হয়। তারা হলেন- শহিদুল্লাহ (৩০), শ্রী স্বপন দত্ত (৩২), মো. মাহবুর সরদার (৩০) ও মাহমুদ হোসেন (৩০)। তাদের কাছ থেকে মোট ২৮ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে।
এছাড়া পৃথক অভিযানে যাত্রাবাড়ীর শনিরআখরা ব্রিজ থেকে আরও তিনজনকে আটক করে ডিবি। তারা হলেন- মো. ইসমাইল হোসেন (৪৭), মো. কালা হাসান (৪৫) ও মো. বরকত আলী (৩৫)। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৮ হাজার ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানানো হয়। ডিবি বলছে, আটক ৭ জনই মাদক ব্যবসায়ী।
ডিবির অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি ও টিম লিডার) মো. গোলাম সাকলায়েন জাগো নিউজকে বলেন, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে শহিদুল্লাহর বাড়ি টেকনাফের সীমান্তবর্তী শাহপরীর দ্বীপে। সে কোরআনে হাফেজ। সীমান্তবর্তী বাড়ি হওয়ায় মিয়ানমার থেকে ইয়াবা এনে তা মো. তারেকের (৩২) মাধ্যমে ঢাকায় নিয়ে এসে বিভিন্ন মাদক ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করতো। জিজ্ঞাসাবাদে শহিদুল্লাহ এসব স্বীকার করেছে। তবে ডিবির অভিযানের সময় তারেক পালিয়ে যায়। তাকে ধরতে অভিযান চালানো হচ্ছে।
ডিবি সূত্রে জানা গেছে, শহিদুল্লাহ (৩০) ভারতের দেওবন্দ দারুল উলুম মাদরাসা থেকে থেকে দাউরায়ে হাদিস পাস ও কোরআনে হাফেজ। পরিবারের পাঁচ ভাইয়ের চারজনই হাফেজ। হাফেজের পাশাপাশি তিনি খুব ভালো ক্বারিও। মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) বলছে, বর্তমানে তিনি ইয়াবা ব্যবসা চক্রের হোতা।
যাত্রাবাড়ীর শনিরআখরায় অভিযানের নেতৃত্বদানকারী ডিবি (উত্তর) বিভাগের পুলিশ পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) মো. আব্দুস ছোবাহান জাগো নিউজকে বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে মো. ইসমাইল হোসেন জানায় যে, সে টেকনাফ থেকে ইয়াবা সংগ্রহ করে মো. মাসুদ মিয়া (৩২) ও তার অন্যান্য সহযোগিদের মাধ্যমে ঢাকায় বিভিন্ন মাদক ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করতো। অভিযানের সময় মাসুদ মিয়া পালিয়ে যায়। তাকে গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে।
পৃথক দুটি অভিযান সম্পর্কে এডিসি মো. শাহজাহান জাগো নিউজকে বলেন, সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ দুইটি স্পটে অভিযান চালায় এবং ইয়াবা ক্রয়-বিক্রয়ের সময় হাতেনাতে ধরে। অভিযানের সময় দুইজন পালিয়ে গেলেও তাদের ধরতে অভিযান চালানো হয়েছে। ডিবির এ মাদকবিরোধী অভিযান অব্যাহত থাকবে।
আটকের পর তাদের বিরুদ্ধে যাত্রাবাড়ী থানায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার তাদের আদালতে প্রেরণ করে রিমান্ড চাইবে ডিবি।
পুলিশের নিয়মিত মাদকবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে রোববার (৩ জুন) ভোর ৬টা থেকে সোমবার (৪ জুন) ভোর ৬টা পর্যন্ত ঢাকায় পৃথক অভিযানে ৮৪ জনকে গ্রেফতার করেছে ডিএমপি। এছাড়া সোমবার রাতে রাজধানীর হাতিরঝিল ও মধুবাগ এলাকায় মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযানে ৫০ জন মাদক সেবনকারী ও মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করা হয়।