জনপ্রিয় অভিনেত্রী অপর্ণা ঘোষ। আসছে ঈদের নাটকের কাজ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এরইমধ্যে তিনি সাখাওয়াত মানিকের ‘সন্ধ্যাবেলার উপাখ্যান’ ও ‘মনোয়ার সাহেবের বিড়ম্বনা’ শিরোনামের দুটি নাটকের শুটিং শেষ করেছেন। নাটক দুটিতে তিনি জুটি বেঁধেছেন জনপ্রিয় অভিনেতা জাহিদ হাসান ও এফ এস নাঈমের সঙ্গে। নাঈমের সঙ্গে সম্প্রতি তিনি ‘আবর্ত’ শীর্ষক আরো একটি নাটকে জুটিবদ্ধ হয়েছেন বলেও জানান। ঈদে তাকে দেখা যাবে ‘হার্টফেল ফয়েজ’ শিরোনামের সাত পর্বের একটি ধারাবাহিকে।
এটি নির্মাণ করেছেন মিলন ভট্টাচার্য। এই নাটকে অপর্ণা জুটি বেঁধেছেন চঞ্চল চৌধুরীর সঙ্গে। এ সময়ের কাজের ব্যস্ততা প্রসঙ্গে এই অভিনেত্রী বলেন, ঈদের জন্য কিছু নাটক-টেলিছবির কাজ শেষ করেছি। হাতে আরো কয়েকটির স্ক্রিপ্ট আছে। ঈদের আগ পর্যন্ত ঈদের কাজ নিয়েই ব্যস্ত থাকতে হবে। এই সময়ে সবার কাজের একটু চাপ থাকে বেশি। এবার ঈদে কেমন গল্পের নাটক নির্মাণ হচ্ছে জানতে চাইলে এই অভিনেত্রী বলেন, গতানুগতিক গল্পের কাজ হচ্ছে বেশি। অনেক নাটকেরই গল্প কমেডি ধারার। গেল বছর এর ব্যতিক্রম ছিল। কিন্তু এবার আবারো পুরানো পথে চলে এসেছি। তবুও আমাদের কাজ করতে হচ্ছে। একজন নির্মাতা যেভাবে চাইবেন সেভাবেই আমাদের কাজ করতে হয়। ঈদের নাটকের বাইরে এই অভিনেত্রীর হাতে রযেছে আরবি প্রিতমের ‘সেমিকর্পোরেট’ ও রাশেদ রাহার ‘মেঘে ঢাকা আকাশ’ শিরোনামের ধারাবাহিকগুলো। প্রচার চলতি ধারাবাহিক ‘সেমিকর্পোরেট’ দর্শকের মধ্যে দারুণ সাড়া ফেলেছে বলে জানান এই অভিনেত্রী। এই নাটক প্রসঙ্গে অপর্ণার ভাষ্য, আমার অন্যান্য নাটক থেকে ‘সেমিকর্পোরেট’-এর গল্প ও চরিত্র কিছুটা হলেও ভিন্ন ধরনের। কর্পোরেট জগতের ঘটনা নিয়ে এই নাটকের গল্প। একটি বিজ্ঞাপনী সংস্থা দাঁড় করাতে গিয়ে যে অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হয়, তা বাস্তব ঘটনার আঙ্গিকে নাটকে তুলে ধরা হয়েছে। দেখানো হয়েছে বিজ্ঞাপনী সংস্থার সঙ্গে জড়িত কিছু মানুষের সাফল্য-ব্যর্থতা, ভাঙ্গাগড়া এবং পারিবারিক সুখ-দুঃখের গল্প। এই সময়ের টিভি নাটক নিয়ে নানা মন্তব্য শোনা যায়। কোন দিকে হাঁটছে টিভি নাটক? এই প্রশ্নের উত্তরে এই অভিনেত্রী বলেন, এখন অনেক সময় দেখা যায় ভালো স্ক্রিপ্ট আছে, কিন্তু বাজেট নেই। আবার বাজেট থাকলে স্ক্রিপ্ট থাকে না। সত্যি বলতে একটি অনিয়মের মধ্যে আমরা হেঁটে যাচ্ছি। আমাদের সব কিছু একটি নিয়মের মধ্যে আসা প্রয়োজন। না হলে আমরা পিছিয়ে যাবো। আজকাল শিল্পীদের নিয়েও নির্মাতাদের নানা অভিযোগ শোনা যায়। শিডিউলসহ নানা রকম দ্বন্দ্বে শিল্পী-নির্মাতা জড়াচ্ছেন। এই থেকে উত্তরণের পথ কি? এই প্রসঙ্গে অপর্ণা বলেন, আমাদের সবাইকে পেশার ক্ষেত্রে অনেক দায়িত্বশীল হতে হবে। আমাদের অনেকের মধ্যে দায়িত্বশীল আচরণ দেখা যায় না। যার কারণে অনেক সময় এই ধরনের সমস্যায় পড়তে হয়। ছোট পর্দার বাইরে এই অভিনেত্রী বড় পর্দার দর্শকের মনেও দাগ কেটেছেন। ইতিমধ্যেই মুঠোবন্দি করেছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। তার অভিনীত সর্বশেষ চলচ্চিত্র হলো ‘ভুবন মাঝি’। এটি নির্মাণ করেন ফাখরুল আরেফিন খান। এটিতে তিনি জুটি বাঁধেন ওপার বাংলার জনপ্রিয় অভিনেতা পরমব্রতর সঙ্গে। এই ছবিটির জন্য তিনি দারুণভাবে প্রশংসিত হয়েছেন বোদ্ধামহলে। এছাড়া তার অভিনীত গাজী রাকায়েতের ‘মৃত্তিকা মায়া, প্রসূন রহমানের ‘সুতপার ঠিকানা’ ছবি দুটিও বেশ আলোচিত ছিল। তবে দু’পর্দার এই অভিত্রেীর হাতে এখন নতুন কোনো ছবির কাজ নেই। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নতুন চলচ্চিত্রের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। নতুন ছবির মধ্য দিয়ে আবারো দর্শকদের ভালো কিছু দেয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করছি। আমি সত্যি ভাগ্যবান। আমার অভিনীত ছবিগুলো দর্শকরা ভালোভাবে গ্রহণ করেছেন। আমি বরাবরই গল্প-চরিত্র নিয়ে ভাবি। চ্যালেঞ্জিং সব চরিত্রে কাজ করতে চাই।