শাব্দিক অর্থে মাদক বলতে ড্রাগ, হেরোয়িন, প্যাথেডিন, আফিম, হাসিস ইত্যাদি বুঝায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এর মতে নেশা এমন একটি মানুষিক বা শারিরিক অবস্থা যার সৃষ্টি হয়েছে জীবিত প্রাণী ও মাদক ওষুধের মিথস্ক্রিয়ার মাধ্যমে। মাদক বিষধর সাপের মত বর্তমান সমাজে ছড়িয়ে পরেছে। তরুন তরুণীদের মাঝে ছড়িয়ে পড়েছে এটা দাবানলের মত। ফলে ঐশীদের জন্ম হচ্ছে আমাদের ঘরে।
বাংলাদেশে ২০০৭ সালে তৈরী এক জরিপে জানা গেছে, যে সমগ্র বাংলদেশে ১৭ লাখ লোক মাদকাসক্ত। বিশ্ব চিকিৎসকদের মতে দেশে মাদকাসক্ত লোক সংখ্যা ৫০ লাখের ও বেশী এবং এর বড় অংশটা ই হল ছাত্র সমাজ।
গবেষনা লব্ধ অভিজ্ঞতায় দেখাগেছে, যে কারনে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিস্টান গুলোতে মাদক ছড়িয়ে পড়ছে তা হল ; আনন্দ পাওয়া, নতুনঅভিজ্ঞতা অর্জন, পরিবার এবং সমাজে মাদকের প্রভাব, কৈশোর ও যৌবনের বেপরোয়া মনভাব, মনস্তাত্ত্বিক বিশৃঙ্খলা, কৌতুহল বসত কারন, কুসংগ ইত্যাদি এবং পরিশেষে একটা নতুন মাদকসেবীর জন্ম দেশে ও সমাজে।
ইউএনওডিসির এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা আন্তর্জাতিক মান ও রীতিনীতির সঙ্গে সংগতি রেখে সঠিক আইনি নিরাপত্তার মাধ্যমে যাতে অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা যায়, সে জন্য সব দেশকে সহায়তা দিতে এবং তাদের তথ্যপ্রমাণভিত্তিক সুরক্ষা, চিকিৎসা, পুনর্বাসন এবং পুনঃপ্রতিষ্ঠায় সহায়তা দিতে প্রস্তুত।’
আমরা সাধারন জনগন ও তা ই চাই। অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশে ও মাদক নিয়ন্ত্রন আইন আছে যার শাস্তি ঊর্দ্ধতন কতৃপক্ষ মনে করলে আরো গুরুতর করতে পারেন। বিনা বিচারে হত্যা কিংবা ঘর থেকে ধরে নিয়ে ক্রসফায়ার জনসাধারণের মনে এবং আইনি দৃষ্টিকোন থেকে সাধারন জনগনের মনে উদ্বেগের তৈরী হচ্ছে।
মাদকমুক্ত রাস্ট্র ও সমাজ কে না চায়? মাদকের উৎস ও আমদানির রাস্তা বন্ধ করলে এমনি দেশ মাদকমুক্ত হবে। পরিবার হারানোর বেদনা আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী থেকে ভাল কেউ বলতে পারবেনা। আশা করছি এই মৃত্যুমিছিল খুব শিঘ্রই বন্ধ হবে। মাথা ব্যাথা হলে মাথাটা কেটে না ফেলে আমরা ঔষধ খাই, ব্যাথা ও সেরে যায়। তাই ক্রসফায়ার বন্ধ করে মাদকের উপৎত্তিস্থল সহ প্রতিটা বর্ডারে বর্ডারে কড়া নিরাপত্তা দিলে এমনিতে মাদক বন্ধ হতে বাধ্য।
সবাইকে শোধরানোর জন্য অন্তত একটা সুযোগ দেয়া উচিত। মাদকবিরোধী অভিযান খুবই ভালো উদ্যোগ, তবে এভাবে মানুষ না মেরে বর্ডারে ই তা আটকে দেয়ার ব্যাবস্থা করতে হবে। আশা করছি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সুশীলদের পাঠানো চিঠিটির যথাযথ মর্যাদা দিয়ে এ অভিযান অবিলম্বে বন্ধের ব্যাবস্থা করবেন। আমি ও একজন সমাজকর্মী হিসেবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সহ সকল ঊর্দ্ধতন কতৃপক্ষের কাছে আমার আকুল আবেদন, যেন বিনা বিচারে হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি পুন: ও মানবিক বিবেচনা করে মাদকনিয়ন্ত্রনে যথোপযুক্ত আইনি ব্যাবস্থা গ্রহন করা হয়। আমরা একরামুলের মত আর কোন পরিবারের হাহাকার দেখতে চাইনা।
সুরমা রহমান
লন্ডন, ইউকে